বাদাম চাষে যমুনাপাড়ের মানুষের হাসি

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০২ এপ্রিল ২০১৭, ১২:১২

যমুনা নদী। নদীতে বিস্তীর্ণ চর। জরের জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষ। চলতি মৌসুমে বৃহদাকারে হয়েছে বাদামের চাষ। নদী ভাঙা মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে বাদাম চাষ করে। সঞ্চয় হয়েছে অদম্য শক্তি ও সাহস। তারা মুক্তি পেয়েছে ক্ষুধা ও দারিদ্র থেকে। সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বিস্তৃর্ণ চরে বাদাম চাষ করে চলাঞ্চলের তিন সহস্রাধিক মানুষ সংসারে এনেছে সচ্ছলতা।

নদী ভাঙন এসব মানুষ অভাব-হতাশাকে পেছনে ফেলে নতুন করে ঘর তুলেছেন, নতুনভাবে অবতীর্ণ হয়েছেন জীবনযুদ্ধে। দারিদ্র জয়ী নদী তীরের মানুষের এ বছর বাদাম চাষ করে শতভাগ সাফল্য লাভ করেছেন। বাদামের বাম্পার ফলনে তাদের চেখে-মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।

নদীপাড়ের মানুষের আশীর্বাদও যমুনা। যমুনা যেমন প্রতি বছর ঘর-বাড়ি গ্রাস করছে, তেমনি পলি জমিয়ে জেগে ওঠা চরে সোনার ফসল ফলাতেও সমান ভূমিকা রাখছে। তাই তো প্রতিবছর বর্ষা মৌসুষ শেষে যমুনা আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেয় নদীপাড়ের মানুষের জীবনে। চরাঞ্চলের বালুকাময় বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। যমুনা নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং কাজের পর থেকে চরের পরিধি আরো বাড়ছে। শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে বিশাল আকারে চর জেগে উঠেছে।

এছাড়া যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর চরাঞ্চলে এ বছর ব্যাপক বাদাম চাষ করেছেন কৃষকরা।

উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং পুঁজি পেলে বাদাম চাষের পরিধি আরও বিস্তৃতি লাভ করবে বলে কৃষকদের দাবি। চলতি বছর নদীপাড়ের কৃষকরা নানা জাতের বাদাম চাষ করেছেন। এর মধ্যে বাসন্তী, ত্রিদানা, ঝিঙ্গা এবং মাইজচর অন্যতম। এছাড়া বেশ কয়েকজন উন্নত মানের হাইব্রিড জাতের বাদামও আবাদ করেছেন। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা লোকসান পোষাতে এই মৌসুমে আটঘাট বেঁধে চরের জমিতে নিরলসভাবে শ্রম ব্যয় করেন। কৃষকের ঘামে আর শ্রমে বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এখন বাদাম ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষকরা।

কৃষকের ঘরে ঘরে পুরোদমে চলছে বাদাম বাজারজাতকরণের কাজ। বাদাম চাষে অভাবনীয় সাফল্যে খুশির ঝিলিক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে কৃষাণ-কৃষানীর চোখে-মুখে।

যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জর সদর উপজেলার জিয়ামোড় এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম গত ৮ থেকে ১০ বছর আগে যমুনা নদীর তার বাড়ি ঘর গ্রাস করেছে। নদী তাকে সর্বসান্ত করলেও গত ২ বছর ধরে ওই স্থানে চর জেগে উঠায় সেখাতে তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে তিনি জানান।

কৃষিবিদ আরশেদ আলী জানান, সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর চরেই সবচেয়ে বেশি বাদাম চাষ হয়ে থাকে। এ বছর বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। ২ হাজার ৯৫৬ হেক্টর জমিতে বাদামের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৩ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :