কায়কোবাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন, তারা কারা? কী পরিচয়?

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৫৭| আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২০:২৩
অ- অ+

বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও হুইপ এবং পাঁচবারের সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজক হিসেবে কুমিল্লার মুরাদনগরের সাধারণ ছাত্র-জনতার নাম বানারে লেখা হয় ।

তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র-জনতার ব্যানার ব্যবহার করা হলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুরাদনগরের জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মী। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- কুমিল্লা জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ও ছাত্রদলের মুরাদনগর উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান কেরান। বর্তমানে তিনি বাঙ্গরা থানা জাতীয় নাগরিক পার্টির সভাপতি।

এছাড়া ছিলেন মুরাদনগর উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি মিনহাজুল হক, ছাত্র সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক ও এনসিপির সদস্য কবির হোসেন। আগে বিএনপি করলেও হঠাৎ তারা কেন এনসিপিতে ভিড়লেন? আবার যেই দলের হয়ে রাজনীতি করতেন সেই দলের নেতার বিরুদ্ধেই প্রকাশ্যে কেন সংবাদ সম্মেলন করছেন- এসব নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কি আছে নেপথ্যে?

দুঃখজনকভাবে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর ইনিয়ে বিনিয়ে দেওয়া ও মুরাদনগরের নেতৃবৃন্দের বিশৃঙ্খলার কারণে সাংবাদিকরা এটি বয়কট করেন।

এদিন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কামরুল হাসান কেরান বলেন,মুরাদনগর এলাকায় দখল, চাঁদাবাজি ও আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করছে বিএনপি । বিএনপির লোকজনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ।

কামরুল হাসান কেরানের বক্তব্য চলাকালে হঠাৎ একজন যুবক সেখানে উপস্থিত হয়ে তার লিখিত বক্তব্য পাঠ থামিয়ে দেন। তিনি উচ্চস্বরে বলতে থাকেন— আপনাকে (কেরান) আর লিখিত বক্তব্য পড়তে হবে না। এখন লিখিত বক্তব্য দেবেন মুরাদনগর উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি মিনহাজুল হক।

এই মিনহাজুল তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে তাদের পক্ষে সাফাই শুরু করেন। তার বক্তব্য শেষ হলে সাংবাদিকরা জানতে চান, এসসিপি কীভাবে মুরাদনগর উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করছে? কীভাবে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের পূর্নবাসন করা হচ্ছে? এমনকি এনসিপির ব্যানার লাগানো গাড়িতে যুবলীগ নেতাকে কীভাবে নিজ বাড়িতে ফিরলেন? এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কেউই। সাংবাদিকদের তরফে এসব প্রশ্ন করা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সেখানে উপস্থিত অনেকে।

জানা গেছে, সম্প্রতি কুমিল্লার মুরাদনগরে শ্রীকাইল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার এনসিপির ব্যানার লাগানো গাড়িতে নিজ গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় তোলপাড় চলছে।

গোটা সংবাদ সম্মেলন চলে হট্টগোল আর অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে। যেই ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল তাদের সাথে স্থানীয় আরও কিছু লোক উপস্থিত হন। তারা সংবাদ সম্মেলন চলাকালে একাধিকবার সাংবাদিকদের ওপর উত্তেজিত হন। সাংবাদিকদের নিয়ে নানা কটুক্তিমূলক কথাবার্তা বলেন।

পরে সাংবাদিকরা সংবাদ সম্মেলন বয়কট করে সেখানে থেকে বেরিয়ে যান। এরপরও উপস্থিত এনসিপির অনুসারী কয়েকজন পেছন থেকে সাংবাদিকদের বলতে থাকেন- ‘এরা হলুদ সাংবাদিক।’

লিখিত বক্তব্য চলাকালে ছাত্র সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক বলেন, ‘২৪ মার্চ সিএনজিতে কোম্পানীগঞ্জ নগরপাড় যাওয়ার সময় সিএনজিচালকের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে বিএনপির লোকজন আমার ওপর হামলা করে।’

তার বক্তব্য চলাকালে সাংবাদিকরা জানতে চান, আপনি সেদিন কেন ছাত্রলীগ নেতা সবুজকে ডেকেছিলেন? নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা হয়ে সবুজ কীভাবে এনসিপির হয়ে কাজ করছে?

এমন প্রশ্নে ওবায়দুল হক বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকে সে আমাদের সঙ্গে ছিল। তাই তাকে ঘটনার সময় ডাকা হয়েছিল।’

তখন সাংবাদিকরা পাল্টা প্রশ্ন করেন— জুলাইয়ে কেউ এক দিন মিছিল করলেই কি তাকে দলে নিতে পারেন? সে তো নিষিদ্ধ সংগঠনের এখনো পদধারী। তবে এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি ওবায়দুল হক। তিনি কিছু সময় চুপ থাকার পর মাইক দিয়ে দেন কেরানের কাছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/এলএম/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শেখ পরিবারের ৫ সদস্যের জমি-বাড়ি ক্রোক, রিসিভার নিয়োগের আদেশ
ধাওয়া খেয়ে পিছু হটল ভারতের চার যুদ্ধবিমান
নিজের ওপর চলা নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বিচার চাইলেন রাশেদ খান
এসপি পদমর্যাদার ১৪ কর্মকর্তার বদলি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা