অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের জিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬, ২১:৫৩| আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:১৬
অ- অ+
পুলিশ কর্মকর্তা রুহুল কবির খানের ফেইসবুক থেকে নেয়া ছবি

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। ওই নারীর বাবা এই ঘটনায় মামলা করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

যার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে সেই পুলিশ কর্মকর্তার নাম রুহুল কবির খান। তিনি সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত। তিনি অবশ্য এই অভিযোগকে বানোয়াট বলেছেন। বলেছেন, তিনিই এখানে ভুক্তভোগী। তার দাবি, সন্তানকে তার স্ত্রী মারধর করায় তিনি তাকে একটি চড় দিয়েছিলেন মাত্র।

রুহুল কবির খানের শ্বশুর মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ঢাকাটাইমসকে বলেন, স্বামীর হাতে পিটুনির শিকার হয়ে তার মেয়ে সায়েমা ফেরদৌস এখন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শহীদুল্লাহ ঢাকাটাইমসকে বলেন, তার জামাতা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল কবির খান একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন। বিষয়টি সায়মা জেনে যাওয়ার পর তিনি বাধা দেন। এই ঘটনাতেই স্ত্রীকে মারধর করেন রুহুল কবির খান।

শহীদুল্লাহ জানান, কাফরুল থানার পূর্ব শেওড়াপাড়ার ৯১০ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকেন রুহুল। গত ২২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটার পরদিন কাফরুল থানায় তিনি মামলা করতে গিয়েছিলেন। তবে পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি নিয়েছে (সাধারণ ডায়েরি নম্বর-১২১০)। থানার কর্মকর্তারা পারিবারিক বিষয়ে মীমাংসা করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান শহীদুল্লাহ।

যোগাযোগ করা হলে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে আপনাকে বলতে হবে।’ পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী শাহরিমা ফেরদৌসের বাবা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রুহুল আমার মেয়েকে প্রায়ই নির্যাতন করে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সে আমার মেয়েকে প্রচণ্ড মারধোর করে। এতে সায়মার দুই হাতে, গলা ও মাথায় আঘাত লাগে।’

২০০৮ সালে পারিবারিকভাবেই রুহুলের সঙ্গে বিয়ে হয় শাহরিমার। তাদের তিন বছর সাত মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে জানান সায়মার বাবা।

রুহুলের বিরুদ্ধে এর আগেও নির্যাতনের অভিযোগ এনে পুলিশ সদর দপ্তরে একটি অভিযোগ করেছিলেন দাবি করে শাহরিমার বাবা বলেন, তখন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রুহুলকে ধমক দিলে কিছুদিন শান্ত থাকেন রুহুল। পরে তিনি আবার বেপারোয়া হয়ে ওঠেন।

তবে পুলিশ কর্মকর্তা রুহুল কবির খান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার সাড়ে তিন বছরের ছেলেকে দুষ্টুমি করার জন্য প্রচণ্ড মারধর করে আমার স্ত্রী। আমি তখন নিজেকে সামলাতে না পেরে তাকে একটি থাপ্পড় মারি। এ ঘটনার পরে ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমার ছেলের সাইকেল ভেঙে নিজেই নিজেকে আহত করে।’

রুহুল কবির খান বলেন, ‘পরে আমার ও তার পরিবারের সদস্যদের খবর দিয়ে আনে সে। আমাদের প্রতিবেশীরাও তাদের (স্ত্রীর পক্ষ) অনুরোধ করেন ছেলের কথা চিন্তা করে সংসার নষ্ট না করার জন্য। কিন্তু তারা সেই কথা কর্ণপাত না করে ঘটনার দুই দিন পর একজন সুস্থ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা (স্ত্রীর পক্ষ) একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট জোগাড় করে আমাকে শাসায় কীভাবে চাকরি করি সেটা দেখে নেবে তারা।’ তিনি বলেন, ‘আমিই এখানে ভিকটিম।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিআইডি পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার (ফরেনসিক) নাছিমা আক্তার বলেন, ‘এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তবে এমনটা হওয়ার কথা নয়; কারণ রুহুল অত্যন্ত ভদ্র ছেলে।’

(ঢাকাটাইমস/২৫ডিসেম্বর/এএ/ডব্লিউবি/ মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সম্মান জানাল বিজিবি
মতিঝিলে ২৮ হাজার ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
জামালপুরে ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন 
চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা