ফ্রান্সে নির্বাচনের প্রথম পর্বে ম্যাক্রোঁর দলের ভরাডুবি

ফ্রান্সে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটে জয় পেয়েছে মারিন লা পেনের কট্টর ডানপন্থি দল আরএন। অন্যদিকে হতাশাজনক ফল পেয়েছে বামপন্থি জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট অ্যালায়েন্স এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর দল। তবে আগামী ৭ জুলাই ভোটের পরবর্তী পর্ব বা রান অফ রাউন্ড। সেদিনই চূড়ান্ত হবে, ফরাসি পার্লামেন্টের ভবিষ্যৎ।
বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, মারিন লা পেনের কট্টর ডানপন্থি দল আরএন প্রথম পর্বে ৩৪ শতাংশ ভোট পেতে পারে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বামপন্থি নিউ পপুলার ফ্রন্ট অ্যালায়েন্স ২৮.৫ থেকে ২৯.১ শতাংশ ভোট পেয়েছে। আর ম্যাক্রোঁর জোট পেয়েছে ২০.৫ শতাংশ থেকে ২১.৫ শতাংশ ভোট।
মারিনের আরএন দল অতি ডানপন্থি বলেই পরিচিত। গত কয়েকবছরে তাদের শক্তি চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। ভোটের আগের সমীক্ষাগুলোতেও দেখা যায়- তারা ভালো আসন পেতে যাচ্ছে। প্রথম পর্বের ভোটের পর বুথ ফেরত সমীক্ষাও তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এদিকে ফরাসি পার্লামেন্টে ম্যাজিক ফিগার ২৮৯। অর্থাৎ যে দলের কাছে ২৮৯টি আসন থাকবে, তারাই সরকার গড়তে পারবে। বুথ ফেরত সমীক্ষায় অতি ডানপন্থিরা বেশি আসন পেলেও ২৮৯ টি আসন থেকে অনেকটাই পিছিয়ে তারা। ফলে আরএন-ও ভোট পরবর্তী জোটের পথে হাঁটছে। ছোট দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে জোট তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে তারা। রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গেও তারা হাত মেলাতে পারে।
অন্যদিকে ম্যাক্রোঁ বামপন্থিদের সঙ্গে জোটের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তবে অনেকেই মনে করছেন, প্রথম পর্বের পর যে ইঙ্গিত মিলছে, তা সম্পূর্ণ বদলে যেতে পারে দ্বিতীয় পর্বে। বামপন্থিদের ভোটের যে সংখ্যা দেখানো হচ্ছে, তাতে ভুল থাকার আশঙ্কা আছে বলে মনে করছেন অনেকে। ফলে দ্বিতীয় পর্বের ভোটের আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ঠিক নয় বলেই কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের বক্তব্য।
বুথ ফেরত সমীক্ষা প্রকাশ্যে আসার পরেই প্যারিসের রিপাবলিকান স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ নেমে পড়েন। অতি ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে তারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
সংবাদসংস্থা এপি-কে এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, ফ্রান্স চরমপন্থার দিকে এগিয়ে চলেছে। তার বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন তারা।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ডানপন্থিদের হাতে ক্ষমতা চলে গেলে ফ্রান্সে বিভেদের রাজনীতি আরও বেশি গুরুত্ব পাবে। এই পরিস্থিতিতে ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বিরোধী জোট গড়ে ওঠা অত্যন্ত জরুরি।
এরআগে গত মাসে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অতি-দক্ষিণপন্থিদের কাছে হারের পরই পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ বা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ম্যাক্রোঁ।
সেসময় জাতির প্রতি ভাষণে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমাদের পার্লামেন্ট নির্বাচনে আপনারা যাতে পছন্দ অনুসারে ভোট দিতে পারেন, তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিলাম।’
তিনি বলেছেন, ‘যারা ইইউ’র পক্ষে তাদের কাছে ইউ পার্লামেন্টের ফলাফলকে ভালো ফল বলা যায় না। আমাদের মহাদেশে অতি-ডানপন্থিরা সব জায়গায় এগোচ্ছে। এই অবস্থায় আমি স্পষ্টীকরণ চাই। আমি আপনাদের বার্তা পেয়েছি, আপনাদের উদ্বেগ দেখছি, আমি তার জবাবও দিতে চাই।’
সূত্র: রয়টার্স
(ঢাকাটাইমস/০১জুলাই/এমআর)

মন্তব্য করুন