সাহাবিদের মতো দেশ চালাতে প্রধানমন্ত্রীকে আল্লামা শফীর আহ্বান

সাহাবিদের মত রাষ্ট্র চালাতে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি অথবা চিঠিতে দাওয়াত দেয়ার কথা বলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র আমির আল্লামা আহমাদ শফী।
ময়মনসিংহ শহরের মধ্য বাড়েরায় তিন দিনব্যাপী ইসলাহী মাহফিলের শেষ দিন শনিবার বিকালে সংক্ষিপ্ত বয়ানে তিনি এ কথা বলেন। খানকায়ে হুসাইনিয়ার উদ্যোগে এই মাহফিল হয়।
আল্লামা আহমাদ শফী বলেন, দীন বলে একে অপরের দুনিয়াবি ও আখেরাতি কল্যাণ কামনা করা। একে অপরের মঙ্গল কামনা করার নাম দীন। কুরআন ও হাদীসে যা যা হুকুম আছে সে মোতাবেক আমল করার নাম দীন।
তিনি বলেন, দীনের খেলাফ একটা কাজও করবেন না। নিজে আমল করুন এবং পড়শীকেও আমল করার কথা বলুন।
তিনি দায়িত্বশীলদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ সকলকে দীনের দাওয়াত দাও। বলতে হবে, সাহাবিরা যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন- সেভাবে আপনারও চালান। চিঠি অথবা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত দাও। আর ওয়াজের মাহফিল করে জনগণকে দীনের দাওয়াত দাও।
তিনি নবির মহব্বতে বেশি বেশি দরুদ পড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা মিলাদ কিয়াম না করার কারণে মানুষকে ওহাবি বলে গালি দেয়- বরং তারাই ওহাবি। এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে ২ কোটি ৮৮ লাখ বছর দোজখে থাকতে হবে, অথচ এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোন বয়ান না করে মিলাদ কিয়াম না করার জন্য তারা ওহাবি বলে গালিগালাজ করে।
তিনি বলেন, আপনারা আমল করবেন। না করলে আমরা আপনাদের শাস্তি দিয়ে আমল করাব না।
আল্লামা আব্দুল মোমিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় দারুল উলুম দেওবন্দের শায়খুল হাদীস আওলাদে রাসুল পীরে কামিল আল্লামা আরশাদ মাদানী ও দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামসহ ময়মনসিংহের উলামা-মাশায়েখ বয়ান করেন।
বক্তাদের কয়েকজন হলেন- আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা মামুনুল হক, শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফীজুদ্দীন, ইত্তেফাকুল উলামা ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মুফতি ফজলুল হক, ময়মনসিংহ বড় মসজিদের পেশ ইমাম আল্লামা আব্দুল হক, মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল জাব্বার, মাওলানা এমদাদ, চৌধুরী হাফেজ নাসির আহমাদ, খানকায়ে হুসাইনিয়ার তত্ত্বাবধায়ক ও ইসলাহী মাহফিলের আয়োজক মুফতি মাহবুবুল্লাহ প্রমুখ।
এর আগে হিফজুল কুরআনে বিশ্বজয়ী ময়মনসিংহের তিন তারকা হাফেজ নাজমুস সাকিব, হাফেজ আব্দুল আখের ও হাফেজ জাকারিয়াকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
আল্লামা মুফীজুদ্দীন বলেন, দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত হয়ে আমরা আল্লাহকে যেন ভুলে না যাই। আল্লাহর দেয়া নিয়ামত ভোগ করে তাকে ভুলে যাওয়া নিমক হারামি।
হাফেজ আব্দুল হক বলেন, দীন শেখার লাভ মানুষের চোখে পড়ে না। অথচ দীন শেখা কোন লোক বেকার থাকে না।
আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী বলেন, যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যে দীনকে প্রতিষ্ঠা করবে সেই হল আল্লাহর খলিফা।
মুফতী ফজলুল হক বলেন, বিসমিল্লাহর বিরোধিতা করা কুফুরি। ‘চুরি করলে হাতকাটা একটা বর্বর আইন’ যে একথা বলবে- সে বেঈমান হয়ে যাবে।
মাওলানা আমিনুল ইসলাম আল্লাহ প্রেমের বয়ান দেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তার প্রেমিককে যখন বিশ্বে প্রকাশ করতে চান- তখন তিনি তা করেন। এ ব্যাপারে তিনি মুহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর, শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক, মুফতী আমিনী, আল্লামা আহমাদ শফীর উদাহরণ দেন।
মুফতী মাহবুবুল্লাহ বলেন, দুর্নীতি কমাতে এক নম্বর শর্ত- বান্দার আত্মশুদ্ধি। রাসূলের সুন্নাতের মাশক ও নির্জনে ইবাদত করে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে দুর্নীতি কমবে। মাদ্রাসা, মসজিদ আর খানকা এ জন্যেই।
(ঢাকাটাইমস/২৫ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

মন্তব্য করুন