ফলের বাজারে আগুন, সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ভোক্তারা বিপাকে

রাজধানীর বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে সব ধরনের ফলের দাম। আপেল, সবুজ আপেল, মাল্টা, আঙুর—সবকিছুর দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা বলছেন, দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী একটি অসাধু সিন্ডিকেট, যারা পাইকারি বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ডলারের দাম বৃদ্ধি, এলসি জটিলতা ও আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সাম্প্রতিক ডেঙ্গু, জ্বর ও ভাইরাল সংক্রমণের কারণে ফলের চাহিদা বেড়েছে। সেই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১০-১২ দিন আগেও যে গালা আপেল ৩৮০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, এখন সেটির দাম ৪২০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে দাঁড়িয়েছে। সবুজ আপেল ৪০০ টাকা, মাল্টা ৫০০ টাকা, লাল আঙুর ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও এসব ফলের দাম ছিল যথাক্রমে ৩৮০, ৩৫০, ৩৫০ ও ৪৫০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের এক বিক্রেতা জিল্লুর বলেন, “মাল্টার দাম এত বেড়ে গেছে যে বিক্রি অনেক কমে গেছে।”
আরেক বিক্রেতা আরিফ খান জানান, “গত ১০ দিন ধরে মাল্টা বিক্রি করিনি। এই দামে মানুষ কিনতেও চায় না।”
শান্তিনগরের বিক্রেতা করিম হোসেন বলেন, “ডাক্তাররা জ্বরের রোগীদের বেশি ফল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। ফলে চাহিদা বেড়েছে, আর আমদানি কম। তাই দামও বেড়েছে।”
রামপুরার বিক্রেতা তোফাজ্জল জানান, “দেশি আমের মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। দেশি ফলের সরবরাহ কম থাকায় বিদেশি ফলের ওপর চাপ বেড়েছে। পাইকারিতে দাম বেশি হওয়ায় আমাদের খুচরায়ও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।”
ফলের দাম শুধু বিদেশি পণ্যে সীমাবদ্ধ নয়, দেশি আমের দামও ঊর্ধ্বমুখী। যেমন—
আম্রপালি আম: ২২০–২৫০ টাকা কেজি
আশ্বিনা আম: ৯০ টাকা কেজি
ঝিনুক আম: ১১০ টাকা কেজি
কাটিমন আম: ১৭০ টাকা কেজি
ফজলি আম: ২২০ টাকা কেজি
বাজারে ফল কিনতে আসা ক্রেতারা দামের ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শান্তিনগরের গৃহবধূ নাফিসা বলেন, “বড় ছেলের জ্বর। ডাক্তার বলেছে ফল খাওয়াতে। কিন্তু মাত্র দুই কেজি ফল কিনতেই এক হাজার টাকা দিতে হয়েছে!”
আরেক ক্রেতা জুয়েল বলেন, “রোগীর জন্য ফল দরকার, তাই কিনছি। কিন্তু এই দামে বেশি দিন চলা সম্ভব না।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি পর্যায়ে বাজার মনিটরিং জোরদার না হলে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আরও বাড়বে। তাতে শুধু ফল নয়, অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যেও প্রভাব পড়তে পারে।
(ঢাকাটাইমস/৭ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন