ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী
ভূমধ্যসাগরে ১০ মৃত্যু, ৩০ বাংলাদেশিসহ উদ্ধার ৫১, নিখোঁজ ৬০

অবৈধ পথে ইউরোপ যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে পৃথক দুটি নৌকা দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১০ অভিবাসনপ্রত্যাশী। নিখোঁজ ৬০ জন। অভিবাসনপ্রত্যাশী বহনকারী নৌকা থেকে ৩০ বাংলাদেশিসহ জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৫১ জনকে। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি রয়েছে কি না জানা যায়নি।
জার্মানির এনজিও প্রতিষ্ঠান রেসকিউশিপ জানায়, গতকাল সোমবার ভুমধ্যসাগরে ইটালির লাম্পেদুসা উপকূল থেকে ৪০ মাইল দূরে ডুবতে থাকা একটি কাঠের নৌকা থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তাদের মানবিক উদ্ধার জাহাজ নাডির ৫১ জনকে জীবিত উদ্ধার করে।
রেসকিউশিপের একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে ওপরের ডেকে থাকা লোকদের উদ্ধার করে। পরে নৌকার ডেকের নিচে থেকে অচেতন অবস্থায় ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে দুজন জীবিত ছিলেন।
ওই কর্মকর্তা আর জানান, নৌকার ডেকের নিচে পানিতে পেট্রোল ভাসছিল। সেখানে থাকা যাত্রীরা হয়তো পেট্রোলের পরিবেশে ঠিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। পরে নৌকায় পানি ঢুকলে তারা মারা যান।তাদের সবাই পুরুষ।
জীবিত উদ্ধার ৫১ জনের মধ্যে ৩০ জন বাংলাদেশি বলে জানায় রেসকিউশিপ। অন্যরা পাকিস্তান, মিসর ও সিরিয়ার নাগরিক। জীবিত উদ্ধার ব্যক্তিদের ইতালির কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, একই দিন ইতালির দক্ষিণাঞ্চলের ক্যালাব্রিয়া উপকূল থেকে প্রায় ১২৫ মাইল দূরে অন্য একটি নৌকা ডুবে গেলে ৬০ জনের বেশি নিখোঁজ হয়। আন্তর্জাতিক চিকিৎসা-মানবিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানায়, নিখোঁজদের মধ্যে ২৬ জন শিশু রয়েছে। শিশুসহ নিখোঁজ ৬৬ জনের কারও পরিচয় জানা যায়নি।
তবে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তথ্য, লিবিয়া ও তুরস্ক থেকে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাচ্ছিল এসব অভিবাসনপ্রত্যাশী। তাদের মধ্যে একটি আফগান পরিবারের সলিলসমাধি হয়েছে বলে ধারণা করছে এমএসএফ।
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য অন্যতম প্রাণঘাতী এই রুট (ভুমধ্যসাগর) দিয়ে প্রতিবছর এশিয়া-আফ্রিকা থেকে হাজারো মানুষ ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্যমতে, গত বছর তিন হাজার ১৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ হন। আর গত ১০ বছরে ২৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি মৃত্যু বা নিখোঁজ হয়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/১৮জুন/মোআ)

মন্তব্য করুন