পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, তরুণীকে অপহরণ

বাগেরহাট প্রতিনিধি. ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:০৭
প্রতীকী ছবি

বাগেরহাটের শরণখোলায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে শাহ আলম গাজী দুলু নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে সশস্ত্র ডাকাত দল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, হামলার সময় শাহ আলমের কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করেছে ডাকাতরা। নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারও লুট করা হয়েছে। ডাকাত দলের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শাহ আলম গাজী (৫৭) ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগম (৪৮) গুরুতর জখম হয়েছেন।

শুক্রবার গভীর রাতে শরণখোলা উপজেলা সদরের রাজৈর গ্রামের শাহ আলম গাজী দুলুর বাড়িতে এঘটনা ঘটে। রাতেই তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শাহ আলম গাজীর অভিযোগ, তার মেয়ের সাবেক স্বামী সজীব আকনই তার মেয়ে ফাতেমা তুজ জোহরা শান্তাকে (২১) অপহরণ করেছে।

অন্যদিকে তরুণীর পরিবারের উপর হামলা ও তরুণীকে উদ্ধারের দাবিতে স্থানীয় সচতেন নাগরিক কমিটি প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।

এই ঘটনায় শনিবার বিকালে মেয়েটির বাবা শাহ আলম গাজী দুলু বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে শরণখোলা থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে পুলিশ অপহরণের সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার ও অপ‎হৃত তরুণীকে উদ্ধার করতে পারেনি। ফাতেমা তুজ জোহরা শান্তা পাশ্বর্^বর্তী পিরোজপুর মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহ আলম গাজী দুলু অভিযোগ করে বলেন, বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় শুক্রবার রাত একটার দিকে ১৫/২০ জনের এক দল লোক আমার বাড়ি আসে। এসময় তারা থানা থেকে এসেছে দাবী করে আমাকে দরজা খুলতে বলে। আমি দরজা খুলতে দেরি করায় তা ভেঙ্গে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। এদের সবার মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। তারা আমাকে ও আমার স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে আমার মেয়েকে অপহরণ করে ট্রলারে করে নিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় আমার ঘরে থাকা নগদ এক লাখ টাকা ও স্বর্ণের গহনা লুট করে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি আমার মেয়ে ফাতেমা তুজ জোহরা শান্তার সঙ্গে একই এলাকার রায়েন্দা বাজারের বাসিন্দা সবুর আকনের ছেলে সজীব আকনের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মেয়ের শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও স্বামী তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় বিয়ের দশ মাসের মাথায় বাধ্য হয়ে শান্তা ডিভোর্স দেয় তার স্বামী সজীবকে। এ নিয়ে উভয়পক্ষই মামলা করে।

সম্প্রতি জামাতা সজীবের দায়ের করা দুটি মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে মুখোসধারী ১৫/২০ জনের একটি সশস্ত্র দল নিয়ে হামলা চালিয়ে আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আমার মেয়েকে তারা প্রাণে মেরে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা তার। তিনি দ্রুত তার মেয়ে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রায়েন্দা গ্রামের সবুর আকন ও তার ছেলে সজীব আকনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে শরণখোলা থানার ওসি আব্দুল জলিল বলেন, গৃহকর্তা শাহ আলম গাজী ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। তাদের মাথা, ঘাড়, মূখম-ল, পিটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের কোপের চি‎হ্ন রয়েছে। এই ঘটনায় শনিবার বিকালে মেয়েটির বাবা শাহ আলম গাজী দুলু বাদি হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেছেন। রাতে খরব পেয়ে পুলিশ বলেশ^র নদীতে অভিযান চালায়। পুলিশ অপহরণের সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার ও অপ‎হৃত তরুণীকে উদ্ধার করতে পারেনি। অপহৃতকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৭জানুয়ারি/প্রতিনিধি/এমএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :