দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে টানা দুই ম্যাচ জয়ের পর তৃতীয় ম্যাচেও জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে টাইগাররা। বাংলাদেশের দেওয়া ১৬৬ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে ১৫৬ রানেই থামে সফরকারীদের ইনিংস। যার ফলে বাংলাদেশ তুলে নিয়েছে ৯ রানের জয়।

আজ মঙ্গলবার (৭ মে) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানায় সফররত জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে তাওহিদ হৃদয়ের ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি অর্ধশতকে ভর করে ১৬৫ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। বাংলাদেশের দেওয়া ১৬৬ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে ৯১ রানেই ৮ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। এর পরেই জুটি গড়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেন ফারাজ আকরাম ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। এই জুটির ৫৪ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৬ রানে থামে তারা। যার ফলে বাংলাদেশ তুলে নেয় ৯ রানের জয়।

জিম্বাবুয়ের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন তাদিওয়ানাশে মারুমানি ও জয়লর্ড গাম্বি। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। তবে এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি সাইফউদ্দিন। সাইফউদ্দিনের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান জয়লর্ড গাম্বি। তার বিদায়ে ১৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা।

সাইফউদ্দিনের পর জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন তানজিম হাসান তামিম। তানজিম হাসান তামিমের শিকার হয়ে ৮ বলে ৫ রান করে ব্রায়ান বেনেট পথ ধরেন প্যাভিলিয়নের। তার বিদায়ে ২২ রানেই ২ উইকেট হারায় সফরকারীরা।

২২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ক্রেইগ আরভিনকে নিয়ে জুটি গড়েন তাদিওয়ানাশে মারুমানি। তবে এই জুটিকেও বেশিদূর এগোতে দেননি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৭ বলে ৭ রান করা ক্রেইগ আরভিন। যার ফলে ৩৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সফরকারীরা।

৩৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর সিকান্দার রাজার সঙ্গে জুটি বাধেন তাদিওয়ানাশে মারুমানি। তবে তারাও ব্যর্থ হন নিজেদের জুটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে। দলীয় ৪৮ রানে সিকান্দার রাজার বিদায়ে ১৫ রানেই ভেঙে যায় এই জুটি। রিশাদ হোসেনের বলে জাকের আলি অনিকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।

সিকান্দার রাজার বিদায়ের পর জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন তাদিওয়ানাশে মারুমানি ও ক্লাইভ মাদান্দে। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই জুটিকে থামান অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে লং অনে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ২৬ বল ৩১ রান করা তাদিওয়ানাশে মারুমানি।

তাদিওয়ানাশে মারুমানির পর দলীয় ৭৩ রানে সাজঘরে ফিরে যান ক্লাইভ মাদান্দেও। তাকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বলে ডিপে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ৭৩ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সফরকারীরা।

দলের বিপদ আর বাড়িয়ে দলীয় ৯১ রানে সাজঘরে ফিরে দুই জিম্বাবুয়ান ব্যাটার জোনাথন ক্যাম্পবেল ও লুক জংওয়ে। ১০ বলে ২১ রান করে জোনাথন ক্যাম্পবেল তানভির ইসলামের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান। অন্যদিকে জোনাথন ক্যাম্পবেলের বিদায়ের পরের ওভারেই রিশাদ হোসেনের বলে এইলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান লুক জংওয়ে। এই দুই ব্যাটারের বিদায়ে ৯১ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় সফরকারীরা।

এর পরেই জুটি গড়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেন ফারাজ আকরাম ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। এই জুটিতে ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে সফরকারীরা। তবে দলীয় ১৪৫ রানে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বিদায়ে ৫৪ রানে ভেঙে যায় এই জুটি।

ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বিদায়ের পর রানে থামে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৬ রানে থামে তারা। যার ফলে বাংলাদেশ তুলে নিয় ৯ রানের জয়। বাংলাদেশের হয়ে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৩ টি, রিশাদ হোসেন ২টি, তানভির ইসলাম , তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১ টি করে উইকেট নেন।

এর আগে তৃতীয় ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৬০ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। এর পরেই জুটি গড়েন তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলি অনিক। এর মাঝেই ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক তুলে নেন তাওহিদ হৃদয়। এই জুটির কল্যাণে বিপদ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। তাওহিদ ৫৭ রান করে ফিরে গেলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। (ঢাকাটাইমস/০৭মে/এনবিডব্লিউ)