অগ্নিনির্বাপণে অত্যাধুনিক যত প্রযুক্তি

আসাদুজ্জামান
 | প্রকাশিত : ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৩৩

আগুনের ভয়াবহতা থেকে জীবন বাঁচাতে উন্নত দেশগুলোতে আধুনিক নানা প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু প্রযুক্তি আছে যেগুলো বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এসে এখনো পৌঁছেনি। কোনোটা আবার প্রোটোটাইপ (এখানো বাণিজ্যিক ব্যবহার) পর্যায়ে রয়েছে। এসব নিয়েই এই প্রতিবেদন।

ড্রোন অগ্নিনির্বাপণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ড্রোন ব্যবহার করা হয়। যেসব জায়গায় দমকল বাহিনীর কর্মীরা পৌঁছাতে পারে না সেসব জায়গায় ড্রোন অনায়াসে পৌঁছে যায়। অগ্নি সংগঠনের স্থানে ড্রোন উড়ে গিয়ে কার্বন-ডাই অক্সাইড ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এসব ড্রোন দূর নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এছাড়াও ড্রোনের মাধ্যমে আগুনের ব্যাপকতা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়।

অগ্নিনির্বাপক বল উন্নত বিশ্বে অগ্নিনির্বাপক বল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ক্রিকেট বলের চেয়ে কিছুটা বড় আকারের এই বল। আগুনের যেখানে সূত্রপাত সেখানে বলটি ছুড়ে মারলে এটি বিস্ফোরিত হয়। এর মধ্যে থাকা কার্বন-ডাই অক্সাইড মুহূর্তেই আগুন নিভিয়ে দেয়। বলটির মধ্যে পানি ও রাসায়নিক পদার্থও থাকে। এটি ওজনে হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য।

আগুন বলটি নিক্ষেপ করা হলে সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হলেও হাত থেকে বলটি পড়ে গেলে এটি বিস্ফোরিত হবে না। বলটি তখনই সক্রিয় হবে যখন আগুনে সংস্পর্শে আসবে। এটি বিস্ফোরিত হলে ১২০ ডেসিবেল শব্দ উৎপন্ন করে, যা মানুষের সহ্যের মধ্যে রয়েছে।

সাউন্ড ওয়েভ এটি একটি রাসায়নিক মুক্ত, পানিমুক্ত ফায়ার অ্যাক্সটিংগুইসার। এটি শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে আগুনের শিখা থেকে অক্সিজেনকে আলাদা করতে সক্ষম। ফলে আগুন তাৎক্ষণিকভাবে নিভে যায়।

আগুন ধরতে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। অক্সিজেন ছাড়া দহন প্রক্রিয়া শেষ হয় না। সাউন্ড ওয়েভ ফায়ার অ্যাক্সটিংগুইসারের এখানেই সফলতা। বিশেষ করে আগুনের ব্যাপকতা যেখানে কম যেখানে এই প্রযুক্তি কার্যকর।

এই ডিভাইস তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার জর্জ ম্যাসন ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থী। খরচ হয়েছে ৬০০ ডলার। তবে বাজারে বাণিজ্যিকভাবে এটি এখানো পাওয়া যাচ্ছে না।

ভিডিও ইমেজ স্মোক ডিটেক্টর বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালতে সাধারণত স্মোক ডিটেক্টর ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আগুন থেকে ধোঁয়া উৎপন্ন হলে সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হয় স্মোক ডিটেক্টর। পানি ছিটিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে আগুন। এই পদ্ধতি থেকে কিছুটা ভিন্নভাবে কাজ করে ভিডিও ইমেজ স্মোক ডিটেক্টর। আগুন থেকে ধোঁয়া উৎপন্ন হলে ভিডিও ইমেজ স্মোক ডিটেক্টর পিন পয়েন্ট শনাক্ত করতে পারে। এই প্রযুক্তিতে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সেন্সর, ক্যামেরা কাজ করে। কোথাও আগুনের সূত্রপাত হলে ক্যামেরা ও সেন্সর সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ম বাজিয়ে দেয়। তৎক্ষণাৎ সেই অ্যালার্ম পৌঁছে যায় দমকল বাহিনীর কাছে। বাহিনী তখন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্মোক ডাইভিং হেলমেট এই হেলমেট উদ্ভাবন হয় সুইডেনে। এটি একটি অত্যাধুনিক স্মোক ডাইভিং হেলমেট। এতে নানা ডিভাইস যুক্ত করা হয়েছে। এটি দেখতে অনেকটা ফাইটার পাইলট হেলমেটের মতোই। কিন্তু আদতে ভিন্ন। এতে একটি ডিসপ্লে রয়েছে, আছে একটি লেন্সও যেটাতে ইনফ্রারেড ক্যামেরা রয়েছে। এর ডিসপ্লেতে আগুনের তাপমাত্রা, অক্সিজেনের পরিমাণ এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা জানা যাবে। ফলে আগুন লাগার সময় ধোঁয়া সৃষ্টি হলেও একজন দমকলকর্মী উদ্ধারকাজ সূচারুভাবে করতে পারবেন।

জাইরোস্কোপ গাড়ি এটি একটি ভবিষ্যতের প্রযুক্তি। সাধারণ গাড়ির মতোই এটি দেখতে মনে হলেও আদতে এটি ভিন্ন। এই গাড়ির বড় সুফল হলো, যানজটের সময় এটি অন্য গাড়িগুলো টপকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। আগুন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গাড়িটি পৌঁছে দিয়ে এটি আনফোল্ড হয়ে যায়। তখন এর মধ্যে থেকে বের হয়ে আসে ড্রোন, যেটি অনেক উচ্চতায় উঠে গিয়ে ফায়ার বল ছুড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

এটি অনেকটা স্পেসশিপের মতোই। বর্তমানে জাইরোস্কোপ গাড়ির অরেকটা সুবিধা হলো এটি যেকোনো সময়, যেকোনো পরিস্থিতিতে ইচ্ছামাফিক ঘুরতে সক্ষম।

(ঢাকাটাইমস/৯এপ্রিল/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :