দুবাইয়ে ফাঁসির মুখে থাকা স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রীর আকুতি

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট ২০১৭, ১৯:০১

বিনা বিচারে পাঁচ বছর যাবত দুবাই কারাগারে থাকা স্বামীর মুক্তি চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন হবিগঞ্জের এক গৃহবধূ।

সোমবার বিকালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি করেন চুনারুঘাট উপজেলার বড়গাঁও গ্রামের রুমা আক্তার নামের গৃহবধূ।

এ সময় তিনি বলেন, আট বছর আগে তার স্বামী ফয়সল মিয়া দুবাই যান। দেশে রেখে যান স্ত্রী রুমা আক্তার, মেয়ে খাদিজা আক্তার প্রিয়া ও তাজুল ইসলাম রাব্বী নামের এক পুত্রসন্তানকে।

পুত্রসন্তান যখন গর্ভে তখনই ফয়ছল বিদেশে পাড়ি জমান। এখন পর্যন্ত তার স্বামী ফয়ছল পুত্রসন্তানের মুখ দেখেননি। তার পুত্রও এখন পর্যন্ত জন্মদাতা পিতার মুখ দেখেনি। সেই সন্তানের বয়স এখন আট বছর।

বিদেশে যাওয়ার পর গত ২০১৩ সালে সেখানে একটি হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বাংলাদেশি নাগরিক শফিকুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার ধুলিয়াকান্দি সরিষাবাড়ি গ্রামে।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই প্রধান অভিযুক্ত বাচ্চু মিয়া দুবাই থেকে পালিয়ে আসে। তাঁর বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর বলে তিনি জানান।

হত্যাকাণ্ডের পর সন্দেহবশতভাবে স্বামী ফয়সল মিয়া ও নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার সাতাশি গ্রামের এরশাদ মিয়াকে ডেকে নিয়ে দুবাই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তাঁরা দুজনই গত পাঁচ বছর ধরে দুবাই কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তার স্বামী সংযুক্ত আরব আমিরাতে (দুবাই) একটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসির মুখোমুখি অবস্থায় দিন যাপন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, খুব সংক্ষিপ্তভাবে সেখানে বিচারের আয়োজন করা হয় এবং পর্যাপ্ত সাক্ষী প্রমাণ ব্যতিরেকেই হত্যাকাণ্ডের মামলায় ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, অপর গ্রেপ্তারকৃত নেত্রকোনার ইরশাদ মিয়া নিহত শফিকুল ইসলামের শ্যালক। তারা সবাই একই ম্যাসে থাকতেন। সেই সুবাধে এরশাদ ও নিহত শফিকুল ইসলামের সাথে তার স্বামীর পরিচয়।

সাংবাদিকদের মাধ্যমে রুমা বলেন, আমি জানি না নিহত শফিকুল ইসলামের সাথে শ্যালক এরশাদ মিয়ার কোনো পারিবারিক বিরোধ ছিল কি না। যদি থেকেও থাকে তাহলেও তো আমার স্বামীর সাথে বিরোধ থাকার কথা না। বিদেশের মাটিতে একটি হত্যাকাণ্ডের সাথে আমার স্বামী কোনোভাবেই সম্পৃক্ত থাকার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ থাকতে পারে না। তথাপি আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখন আমার স্বামী দুবাইয়ে ফাঁসির অপেক্ষমাণ হিসেবে নিদারুণ মানবেতরভাবে প্রতিটি মুহূর্ত অতিবাহিত করছেন।

গৃহবধূ বলেন, তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি মারা গিয়েছেন। স্বামীর অবর্তমানে দুই সন্তান নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

দুবাইয়ে একটি ফাঁসি কার্যকরের আগে ব্লাড মানি বা রক্তঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়। এক্ষেত্রে দুবাই সরকার বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিভিন্নভাবে নিহত শফিকুল ইসলামের পরিবারকে দুবাইর আদালতে গিয়ে ব্লাড মানি বা রক্তঋণ দাবি এবং নিহত শফিকুল ইসলাম যে তাদের পরিবারের সদস্য তা নিশ্চিত করার জন্য পত্র দিয়ে আসছে।

এসব পত্র বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে নিহত শফিকুল ইসলামের পরিবারকেও জানানো হচ্ছে। কিন্তু শফিকুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো রকম সাড়া দেয়া হচ্ছে না। তাতে রুমা আক্তার বারবার হতাশ হচ্ছেন। তাঁর আশংকা যেকোনো দিন বিনা বিচারে ফাঁসি দেয়া হতে পারে তার স্বামীকে। এ অবস্থায় তিনি তাঁর স্বামীর মুক্তির ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৭আগস্ট/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :