দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সিলেটের জাফলংয়ে বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করছেন পাথর শ্রমিকরা।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ইসিএ এলাকা পরিদর্শন শেষে স্থানীয় ওই শ্রমিকদের রোষানলে পড়েন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন বেলা ১১টার দিকে জাফলং পর্যটন স্পট ইসিএভূক্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের ওই দুই উপদেষ্টা। পরিদর্শন শেষে দুপুর ১২টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, পরিবেশ রক্ষায় জাফলং পাথর কোয়ারি বন্ধ ও পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে অনেক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপদেষ্টাদের এসব কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় পাথর শ্রমিক, জনতা ও পাথর উত্তোলনকারী বিভিন্ন সংঘটনের নেতাকর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানে বিক্ষোভ করে গাড়ি আটকে দেন। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে বিক্ষোভকারী রোষানলে আটকে ছিলেন। এসময় পুলিশ ও বিজিবি বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিক্ষোভকারীরা জানান, আমরা মনে করেছিলাম ওনারা এসে আমাদের রুটি-রুজির জন্য ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের সুযোগ করে দিয়ে যাবেন। কিন্তু এটা না করে দালালদের কথা শুনে ওনাকে ভুল বুঝিয়ে ওনি পর্যটক নগরীকে সুন্দর করার ঘোষণা দিয়ে শ্রমিকদের জন্য ক্ষতি করে চলে গেছেন। সেই সুবাদে শ্রমিকরা কষ্ট পেয়ে ওনাদের কাছে ভাত এবং কাপড় চেয়ে শ্রমিকরা রাস্তা প্রতিরোধ করেছিলেন। একটাই দাবি ছিল শ্রমিকদের ভাত এবং কাপড়ের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা। ওনারা শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না করে ওনারা ওনাদের গন্তব্যে চলে গেছেন। কিন্তু আমাদের এই ৫ লাখ শ্রমিকরা অধিকার আদায়ে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
এর আগে, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের বলেন, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে জাফলং ও এর আশপাশের এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। জাফলং এর অবৈধ পাথর ক্রাশারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। অন্যদিকে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিলেটের আর কোনো পাথর কোয়ারি খুলে দিবে না সরকার। জাফলং পর্যটন কেন্দ্রকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলের পাথর শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
গোয়াইনঘাটে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ বলেন, গাড়ি আটক করেনি। সেখানে সাংবাদিক-শ্রমিকরা ছিলেন। পরিদর্শন শেষে বল্লাঘাট এলাকায় আসতেই পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে শ্রমিকরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজা উন-নবী ও সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ, সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
(ঢাকা টাইমস/১৪জুন/এসএ)

মন্তব্য করুন