নাসিরনগরের ভিডিও ফুটেজ দেখে আটক ৩৩
ফেইসবুকে কথিত ধর্ম অবমাননার পোস্ট নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দিরে হামলা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনায় ৩৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ। এ নিয়ে হামলার ঘটনায় মোট ৪৮ জনকে আটক করল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবু জাফর বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ির আশপাশের এলাকা থেকে ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানান তিনি।
গত রবিবার নাসিরনগরে ১৫টি হিন্দু মন্দির ও শতাধিক ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পাশের জেলা হবিগঞ্জের মাধবপুরেও দুটি মন্দিরে হামলা হয়।
হামলার পরদিন কাজল জ্যোতি দত্ত ও নির্মল চৌধুরী নামে দুজন বাদী হয়ে নাসিরনগর থানায় দুটি মামলা করেন। প্রতিটি মামলায় ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
ঘটনার তিন দিন পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক এলাকায় গিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মালাউনরা বাড়াবাড়ি করছে। আর সাংবাদিকরা উস্কানি দিচ্ছে।’ নাসিরনগর হামলার পর মন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্য আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে। এরই মধ্যে শুক্রবার ভোরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আরও পাঁচটি বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এদিকে নাসিরনগর-তাণ্ডব নিয়ে কোনো আন্দোলন না করার জন্য হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল রাতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এই অভিযোগ করেন।
হামলায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগে গতকাল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।
তারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক ও নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হাশেম, তাপরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরুজ আলী ও হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক মিয়া।
নাসিরনগরসহ পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি। এছাড়া শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় র্যাবের একটি ক্যাম্পও স্থাপন করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৫নভেম্বর/এলএ/এএ/এমআর)
মন্তব্য করুন