গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ১৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১৩৮ ফিলিস্তিনি। ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া আগ্রাসনে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ১৫৮ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৮টি মৃতদেহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছেছে। একই সময় আহত হয়েছেন আরও ৭৭১ জন। ফলে ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪২ জনে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান অবরোধ ও খাদ্য সংকটের কারণে গত একদিনে অনাহারে মারা গেছেন আরও পাঁচজন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। এ নিয়ে অপুষ্টি ও অনাহারে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯৩ জন, যাদের মধ্যে ৯৬ জনই শিশু।
এছাড়া মানবিক সাহায্য নিতে গিয়েও গুলি ও বোমা হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। গত ২৪ ঘণ্টায় সাহায্য নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৮৭ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৭০ জন। গত ২৭ মে থেকে এ ধরনের হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৫৫ জনে এবং আহত হয়েছেন ১১ হাজার ৮০০ জন।
গাজার ওপর ইসরায়েলের দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে অবরোধ চলছে। চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে উপত্যকার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়ায় মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে। গাজা সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ জুলাই থেকে ইসরায়েল মাত্র ৮৪৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। অথচ ওই সময়ের মধ্যে প্রয়োজন ছিল অন্তত ৬ হাজার ট্রাকের।
গাজায় চলমান সংকটের সূত্রপাত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল ‘স্বঘোষিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
১৫ মাসব্যাপী সংঘাতের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও তা স্থায়ী হয়নি। যুদ্ধবিরতির মাত্র দুই মাসের মাথায় ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল আবারও হামলা শুরু করে।
এরইমধ্যে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এছাড়া গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) মুখোমুখিও রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, হামলা বন্ধ না হলে এ অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
(ঢাকাটাইমস/৭ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন