‘আমার সন্তানরা ব্যবসা করে না, হাওয়া ভবন খুলে না’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার ছেলে মেয়েরা অতীতের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে মেয়েদের মত ব্যবসা খুলে বসেনি বা হাওয়া ভবন খুলে চাঁদাবাজি করেনি। তারাও মায়ের মতই দেশের জন্য কাজ করছে।
সুইডেন সফররত প্রধানমন্ত্রীকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দেয়া এক গণসংবর্ধনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে দেশটিতে শেখ হাসিনার দুই দিনের সফরের শেষ দিন আজ। তার আগের দিন স্থানীয় আওয়ামী লীগ তাকে সংবর্ধনা দেয়।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি নিজে ও ছোট বোন শেখ রেহানা তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করে মানুষের জন্য কাজ করার উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্য কাজ করার যে শিক্ষাটা আমরা পেয়েছি এবং ছেলেমেয়েদের দিতে পেরেছি, সেটাইতো বড় কথা। তারা দেশের জন্যই কিন্তু কাজ করে।’
‘আমি আজ পর্যন্ত দেখি নাই যে তারা এসে এই ব্যবসা দাও, ওই ব্যবসা দাও বলেছে বা হাওয়া ভবন খুলেছে, অন্তত ওই পর্যায়ে যায় নাই’-বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর দুই সন্তানের মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন ২০০৯ সাল থেকেই। ডিজিটাল বাংলাদেশের চিন্তা তার মাথা থেকেই এসেছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আর শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিজম নিয়ে কাজ করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা স্বীকৃতি পেয়েছেন। বাংলাদেশেও তিনি অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করছেন।
বাংলাদেশের মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগ স্বীকারের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমার একটাই দায়িত্ব, যে জাতির জন্য আমার বাবা, মা, ভাই জীবন দিয়ে গেছেন, সে জাতির ভাগ্য আমাকে পরিবর্তন করতেই হবে। সে বাঙালি জাতিকে উন্নত জীবন এনে দিতেই হবে।’
প্রবাসীদেরকে দেশের উন্নয়নে আরও সচেষ্ট হওয়ার পাশাপাশি দেশবিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশের সম্পদ দেশের উন্নয়নে প্রবাসীরা সব সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ছয় দফা আন্দোলন, ৭০ সালের নির্বাচন, অসহযোগ আন্দোলনসহ সকল আন্দোলন শুরু হয় প্রবাস থেকেই। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিচারের দাবিতে শেখ রেহানা আন্দোলন শুরু করেছিলেন এই সুইডেন থেকেই।’
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে ড. ইউনূসের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতুতে ঋণ না দেয়ার পেছনে ড. ইউনূসের হাত ছিল।
বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল আখ্যা দিয়ে শেষ হাসিনা তাদেরকে জনগণের জান-মালের ক্ষতি না করে নির্বাচনমুখি হওয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, ২০১৪ সালে বিএপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা ছিলো চরম ভুল।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোটকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বলেন, তারা দেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর পাঁয়তারা করছে। তবে সরকার জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সব রকমের ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার সময়ে বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, খাদ্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নীতি বাংলাদেশ ভিক্ষা করে নয়, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াব, মর্যাদা নিয়ে বাঁচব।’
সুইডেনের স্টোকহোল্মর সিটি কনফারেন্স সেন্টারে আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবিরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, শামসুদ্দিন আহমেদ খেতু মিয়া, গোলাম আম্বিয়া ঝন্টু, আক্তার জামান, কামরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল হাসান, আব্দুল মুহিত টুটু, মিজানুর রহমান, জুবাইদুল হক সবুজ, সুমন হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সর্ব ইউরোপীয় আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ গনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামিম হক, নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ কিবরিয়া, সমাজকল্যাণ সম্পাদক হাসনাত মিয়া প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাটাইমস/১৬জুন/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন