শিক্ষায় কম বরাদ্দ হতাশাজনক

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
  প্রকাশিত : ০৯ জুন ২০২৪, ১৩:০২| আপডেট : ০৯ জুন ২০২৪, ১৩:০৪
অ- অ+

শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর দরকার এটা প্রতিবার বলে আসছি। বিশেষ করে আমাদের মতো দেশে যেখানে আমরা এই বিশাল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করার কথা বলে আসছি। শিক্ষায় জিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশের বরাদ্দ প্রয়োজন। কিন্তু বিদায়ী অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর নতুন অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে জিডিপির ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। কিন্তু শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হলে জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশের দিকে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রতিবারই এটা বাড়ানো দরকার। এরপরও বাড়ানো হয় না। এটা বেশ হতাশাজনক।

শিক্ষায় কম বরাদ্দের পাশাপাশি আরও দুঃখজনক বিষয় হলো সেই কম বরাদ্দও ঠিকমতো খরচ হয় না। এর মূল কারণ শিক্ষাকে গুরুত্বও দেওয়া হয় না। ফলে এই খাত যে অগ্রাধিকার পাওয়া দরকার তা পায় না। অগ্রাধিকার না পাওয়ার কারণ যারা ডিসিশান মেকার তাদের সন্তানরাই পড়াশোনা করে ইংরেজি মাধ্যমে কিংবা বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ে। সেখানে পড়াশেষে তাদের স্পৃহা থাকে বিদেশে যাওয়ার জন্য। শিক্ষায় কম বরাদ্দ তাদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। ফলে শিক্ষা খাতে কেমন বরাদ্দ হচ্ছে বা তার ব্যয় ঠিকমতো হচ্ছে কি না সেদিকে অবহেলা রয়েছে।

শিক্ষার যে তিন ধারা রয়েছে এর মধ্যে বাংলা মাধ্যম বরাবরই অবহেলিত থাকে এমনটাই দেখে আসছি। এদের ওপর বাজেটের প্রভাব পড়ে। কিন্তু এখানেই নানা রকম পরিবর্তনও হয়ে আসছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টও হয়ে থাকে। একবার সৃষ্টিশীল প্রশ্নপদ্ধতি হলো। সেটি বাদও হয়ে গেল। পরীক্ষার সংখ্যা কখনো বাড়ানো হয়, কখনো কমানো হয়। এখন নতুন কারিকুলাম এসেছে। এগুলো সবটাই হচ্ছে মূল এই ধারাটিতে। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমে এ ধরনের এক্সপেরিমেন্ট হয় না। সেখানে একভাবেই চলে এসেছে এবং সবাই তা মেনেও নিয়েছে। তাই সেখানে কোনো পরিবর্তন করা হয় না। এছাড়া মাদ্রাসাও নানারকম সহায়তা এবং বেসরকারি বা ব্যক্তিগত দানে চলে। ফলে তাদের বাজেটের তেমন প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলা মাধ্যমে বাজেটের কম বরাদ্দের প্রভাব পড়ে।

শিক্ষা ছাড়া কোনো উন্নয়ন সম্ভব না। শিক্ষার প্রয়োজন যে শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ নয়। কারণ দেশের বাইরে যেসব কর্মী পাঠাচ্ছি তারা যদি শিক্ষিত না হয় তবে দক্ষ হবে না। প্রতিবেশী দেশগুলো শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়। কিন্তু আমরা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিই না। ফলে শিক্ষায় তাদের ভালো বরাদ্দ থাকে। তাই আমাদের দেশের জনগোষ্ঠীরও দক্ষতা ও সৃষ্টিশীলতা বাড়ানোর জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। তবে এখন যতটুকুই বরাদ্দ হয়েছে সেটিই যেন যথাযথ খরচ হয় সেই চেষ্টা করতে হবে। সেটা মনিটরিং করতে হবে।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ ও ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শেখ পরিবারের ৫ সদস্যের সম্পত্তি ক্রোক, রিসিভার নিয়োগের আদেশ
ধাওয়া খেয়ে পিছু হটল ভারতের চার যুদ্ধবিমান
নিজের ওপর চলা নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বিচার চাইলেন রাশেদ খান
এসপি পদমর্যাদার ১৪ কর্মকর্তার বদলি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা