যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও ইয়েমেনে যুদ্ধ অব্যাহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০১৮, ২১:২৮ | প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর ২০১৮, ১১:১৯

যুদ্ধ বন্ধ রাখার সমঝোতা করার পরও ইয়েমেনের হুদাইদা শহরে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট এবং হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়েছে। ইয়েমেনের সরকার সমর্থিত বাহিনী ও হুথি বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক সংঘাতের পর সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের যুদ্ধ বিমান থেকে আবারো বোমা হামলা করা হয়েছে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে।

তিন বছর যাবত চলতে থাকা এই যুদ্ধ থামানোর উদ্দেশ্যে আবারো দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু করার চেষ্টা করছে জাতিসংঘ। এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে এবং লক্ষাধিক ইয়েমেনিকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

সম্প্রতি হুথি বিদ্রোহীদের সুপ্রিম রেভোলুশনারি কমিটির প্রধান মোহাম্মদ আলি আল-হুথি সম্প্রতি তার এক বিবৃতিতে বলেন যে, জাতিসংঘের অনুরোধে হুথি বিদ্রোহীরা জোটের সেনাদের বিরুদ্ধে ড্রোন এবং মিসাইল আক্রমণ সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, হুথি বিদ্রোহীরা আরো দীর্ঘ সময় হামলা বন্ধ রাখতে পারে যদি 'সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট শান্তি চায়।'

লোহিত সাগরের বন্দর নগর হুদাইদায় হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের নেতৃত্বে তৈরি সামরিক জোট। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হওয়া আলোচনার প্রচেষ্টাকে তারা সাধুবাদও জানায়। ইয়েমেনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্টিন গ্রিফিথস আশা প্রকাশ করেন যে এ বছরের শেষদিকে আবারো দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হবে। সেপ্টেম্বরে প্রথম দফা শান্তি আলোচনায় উপস্থিত থাকতে সক্ষম হয়নি হুথি বিদ্রোহীরা।

হুদাইদায় চলতে থাকা সাম্প্রতিক সংঘাতের কারণে চলমান এই সংঘর্ষ বন্ধের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইয়েমেনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ তাদের জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের আমাদানির জন্য হুদাইদা বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। জাতিসংঘ এর আগে সতর্ক করেছে যে, এই সংঘাতে আড়াই লাখ মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। পাশাপাশি লক্ষাধিক দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

২০১৪ সালে শিয়া মতাবলম্বী হুথি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের সেসময়কার নতুন প্রেসিডেন্ট আব্দরাব্বু মনসুর হাদির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে উত্তরাঞ্চলের প্রদেশ সাদা এবং আশেপাশের কয়েকটি এলাকার দখল নেয়। পরবর্তীতে বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা'র নিয়ন্ত্রন নেয় এবং প্রেসিডেন্ট হাদিকে দেশান্তরী হতে বাধ্য করে। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবসহ আটটি আরব দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সেনাবাহিনী জোট গঠন করে আক্রমণ শুরু করলে যুদ্ধের তীব্রতা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়।

ইয়েমেনের পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব-সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়। গত তিনবছরে ৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। দেশটির ৭৫ শতাংশ মানুষের জরুরী মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। অন্তত সোয়া কোটি মানুষের বেচে থাকার জন্য জরুরী খাদ্য সহায়তা দরকার। প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষের জানা নেই, তাদের পরবর্তী বেলার খাবার জুটবে কিনা। পাঁচ বছরের নীচের ৪ লাখ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে, যা তাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে।

দেশটিতে স্বাস্থ্য সেবা ভেঙ্গে পড়েছে, কলেরা আর ডিপথেরিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। পাঁচ বছরের নীচের ৪ লাখ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে, যা তাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে। সূত্র: বিবিসি

ঢাকা টাইমস/২০নভেম্বর/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :