‘কুখ্যাত’ নয়টি ধারা বাতিল করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ অনুমোদন, ইন্টারনেট মৌলিক অধিকার

বিদ্যমান সাইবার সুরক্ষা আইনের বিতর্কিত নয়টি ধারা বাতিল করে সংশোধিত নতুন অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এই অধ্যাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সাইবার স্পেসে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে নতুন অধ্যাদেশে।
আজ মঙ্গলবার (৬ মে) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদিত হয়। কিছু সংশোধনের পর এই সপ্তাহে গেজেট আকারে প্রকাশ হতে পারে বলে জানান উপদেষ্টা।
নতুন অধ্যাদেশে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে দুটি অপরাধ রাখা হয়েছে বলে জানান ড. আসিফ নজরুল। একটি হলো নারী ও শিশুর প্রতি যৌন নির্যাতনমূলক কন্টেন্ট প্রকাশ ও হুমকি দেওয়া। আরেকটি হলো ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানো।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ধর্মীয় ঘৃণাকে কঠোরভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়, কেউ কাউকে হয়রানি করতে না পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথমবারের মতো এখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে যদি কোনো সাইবার অপরাধ করা হয়, সেটাকে শাস্তিযোগ্য করা হয়েছে।’
ওই দুই অপরাধের ক্ষেত্রে মামলার বিষয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে মামলা হলে এটা আমলি আদালতে যাবে, যাওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন এই মামলায় কোনো যৌক্তিকতা নেই, তাহলে প্রি ট্রায়াল স্টেজে তিনি মামলা বাতিল করে দিতে পারবেন। যদি দেখেন সম্পূর্ণ ভুয়া মামলা, এই মামলার কোনো ভিত্তি নেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই মামলা বাতিল করে দিতে পারবেন।’
আইন উপদেষ্টার তথ্যমতে যে নয়টি ধারা বাতিল করা হয়েছে, এই ৯টি ধারা ছিল কুখ্যাত, এসব ধারাতেই ৯৫ শতাংশ মামলা হয়েছিল। মামলাগুলো এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
বাতিল হওয়া ধারাগুলোর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় শহীদ বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কিত বিদ্বেষ বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার জন্য যে দণ্ড দেওয়ার বিধান, এর মাধ্যমে প্রচুর হয়রানিমূলক মামলা হতো বলে জানান উপদেষ্টা।
মানহানিকর তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ধারায় প্রচুর মামলা হতো, অনেক সাংবাদিক এই মামলার ভুক্তভোগী হয়েছেন, এই ধারা সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে- এই ধরনের কোনো কন্টেন্ট বা কথাবার্তা, আক্রমণাত্মক বা ভীতিকর তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ এ-সংক্রান্ত বিধানও বাতিল করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/৬মে/এমজেড)

মন্তব্য করুন