আইন ছাড়াই চলছে ইসলামী ব্যাংকিং
দেশে আইন ছাড়াই চলছে ইসলামী ব্যাংকিং। বাংলাদেশে প্রচলিত ধারার ব্যাংকিং এর পাশাপাশি ইসলামী শরিয়াভিত্তিক এই ব্যাংকিং শুরু হয় ৩৪ বছর আগে। বর্তমানে দেশের প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ ব্যাংকিং হয় এই পদ্ধতিতে।
বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এক প্রতিবেদনে এই প্রতিবেদন উঠে এসেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী
পরিচালক শুভঙ্কর সাহা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংক কোম্পানি আইনে চলছে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা যেখানে ইসলামী ব্যাকিংয়ের ব্যাপারে অল্পকিছু দেওয়া আছে। তবে এখন আলোচনা উঠছে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের জন্য আলাদা আইন করার জন্য।’
বিআইবিএম ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য এক জরিপ করেছে সেখানে দেখা গেছে একশত ভাগ লোকই পরামর্শ দিয়েছে ‘ইসলামী ব্যাংকিং অ্যাক্ট ’ করার ব্যাপারে।
বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক আলমগীর বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকিংয়ে আরও উন্নতি করতে হলে ইসলামী ব্যাংকিং এ্যাক্ট প্রয়োজন। যেটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ একই সময় ইসলামী ব্যাংকিং শুরু হলে তাদের ইসলামি ব্যাংকিং অ্যাক্ট থাকলেও বাংলাদেশে নেই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকিং অ্যাক্ট’ করার কথা এখন আলোচনায় আসছে। এটা আমাদের পর্যালোচনায় আছে, মনে হয় সরকারেরও পর্যালোচনায় আছে। দেখা হচ্ছে ব্যাংকিংয়ের জন্য আলাদা আইন করলে ভালো হয় কি না।’
ইসলামী ব্যাকিং ও বিমা বিশেষজ্ঞ মিজানুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে ইসলামী ব্যাংকিং অ্যাক্ট হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো এই আইন হয়নি। আইন করার মাধ্যমে এদেশে ইসলামী ব্যাংকিং আরও গতিশীল করা সম্ভব।’
ইসলামী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের আধুনিক বিকাশ শুরু হয় মূলত ১৯৬০ সালে। মিশরের মিটগামারে ‘সেভিংস ব্যাংক' নামে বিশ্বের প্রথম আধুনিক ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ সালের ৩০ মার্চ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড'। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয় আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক। এ ছাড়া তফসিলী ব্যাংক সমূহের ইসলামী ব্যাংকিং ইউনিট ও ইসলামী ব্যাংকিং শাখা স্থাপনে এগিয়ে আসে।
বিআইবিএমের গবেষণায় দেখা যায় বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মোট ১৯.৪ শতাংশ ইসলামী ব্যাংকিং। যেখানে বাংলাদেশ বিশ্বের ১০ নম্বরে অবস্থান করছে।
সাধারণ ব্যাংকিং এর তুলনায় বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে মুনাফা বেশি হয় বলে বিআইবিএমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায় সাধারণ ব্যাংকিংয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো ১০০ টাকা বিনিয়োগ করে ১.৯ টাকা মুনাফা করে। ইসলামী ব্যাংকিংয়ে সেটি প্রায় দ্বিগুণ, ৩.৬ টাকা। একইভাবে মোট সম্পদের বিপরীতে সাধারণ ব্যাংকিংয়ে আয় ৫.৫ শতাংশ। অন্যদিকে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে ৭.৩ শতাংশ।
ইসলামি ব্যাংকিংয়ে খেলাপি ঋণের হারও অনেক কম। প্রচলিত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ৯.২ শতাংশ, ইসলামি ব্যাংকিংয়ে এ হার ৪.৩ শতাংশ।
(ঢাকাটাইমস/০৯জুন/জেআর)
মন্তব্য করুন