গণপরিবহন বন্ধে না.গঞ্জবাসীর দুর্ভোগ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:৩৩

গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দিনব্যাপী নারায়ণগঞ্জের মানুষকে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। শুধু নারায়ণগঞ্জের মানুষই নয়, যারা নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যেতে যানবাহন চেয়েছিলেন তারাও রাস্তায় বসে দিন পার করেছেন। পরে অবশ্য দুপুরের পর ধীরে ধীরে গণপরিবহন চলতে শুরু করে। রবিবার ভোর থেকেই নারায়ণগঞ্জে সকল প্রকার গণপরিবহনগুলো চলাচল করেনি। ট্রেন চলাচল করলেও তা স্বাভাবিক ছিল না। বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন, মূলত ঢাকায় বিএনপির জনসভায় নেতাকর্মীরা যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন সেই লক্ষ্যেই পূর্ব ঘোষণা ছাড়া পরিবহন ব্যবসায়ীরা যানবাহন বন্ধ করে দেন।

এদিকে ট্রাফিক পুলিশের দাবি, পরিবহন মালিকেরা গাড়ি না বের করলে তাদের কিছু বলার নেই। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার বাধা নিষেধ নেই। ওদিকে পরিবহন মালিকরা বলছেন ভিন্ন কথা।

রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় নারায়গঞ্জ শহরের বাস টার্মিনাল ও চাষাঢ়া বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, টার্মিনালগুলোতে ঢাকাগামী যাত্রীরা দাঁড়িয়ে আছেন। বাসগুলো রাস্তার দুপাশে থামিয়ে রাখা হয়। যাত্রীদের কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। টার্মিনালে বাস থাকলেও চালক ও হেলপার কাউকেই দেখা যায়নি। বন্ধ ছিল টিকেট কাউন্টারও।

সকাল ৯টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেন পৌনে ১২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ স্টেশনে আসেনি বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। ফলে ৩ ঘণ্টা ধরে স্টেশনে অপেক্ষা করে যাত্রীরা।

বন্দর থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশনে অপেক্ষারত যাত্রী মো. লিটন বলেন, ‘ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে যাবো এজন্য সকালে বাসা থেকে বের হয়ে নারায়ণগঞ্জ বাস টার্মিনালে আসি। কিন্তু সকাল ৯টায় বাস টার্মিনালে এসে জানতে পারি বাস বন্ধ। কোনো বাস ঢাকায় যাবে না। তখন একটি ট্রেন ঢাকা যাচ্ছে। এর পর থেকে রেল স্টেশনে তিন ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি। কোন গাড়ি আসছে না। স্টেশন থেকেও কিছু বলতে পারছে না।’

স্টেশনে কয়েক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করা নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক রহিমা শরিফ মায়া বলেন, ‘ঢাকায় সোহরাওয়াদী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার অঘোষিতভাবে যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার চায় বিএনপির সমাবেশে যাতে মানুষ না যেতে পারে। যার জন্যই এ ধরনের কর্মকা- করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’ একই অভিযোগ করেছেন মহানগর মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব ঢাকাটাইমসকে বলেন, সকাল থেকেই সমাবেশে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ঢাকামুখী হবে এমন ভয়েই সরকার আগেই গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। এ ধরনের কর্মকা- করে সমাবেশে মানুষ কমানো যাবে না। এতে কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি করা হলো।

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ চলাচলকারী সিটি বন্ধন পরিবহনের সভাপতি আয়ুব আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকেরা সকাল থেকে কাজে যোগদান না করায় গাড়ি বন্ধ রয়েছে। আমরা মালিকেরা কোন গাড়ি বন্ধ রাখিনি। গাড়ি বন্ধ রাখার কোনো ঘোষণাও ছিল না।’ নারায়ণগঞ্জ মিনি বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘সকালে কয়েকটি গাড়ি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পরে শনিরআখড়া এলাকায় গাড়ি গুলো আটকে দেয়। সেইসব গাড়ি এখনও ফিরেনি। যার ফলে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ‘পরিবহন মালিকেরা ইচ্ছা করে গাড়ি বন্ধ রাখলে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে কিছু গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে গাড়ি চলাচলে পুলিশের কোন বাধা নেই।’

নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চলাচল করছে। সকাল সাড়ে ১১টার ট্রেন ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ স্টেশনে এসেছে। যা বেলা সাড়ে ১২টায় আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। কোনো শিডিওল বিপর্যয় নেই। অন্যান্য দিনের চেয়ে রবিবার সকাল থেকেই যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি।’

(ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/প্রতিনিধি/ ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :