বিশ্ব মিডিয়ায় ঔপন্যাসিক কাসেম বিন আবুবাকার
বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে আলোচনার বাইরে থাকা প্রবীণ ঔপন্যাসিক কাসেম বিন আবুবাকার এখন বিশ্বমিডিয়ার আগ্রহের কেন্দ্রে। ইসলামি প্রেমের উপন্যাসের এই লেখককে নিয়ে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
শুধু তাই নয়, যুক্তরাজ্যের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইয়াহু নিউজ, মধ্যপ্রাচ্যের আরব নিউজ, মালয়েশিয়ার দ্যা স্টার ও মালয়মেইল, পাকিস্তানের দ্য ডন, ফ্রান্সের ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোর ও রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনাল, হাঙ্গেরির হাঙ্গেরি টুডেসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফলাও করে কাসেমকে নিয়ে ওই প্রতিবেদন ছেপেছে।
তবে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আলোচনার বাইরে ছিলেন কাসেম বিন আবুবাকার। ঔপন্যাসিক হিসেবেও সাহিত্য সমাজে 'স্বীকৃতি ও সমাদর' পাননি এই লেখক। তার উপন্যাসগুলো হাজার হাজার কপি বিক্রি হয়ে থাকে। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকেও তাকে নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
এএফপির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাসেম বিন আবুবাকার একজন বই বিক্রেতা। ১৯৭০ দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রায় সব উপন্যাসে শুধু শহুরে অভিজাতদের জীবনযাত্রার কথা দেখতে পেয়ে নিজেই হাতে কলম তুলে নেন। এরপর ১৯৭৮ সালে কাসেম তার প্রথম উপন্যাস 'ফুটন্ত গোলাপ' লেখেন। তবে উপন্যাসটি প্রকাশকের নজর কারতে প্রায় এক দশক সময় লাগে। ওই প্রকাশকের কাছে মাত্র এক হাজার টাকায় এটির সত্বও বিক্রিও করে দেন তিনি।
ইসলামী মূল্যবোধকে সামনে রেখে কাসেমের লেখা একের পর এক প্রেমের উপন্যাস প্রকাশিত হতে থাকে। এসব উপন্যাস দ্রুতই তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। লাখ লাখ পাঠকের হাতে হাতে ঘুরতে থাকে তার উপন্যাস।
বাংলাদেশের সাংবাদিক কদরুদ্দিন শিশির এএফপিকে বলেছেন, কাসেম এমন এক নতুন পাঠকগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছেছেন, তার আগে যাদের অস্তিত্বের কথা কেউ ভাবেইনি।
তিনি আরও বলেন, গ্রাম এলাকায় তরুণ প্রেমিকরা তাদের প্রেমিকাকে সেরা উপহার হিসেবে কাসেমের উপন্যাস দিয়ে থাকে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্যেকুলার লেখকরা এমন এক দুনিয়ার গল্প বলেছে, যেখান থেকে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রধান অংশের গ্রামীণ ও ধর্মীয় জীবনের অস্তিত্ব মুছে ফেলা হয়েছে। কাসেম এই শূন্যতার বিষয়টি অনুধাবন করে তার উপন্যাসের বাজার গড়ে তুলেছেন।
লেখালেখি থেকে দুবছর হলো অবসর নিয়েছেন কামেস বিন আবুবাকার। তবুও তার ভক্তরা তাকে ব্যস্ত রেখেছে। এই বয়সেও পাঠকরা তার কাছে আসেন অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য। এছাড়া পাঠকরা প্রতিনিয়ত তাকে চিঠিও লেখে।
এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে কাসেম বলেছেন, ‘মেয়েরা আমাকে নিজেদের রক্ত দিয়ে চিঠি লিখে পাঠায়। অনেকেই আবার আমাকে বিয়ে করার প্রস্তাবও দেয়।’ কাসেম বিন আবুবাকার নিজেও অবাক হন তার জনপ্রিয়তায়। তার মতে, তার মত বয়স্ক লোকের জন্য নারীদের উন্মাদনা বিস্ময়কর।
কাসেম বলেন, অসংখ্য নারী ভক্ত বোরকায় মুখ ঢেকে দাঁড়ায় তার অটোগ্রাফের জন্য। এখনও ভক্তদের পাঠানো প্রচুর চিঠি পাই। অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ ইসলামের সৎ পথে এসেছেন তার লেখনীর কারণে। সেজন্য তাকে তার লেখার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে চিঠি পাঠান ভক্তরা।
(ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/জেডএ)
মন্তব্য করুন