জামায়াতকে একাত্তরের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান দুদুর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ১৯৭১ সালে করা ‘ভুলের' জন্য ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আপনারা যে ভুল করেছেন, তা সংশোধনের একটি সুযোগ এখনো আছে। আপনারা এখনো ক্ষমা চাননি। ক্ষমা চান, নির্বাচনে অংশ নিন। তাহলে অতীতের ভুল কিছু হলেও মোচন হবে। আর যদি নির্বাচন প্রতিরোধের জন্য রাস্তায় নামেন, তাহলে সেই ভুল দ্বিগুণ হবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরম খাঁ হলে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, একসময় আন্দোলনের স্বার্থে, গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের স্বার্থে বিএনপি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। সেই সময় আপনাদের গণমানুষের কাছাকাছি আসার সুযোগ হয়েছিল। বিএনপি তখন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জাতীয় স্বার্থে পাশে ছিল। সেটা যদি মনে রাখেন, তবে আপনাদের জন্য, দেশের জন্য সেটিই হবে শুভকর।
বর্তমানে বিএনপি হলো একমাত্র দল, যার শিকড় দেশের সর্বস্তরে ছড়িয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেখানে ১০ জন আছে, সেখানে ৬-৭ জন বিএনপির। আওয়ামী লীগ ছিল, হারিয়ে গেছে। বিএনপি যদি উঠে দাঁড়ায়, তাহলে পুলিশ বা মিলিটারি দরকার হবে না—তারা নিজেরাই দেশ রক্ষা করতে পারবে। এটাই বাস্তবতা। তাই বিএনপিকে ঠেকাতে নানা অজুহাত, বিভ্রান্তি, নাটক সামনে আনা হচ্ছে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি ভালো নির্বাচন সম্ভব। বিএনপি আগাগোড়া এই নির্বাচনী উদ্যোগকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সরকারও এখন সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু কেউ কেউ এই নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলছে, দাবি আদায়ে পথে নামার হুমকি দিচ্ছে। যদি নির্বাচন না হয়, তাহলে দেশ অনিশ্চিত গন্তব্যে পৌঁছাবে।
দুদু বলেন, স্বাধীনতার পর জাতি শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে যে প্রত্যাশা করেছিল, তা পূরণ হয়নি। তার শাসনামলে ৪০ হাজার বিরোধী দলের নেতা নিহত হয়েছিলেন, দুর্ভিক্ষে মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। যে জাতির লক্ষ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছিল স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং দু মোট ভাত পাবে এই প্রত্যাশায়, একটা চাকরি পাবে এই প্রত্যাশায়, তারা কিভাবে উপেক্ষিত হয়েছে এবং নিগৃহীত হয়েছে ’৭২ থেকে ’৭৫— এই সময়টা যারা দেখেনি, শুধু বই পড়ে তারা সবটা জানতে পারবে না।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারী, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাবুল আহমেদ প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/৭ আগস্ট/জেবি)

মন্তব্য করুন