রাজশাহীতে আবাসন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ফ্ল্যাট ও সইযুক্ত চেক নেয়ার অভিযোগ

দুই লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে আবাসন ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর নির্যাতন এবং কোটি টাকা দামের ফ্ল্যাট, নগদ টাকা ও সইযুক্ত ফাঁকা চেক নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাজশাহী জেলা ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক সভাপতি এবং যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাদ্দেদ জামানী সুমন ও রাজশাহী সিটি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. ইমদাদুল হক লেমনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন রাজশাহীর গ্রীন প্লাজা রিয়েল স্টেট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত ৩০ জুন বিকাল তিনটার দিকে প্রকাশ্য দিবালোকে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার কাছ থেকে জেলা ছাত্র ও যুবদলের সাবেক সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, রাজশাহী সিটি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইমদাদুল হক রেমন, যুবদল সদস্য মো. বিশাল রহমান, মো. ইমন জামানীসহ আরো সন্ত্রাসী বাহিনী আমার কোমরে অস্ত্র ঠেকিয়ে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়।
‘এরপর তাদের গোপন টর্চার সেলে আটকে রেখে নির্যাতন করে। টর্চার সেলে টানা ৫-৬ ঘণ্টা চলে নির্মম নির্যাতন। সেই সাথে প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা। দফায় দফায় নির্যাতন চালিয়ে কোটি টাকার দামের ফ্ল্যাটের বায়নানামা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় অপহরণকারীরা আমার কাছে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ ছাড়া আমাকে জোরপূর্বক একটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বলে। আমি স্বাক্ষর না করায় তারা আমাকে আওয়ামী লীগ নেতা বলে পুলিশের হাতে তুলে দেবে বলে। এরপর রাত পৌনে ৯টার দিকে টর্চার সেল থেকে বের করে থানায় স্বাক্ষর করানোর কৌশল গ্রহণ করে এবং সোয়া ৯টার দিকে স্বাক্ষর করায়।
সংবাদ সম্মেলনে এই ব্যবসায়ী বলেন, গত ২৩ জুলাই বোয়ালিয়া মডেল থানায় তিনি এ ব্যাপারে একটি মামলা করেন। পরের দিন থেকে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় এখন এলাকাছাড়া তিনি।
ওই ব্যবসায়ী আরও বলেন, যুবদল নেতা মোজাদ্দে জামানী সুমন একটি ১৩০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের মূল্য ২৭ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করে আমাকে পরিশোধ এবং আমি ৩০ জুন পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে বুঝিয়ে দিতে বাধ্য থাকিব মর্মে দলিলে স্বাক্ষর নেয়। বায়না চুক্তিপত্র উল্লেখিত নাম সুমন জামানি ২৭ লক্ষ টাকা পরিশোধ না করে পরিশোধ দেখানো এবং ৭০ লক্ষ টাকার একটি ফ্লাট সর্বমোট ৯৭ লক্ষ টাকার এগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করে আসতে হয়েছে মুক্তিপণ হিসেবে।’
মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মামলার এজাহার নামীয় এবং তালিকাভুক্ত ও অজ্ঞাত আসামিরা এখন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নাম ব্যবহার করে নিজেদের রক্ষা করতে চাইছে এবং মামলাটিকে ‘রাজনৈতিক হয়রানি’ বলছে।’ তারা তার বিরুদ্ধে গত ২৬ জুলাই রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন ও ২৭ জুলাই মানববন্ধন করে বলেও জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/৭আগস্ট/মোআ)

মন্তব্য করুন