রাষ্ট্রপতি হিসেবে খেতাবপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা কর্নেল অলিকে চান বিশিষ্টজনেরা

জাতীয় প্রেস ক্লাব-এর আকরাম হলে "দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও নাগরিকদের করণীয়" শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশিষ্টজনরা নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে বীরবিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নাম প্রস্তাব করেছেন। তারা বলেছেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করে পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। তার স্থলে কর্নেল অলি আহমেদকে রাষ্ট্রপতি করতে হবে।
আইডিয়াল বাংলাদেশ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আব্দুল লতিফ মাসুম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির (বাজাপা সভাপতি ড. সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মদ সালেহউদ্দিন, ড. নেয়ামুল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, আইনজীবী অ্যাড. আবুল হাসেমসহ আরও অনেকে।
জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ আজ এক মেঘাচ্ছন্ন অন্ধকার সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জুলাই বিপ্লবের পর জাতি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, ভারতে পলায়ন, সেনানিবাসের ভেতরে ৬২৬ জন আওয়ামী দুষ্কৃতিকারীর নিরাপদ আশ্রয় ও অনেকের পলায়নসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একটি শ্বেতপত্র আশা করেছিল। ওই সময় দেশে তিন দিন কোনো সরকার ছিল না। রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনী সব নিয়ন্ত্রণ করেছেন। কিন্তু জনগণকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেছেন তার কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কোনো পদত্যাগপত্র আসেনি। অথচ তিনি নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ করালেন এবং তার আগে জাতিকে জানালেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। একজন রাষ্ট্রপতির এই মিথ্যাচার শপথ ভঙ্গের সামিল। শাহাবুদ্দিন আহমেদ একটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। অর্থাৎ তিনি পতিত আওয়ামী সরকারের ১ নং ব্যক্তি। ওই ফ্যাসিস্ট শাসকের পতনের পর তার কোনো অস্তিত্ব থাকার কথা নয়। শপথ ভঙ্গের দায়ে তার অপসারণ এখন সময়ের দাবি। একজন বিদেশি নাগরিক রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবার যোগ্যতা আছে কী?
তিনি আরও বলেন, আমরা জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে একজন অভিভাবক চাই। যিনি হবেন সাহসী, দক্ষ, সৎ, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সম্পন্ন, দেশ বিদেশে সম্মানিত, মাটি ও মানুষের সাথে মমতার সম্পর্ক আছে, জাতির ক্রান্তিলগ্নে গণমানুষের পাশে থেকেছেন, শিক্ষিত, ত্যাগী নেতা।
বীরবিক্রম কর্নেল (অব.) অলি আহমেদকে রাষ্ট্রপতি করার দাবি জানিয়ে হাসান সারওয়ার্দী বলেন, ‘আশা করি রাষ্ট্র আমাদের নিরাশ করবে না। গণতন্ত্র হত্যা ও গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। পলাতক অপরাধীদের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করুন। এদের বিচারকার্য ত্বরান্বিত করুন। অবিলম্বে বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করা হোক। তার স্থলাভিসিক্ত করা হোক মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি, প্রথম বিদ্রোহকারী মুক্তিযোদ্ধা, সাহসী, সৎ, পরীক্ষিত রাজনীতিবিদ, সাংগঠনিক কাজে দক্ষ, গণমানুষের প্রিয় নেতা, যিনি আমাদের ছেড়ে বিপদে সরে পড়বেন না, সুশিক্ষিত, প্রথম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরবিক্রম কর্নেল (অব.) অলি আহমেদকে।’
রাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি ও নাগরিকদের করণীয় শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফারজানা ব্রাউনিয়া। প্রায় সকল আলোচকরা বলেন, তারা রাষ্ট্রপতি হিসেবে খেতাবপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রকে চান।
ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/জেবি

মন্তব্য করুন