আর একতরফা নয় সবাইকে নিয়ে ড্যাপ বাস্তবায়ন: রাজউক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:০৮

রাজধানী ঢাকার বিষদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ-২০১০) ভুল-ত্রুটি ছিল বলে সেগুলো সংশোধন করে এবার সবার সহযোগিতায় ড্যাপ-১৭ বাস্তবায়ন করতে চায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেছেন, ঢাকা শহর সবার। ড্যাপ-২০১৭ যাতে সর্বজনীন হয় এবার সেভাবে কাজ করা হবে।

বুধবার রাজউক সম্মেলন কক্ষে সংশোধিত ড্যাপ-২০১৭ নিয়ে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে এক পরামর্শসভায় এ কথা বলেন রাজউক চেয়ারম্যান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেনারেল সাঈদ, বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন-বিএলডিএ সভাপতি শাহ আলম, বসুন্ধরা গ্রুপের ডিএমডি শামীম, রিহ্যাবের সহ-সভাপতি সোহেল রানা, রাজউকের প্রধান নগর পকিল্পনা সিরাজুল ইসলাম, ড্যাপ-২০১৭ এর প্রকল্প পরিচলাক আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ সভায় অংশ নেন।

ঢাকাকে একটি আধুনিক ও বাসযোগ্য নগর হিসেবে গড়ে তুলতে এর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) হাতে নেয়া হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু এটি নানা কারণে ব্যর্থ হয়। ব্যর্থতার কারণগুলো চিহ্নিত করে এবার নেয়া হয়েছে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)-২০১৭। এটি বাস্তবায়ন হবে ২০৩৫ সালের মধ্যে।

জনজগণকে ক্ষুব্ধ করে এমন কোনো কাজ রাজউক করবে না জানিয়ে আবদুর রহমান বলেন, ‘ড্যাপ একতরফাভাবে বাস্তবায়ন করা হবে না, আমরা এটা চাই না। এটা সর্বজনীনভাবে যাতে হয় সেটাই করব।’

ট্রাফিক ব্যবস্থাও ড্যাপের ভেতরে থাকবে উল্লেখ করে রাউজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এবারের ড্যাপ যাতে সুন্দর হয় সেই চেষ্টাই করা হবে। ঢাকা শহর আমাদের সবার, আমরা সবাই এখানে বসবাস করি। এই শহরকে বাসযোগ্য করতে একটা উদ্যোগ নিয়েছি, সবার সহযোগিতা চাই। সবাইকে নিয়ে সুন্দর একটা ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে চাই।’

রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, রাজধানীতে কিছু দিনের মধ্যেই এমআরটি চালু হচ্ছে, সেখানে ডেনসিটি কন্ট্রোলের ব্যবস্থা থাকবে এই ড্যাপে। ব্লক ডেভেলপমেন্ট করা হবে, ব্লক ওয়াইজ স্কুলগুলো স্ট্যান্ডার্ড লেভেলের হলে বাচ্চারা হেঁটেই স্কুলে যেতে পারবে।

ড্যাপে ঢাকার পুনরোন্নয়নের বিষয়ও থাকবে বলে জানান আব্দুর রহমান। তা না হলে রাজধানী শহরকে এগিয়ে নেয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তিনি পুরান ঢাকার পুনরোন্নয়ন (রি-ডেভেলপমেন্ট) প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন, যা বর্তমানে থেমে আছে। তিনি বলেন, ‘ওই প্রকল্প নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু বাধার কারণে উদ্যোগটি থেমে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘এই শহরকে রি-ডেভেলপমেন্ট না করলে ঢাকাকে এগিয়ে নিতে পারব না। খাল ও লেক আকর্ষণীয়ভাবে উন্নয়ন করার বিষয়টি এবারের ড্যাপে থাকবে। সবার কাছে যেন গ্রহণযোগ্য হয় সেভাবে এই ড্যাপ নেয়া হয়েছে।’

রাজধানীর জলাবদ্ধতার জন্য খালগুলো পুনরোন্নয়ন করা হবে জানিয়ে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। আর কোনো জলাশয় যেন ভরাট না হয় সেটা দেখা হবে। দখল হয়ে যাওয়া জলাশয়গুলো উদ্ধারের সম্ভাবনা এখনই না খুঁজি, তবে আর কোনোদিন উদ্ধার করা যাবে না। নদী, খাল, লেকের ভেতরে বাড়ি করলে সেগুলোর বৈধতা দেয়া হবে না।

আলোচনায় আরো অংশ নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেনারেল সাঈদ বলেন, রাজধানীর সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ড্যাপে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা নিতে হবে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার ট্রাফিক কী হবে সেটা নিয়ে এই ড্যাপে ভাবতে হবে। রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে জলবায়ুর পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করতে হবে।

বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, রাজধানীতে খাল যা আছে সবাই মিলে উদ্ধার করতে হবে, চেষ্টা করলেই উদ্ধার করা সম্ভব। গতবারের ড্যাপ অন্ধকারে রেখে সই হলো। এবার সংশোধিত ড্যাপে কোথায় কী আছে বাস্তবতার ভিত্তিতে সবকিছু করতে হবে। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির উপায় হলো ৫৮টি খাল উদ্ধার করা।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ডিএমডি শামীম বলেন, বাস্তবতার ভিত্তিতে জরিপ করতে হবে। খাল যা আছে চিহ্নিত করতে ওয়াটার নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করলে রাজধানীর জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। জরিপ সঠিকভাবে না হলে কোনো সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে না।

(ঢাকাটাইমস/১নভেম্বর/জিএম/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :