গণহত্যা মামলায় শর্তসাপেক্ষে রাজসাক্ষী মামুনকে ক্ষমা, পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩৯| আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, ১৯:৫৫
অ- অ+

জুলাই গণহত্যা মামলায় নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা পেতে পারেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। শর্ত হলো- তিনি অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত সব ব্যক্তির বিষয়ে, প্রধান বা সহায়তাকারী, পরিস্থিতির পূর্ণাঙ্গ ও সত্য ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরবেন।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদেশের লিখিত অনুলিপি আজ শনিবার (১২ জুলাই) প্রকাশ করা হয়েছে। গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দিয়েছিলেন।

একই সঙ্গে নিরাপত্তার স্বার্থে এই রাজসাক্ষীকে কারাগারে অন্য বন্দিদের সঙ্গে না রেখে আলাদা জায়গায় রাখতে আদেশ দেন আদালত। ট্রাইব্যুনাল তাকে সুবিধাজনক সময়ে বিচারে সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবেন।

লিখিত আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আসামি শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন নামে তিনজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ধারা ৩(২)(ক), ৩(২)(ছ), ৩(২)(জ), ৪(১), ৪(২), ৪(৩) এর অধীনে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন এবং বাকি দুই অভিযুক্ত পলাতক। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে অভিযোগ গঠনের পর ব্যাখ্যাটি পড়ে শোনানো হয় এবং তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে তিনি দোষ স্বীকার করবেন কি না। তিনি দোষ স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তির বিষয়ে, প্রধান বা সহায়তাকারী, পূর্ণাঙ্গ ও সত্য প্রকাশ করতে চান।

তার আইনজীবী একটি আবেদন দাখিলের মাধ্যমে অভিযুক্তকে ক্ষমা করার জন্য আবেদন করেন। প্রধান প্রসিকিউটর অভিযুক্তকে ক্ষমা করার প্রস্তাবে সম্মত হন এ শর্তে যে, তিনি উপরোক্ত পরিস্থিতির পূর্ণাঙ্গ এবং সত্য প্রকাশ করবেন, কারণ তা অপরাধের বিচারের জন্য সহায়ক হবে।

উপরোক্ত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ক্ষমা করাকে উপযুক্ত বলে মনে করে এবং সেই অনুযায়ী তাকে ক্ষমা করা হয়েছে এ শর্তে যে তিনি অভিযুক্ত অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত তার জানামতে সমস্ত পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তির বিষয়ে, প্রধান বা সহায়তাকারী, সম্পূর্ণ এবং সত্য প্রকাশ করবেন এবং তিনি এ শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা গ্রহণ করেছেন এবং ট্রাইব্যুনাল তাকে সুবিধাজনক সময়ে বিচারে সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবে।

যেহেতু অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ক্ষমা করা হয়েছে এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন, তাই তাকে অন্যান্য বন্দি থেকে আলাদা করা প্রয়োজন। তাই সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষকে তার নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে অন্যান্য বন্দিদের থেকে আলাদা করে আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

চৌধুরী মামুনের আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ বলেন, রাজসাক্ষী হিসেবে জুলাই গণহত্যার সব বিষয় ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরে বিচার প্রক্রিয়াকে সহায়তা করলে তবেই এ ক্ষমার আদেশ বাস্তবায়ন হবে।

এর আগে গত ১০ জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজনীতিতে অভিভাবক দল হিসেবে আমরা বারবার ধৈর্য ধরেছি: অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা