মিয়ানমারে হেলিকপ্টার থেকে মুহুর্মুহু গুলি, বিজিপি ক্যাম্পে আগুন

বান্দরবান সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলির পর দেশটির সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর একটি ক্যাম্পে আগুন জ্বলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর একটু পর মিয়ানমার থেকে আসা গোলার আঘাতে ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী এলাকায় নারীসহ দুজন নিহতের পর তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিক বলেন, ‘তুমব্রু এলাকায় কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে গোলাগুলি চললেও সোমবার সকালে তীব্রতা একটু কমে আসে। কিন্তু ঘুমধুম এলাকার দিক থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলি শব্দ আসে।
দুপুরে তুমব্রু হয়ে ঘুমধুমের এলাকার দিকে মিয়ানমারের একটি হেলিকপ্টার উড়ে যেতে দেখা গেছে। তখন কিছুক্ষণ পর ঘুমধুম এলাকায় ওপারে মিয়ানমারে ঢেঁকিবুনিয়া বিজিপি ক্যাম্পে আগুন জ্বলতেও দেখা যায়।”
ইউপি সদস্য বলেন, তুমব্রু এলাকায় কেউ কেউ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন। আবার পরিস্থিতি একটু ভালো হলে কেউ কেউ চলে আসছেন। কারণ সবার ঘরে গবাদিপশু রয়েছে। এগুলো দেখভাল করতে হয়। এখন ভয়-আতঙ্ক নিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে সীমান্তের লোকজনদের।বিকালে ঘুমধুম সীমান্তের একজন বলেন, ‘ঢেঁকিবুনিয়ার পাশে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ‘রাইট ক্যাম্প’ হিসেবে পরিচিত ক্যাম্পটি বিদ্রোহীরা দখল করে নেয়। সেখানে বিজিপির কয়েকশ সদস্য ছিল। তারা পালিয়ে গেছেন। ওই ক্যাম্প পুনর্দখলে নেওয়ার জন্যই মূলত মিয়ানমার সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার থেকে মুহুর্মহু গুলি করে।
আরেকজন বাসিন্দা বলেন, রাইট ক্যাম্পের কয়েক কিলোমিটার দূরে ঘুমধুম সীমান্তে বিজিপির আরেকটি ক্যাম্প রয়েছে; যেটিকে ‘লেফট ক্যাম্প’ বলা হয়। সেখানেও ১০০ জনের কাছাকাছি বিজিপি সদস্য রয়েছে। তবে সে ক্যাম্পটি এখনও অক্ষত আছে।
এর আগে, সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের জলপাইতলী এলাকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে আসা একটি মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশি নারীসহ ২ জন নিহত হন।
পুলিশ জানিয়েছে মারা যাওয়া বাংলাদেশি নারীর নাম হোসনে আরা বেগম (৪৫)। তিনি ঘুমধুম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলী এলাকার বাসিন্দা বাদশা মিয়ার স্ত্রী। নিহত অপরজন রোহিঙ্গা। তবে, তার নাম জানা যায়নি।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, মিয়ানমার থেকে একটি মর্টার শেল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলী এলাকায় এসে পড়ে। এ সময় একজন বাংলাদেশি নারী ও একজন রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন।(ঢাকাটাইমস/৫ফেব্রুয়ারি/এআর)

মন্তব্য করুন