৪৭ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ত্রিপুরায় কি সত্যিই ছড়িয়ে পড়েছে এইচআইভি?

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে কি ছড়িয়ে পড়েছে এইচআইভি মহামারি। মঙ্গলবার এমন উদ্বেগজনক খবর প্রকাশ করেছিল ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই। ত্রিপুরা স্টেট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির (টিএসএসিএস) কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এএনআই বলেছিল, ৮২৮ জন শিক্ষার্থী সংক্রমিত এবং ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এইচআইভিতে।
রাজ্যটির ২২০টি স্কুল এবং ২৪টি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে এইচআইভি ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল প্রতিবেদনে। ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক সেবন করার ফলেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এইচআইভি ছড়িয়েছে বলে জানানো হয়েছিল।
এমনর খবর প্রকাশ পেতেই হইচই শুরু হয় ভারতে, বুধবার এই বিষয়টি স্পষ্ট করে ত্রিপুরা সরকার। তাদের দাবি, এই খবর বিভ্রান্তিকর।
ত্রিপুরা সরকার বলেছে, রাজ্যে এইচআইভি সংক্রমণ মহামারির আকার ধারণ করেনি। এই পরিসংখ্যানগুলো আসলে গত ২৫ বছরের সম্মিলিত হিসাব। ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে যাত্রা শুরু করেছিল ত্রিপুরা স্টেট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটি বা টিএসএসিএস। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের পরিসংখ্যান রাখা হয়।
সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৯৯ থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত, রাজ্যে ৮২৮ জন শিক্ষার্থী এইচআইভি পজিটিভ বলে সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭২ জন শিক্ষার্থী এখনও বেঁচে আছে এবং ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকার আরও দাবি করেছে, সম্প্রতি ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়ন, ওয়েব মিডিয়া ফোরাম এবং টিএসএসিএস-এর যৌথ উদ্যোগে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে টিএসএসিএস-এর যুগ্ন পরিচালক পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝাতে ওই পরিসংখ্যান দিয়েছিলেন।
তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্যের মোট ১৬৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতাল থেকে তারা তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সমস্ত ব্লক এবং মহকুমা থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। এইচআইভি আক্রান্ত অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ধনী পরিবারের বলে জানয়েছিলেন তিনি।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, বাবা-মা দুজনেই সরকারি চাকরি করেন। দুর্ভাগ্যবশত, তাদের সন্তানরা মাদকাসক্ত বলে যতক্ষণে বুঝতে পারেন বাবা-মায়েরা, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়।
টিএসএসিএস-এর কর্তারা আরও জানিয়েছিলেন, ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত, ত্রিপুরার অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি কেন্দ্রগুলো ৮ হাজার ৭২৯ জন এইচআইভি আক্রান্তকে নিবন্ধিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে, জীবিত আছেন ৫ হাজার ৬৭৪ জন। এরমধ্যে ৪ হাজার ৫৭০ জন পুরুষ, ১ হাজার ১০৩ জন নারী এবং একজন ট্রান্সজেন্ডার আছেন।
সূত্র: নিউজ১৮
(ঢাকাটাইম/১১জুলাই/এমআর)

মন্তব্য করুন