যেমন খুশি তেমন সাজে বাজার

লিটন মাহমুদ, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪, ২৩:৩২ | প্রকাশিত : ১৫ মার্চ ২০২৪, ২৩:৩০
  • কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই, দিশেহারা ভোক্তারা
  • কমেছে মুরগি-পেঁয়াজের দাম, চড়া সবজির বাজার
  • খুচরা বাজারের তুলনায় সুপার মার্কেটের দোকানে দাম কম: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো পদক্ষেপই কাজে আসছে না। তবে ব্রয়লার মুরগি কয়েক সপ্তাহ ধরে ২২০-২২৫ টাকা বিক্রির পর অবশেষে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে। বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম এখন ২০৫ টাকা।

তবে মুরগির দাম কমলেও স্বস্তিতে নেই সাধারণ ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, কম ওজনের মুরগি বাজারে তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। কিনতে গেলে বড় মুরগি কিনতে হচ্ছে। ফলে প্রয়োজন না থাকার পরও অনেককে বেশি ওজনের মুরগি কিনতে হচ্ছে। ওজন বেশি হলে দামও বেশি আসে। আর কম ওজনের মুরগি পাওয়া গেলেও স্বাভাবিকের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি।

এদিকে আগের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে বেগুন, শসা, করলাসহ সব ধরনের সবজি। এদিকে ভারত থেকে আমদানির কারণে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, ২০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। এছাড়া সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ২৯৫ টাকা এবং সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের জায়গায় স্থির রয়েছে ডিমের দাম। এক ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের কাচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজানের প্রথম দিন ৯০ টাকা কেজি দরে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হলেও চতুর্থ রমজানে এসে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকা করে।

এই বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর দাম ১০০ টাকা কেজি, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা, খিরা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা করে। পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, পটল ৯০ টাকা ও সজনে ডাটা ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতি কেজি মুলা ৪০ টাকা, শিমের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ব্রকলি প্রতিটি ৩০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকার ভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং আলু ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া লেবুর হালি ৪০ থেকে ৮০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, কলার হালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং কাঁচা মরিচের কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা। লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা। পটল, বরবটির দামও প্রতি কেজি ১০০ টাকার ওপরে।

বাজারে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ ৯০০ টাকা কেজি, চাষের শিং আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজিতে বেড়ে (আকার ভেদে) ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, মাগুর ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৬০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইন ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার টাকা, মেনি ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, বেলে ৭০০ টাকা এবং কাইকলা বা কাইক্ক্যা ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা মিনহাজুল বলেন, ৬০ টাকা করে লেবুর হালি চায়। আমি ৫০ টাকা দিয়ে অনেক জোরাজুরি করলাম, দিলো না। ১ ডজন লেবু কিনতে চাইছিলাম। বাধ্য হয়ে ৬০ টাকা দিয়েই এক হালি লেবু কিনে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মতো ফ্যামিলি এই বাজারে খেয়ে পরে বেঁচে থাকা কঠিন।

বোরহান নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশে রমজান মাসে সব কিছুর দাম কমিয়ে দেওয়া হলেও, আমাদের দেশে ঘটে উল্টোটা। সবজির দাম বেড়ে যায়। সেই জিনিস বেশি কেনে মানুষ, সেটার দামই বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আমাদের মতো সাধারণ মানুষ শসা কীভাবে ১০০/১২০ টাকা কেজি দরে কিনবে?’

বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন পাইকারিতেই সবজি জাতীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। দেশি শশা পাইকারীতেই বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা প্রতি কেজি। বেড়েছে সব ধরণের মাছের দামও।

সবজির সার্বিক দাম নিয়ে সবজি বিক্রেতা রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘দুই একটি সবজির দাম রমজানে বেড়েছে, বাকিগুলোর দাম আগের মতোই আছে, তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু দাম বেশি। আজকের বাজারে শসা, বরবটি, পটল প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাকিগুলোর দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। বাজারে বিভিন্ন সবজি নতুন করে উঠছে। এগুলোর সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে সেগুলোর দাম কমে আসবে। আর যেই সবজিগুলোর দাম ১০০ বা তার চেয়ে বেশি চলছে এগুলো এখন সিজন শেষের সবজি, নতুন করে ক্ষেত থেকে উঠতে শুরু করলে দাম কমে যাবে। এ ছাড়া রমজানের বাজারের হিসেব করলে আজকের বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শসা। তবে অন্যান্যবার রমজান মাসে যেভাবে বেগুনের বাড়তি থাকে সেই তুলনায় এবার তুলনামূলক বেগুনের দাম কম।’

এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলছেন, ‘দাম নিয়ন্ত্রণে আমরা যেসব উদ্যোগ নিচ্ছি সেটার সঙ্গে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর কাজ করছে। আমরা দেখেছি খুচরা বাজারের তুলনায় সুপার মার্কেটসহ ফিক্সড প্রাইসের দোকানে দাম কম। এজন্য কারওয়ান বাজারসহ সব রিটেইল মার্কেটে আমাদের নজরদারি আছে। তাদেরকে একটা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। সে চেষ্টা করছি আমরা।’

(ঢাকাটাইমস/১৫মার্চ/এলএম/কেএ/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

কাদের সাহেবরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে: রিজভী

যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে তাকাতে চায়, পেছনে নয়: ডোনাল্ড লু

অর্থমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত

মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা সড়কে দুর্ঘটনা কমাবে: রোড সেফটি কোয়ালিশন

মাতৃমৃত্যু রোধে বাংলাদেশ ‘অভাবনীয়’ উন্নতি করেছে: ইউএনএফপিএ

উদ্ভাবনে উপকৃত হবেন কৃষকরা, উৎপাদন বাড়বে ফসলের: কৃষিমন্ত্রী 

সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে লু’র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে: পরিবেশমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র: লু

সারাদেশে ‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল’ নীতি কার্যকরের নির্দেশ

প্রবাসীদের এনআইডি কার্যক্রম দেখতে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন ইসি আলমগীর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :