এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানালো তদন্তকারী সংস্থা

গত মাসে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী ফ্লাইট AI171-এর দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল ইঞ্জিনে জ্বালানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া। এতে বিমানটির ২৬০ যাত্রী ও স্থলে থাকা কয়েকজন নিহত হন।
ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB) তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানায়, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি রানওয়ে ত্যাগ করার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এর দুইটি ইঞ্জিনের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ হঠাৎ ‘রান’ (চালু) অবস্থা থেকে ‘কাট-অফ’ (বন্ধ) হয়ে যায়, ফলে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে পড়ে।
তদন্তকারীরা ব্ল্যাক বক্স থেকে উদ্ধার করা ৪৯ ঘণ্টার ফ্লাইট ডেটা ও দুই ঘণ্টার ককপিট অডিও বিশ্লেষণ করে দেখেন, ১৮০ নট গতিবেগে পৌঁছানোর এক সেকেন্ডের ব্যবধানে দুইটি ইঞ্জিনের জ্বালানি বন্ধ হয়ে যায়।
এক পাইলটকে অন্য পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায়, “তুমি কেন কাট-অফ করেছ?” উত্তরে অপর পাইলট বলেন, “আমি করিনি।”
তখনই পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি রিস্টার্টের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়।
বিমানটি রানওয়ে অতিক্রম করে দ্রুত উচ্চতা হারিয়ে পাশের বিজে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের হোস্টেল ভবনে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সময় বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে শুধু একজন যাত্রী অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ডেভিড সোসি বলেন, “ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নাড়ানোর জন্য ডিজাইন করা হয়। দুইটি ইঞ্জিনের জ্বালানি কাট-অফ সুইচ অনিচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ হওয়া একটি অত্যন্ত বিরল এবং অস্বাভাবিক ঘটনা।”
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যান্ত্রিক ত্রুটি বা মানবীয় ভুল ছাড়া এ ধরনের ঘটনা অসম্ভব নয় বলেই মনে হচ্ছে।
মৃত ও হতাহতদের ফ্লাইট AI171-এ ছিলেন: ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ, ১ জন কানাডিয়ান। এছাড়া হোস্টেল ভবনে থাকা আরও অন্তত ১৮ জন নিহত হন।
এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা তদন্তে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে এবং নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছে।
“AI171 ফ্লাইট দুর্ঘটনায় যেসব পরিবার প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাই এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে আছি।”
তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পরই জানা যাবে দুর্ঘটনার পিছনে নিখুঁত কারণ—মানবিক ভুল, যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি অন্য কোনো অনভিপ্রেত পরিস্থিতি।
(ঢাকাটাইমস/১২ জুলাই/আরজেড)

মন্তব্য করুন