ওয়াসা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনে শতভাগ ‘কনফিডেন্স’ টিআইবির
রাজধানীর পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াসার পানি ও নানা দুর্নীতির বিষয়ে শতভাগ ‘কনফিডেন্স’ রয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)। সংস্থাটির প্রতিবেদন খারিজ করে দিয়ে ওয়াসার এমডির বক্তব্যকে হাস্যকর বলেও মনে করছে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
গতকাল সোমবার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘ওয়াসার এমডি যে অবস্থান নিয়েছেন সেটা নিতেই পারেন। কিন্তু আমরা বলছি, আমাদের গবেষণার বিষয়ে আমরা শতভাগ কনফিডেন্ট, আস্থা রয়েছে আমাদের।’
গত বুধবার ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে টিআইবি। এতে ওয়াসার নানা দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফোটাতে বছরে ৩৩২ কোটি টাকা মূল্যের গ্যাস অপচয় হয় বলে জানায় টিআইবি।
গত শনিবার এক সংসবাদ সম্মেলনে ওয়াসাকে দুর্নীতিমুক্ত দাবি করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান তাদের পানি শতভাগ সুপেয় বলেও দাবি করেন। টিআইবি যে পদ্ধতিতে গবেষণা করেছে সেটি একপেশে ও উদ্দেশ্যমূলক সেটা পেশাদারি গবেষণা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
ওয়াসার এমডির এমন বক্তব্যকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সুশাসনের ঘাটতি চিহ্নিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন ওয়াসার এমডি।’
‘আমরা অবাক হয়েছি যে ওয়াসার এমডি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মতো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তার প্রতিক্রিয়া পেশাদারিত্বসুলভ হয়নি। তিনি আমাদের পেশাদারিত্বে ঘাটতির কথা বলেছেন, তার প্রতিক্রিয়াটাই পেশাদারি নয়।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পুরো গবেষণা প্রক্রিয়ায় আমরা তাদের সম্পৃক্ত করেছি। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি। তাদের সঙ্গে আমাদের একাধিকবার বৈঠক হয়। তাদের পরামর্শ ও তথ্য আমরা নিয়েছি। তাই এটা নিয়ে এখন যদি এভাবে প্রশ্ন তোলেন তবে বলতেই হয়- ওয়াসার সুশাসনের ঘাটতির জায়গাগুলো চিহ্নিত হওয়ার কারণে তিনি (এমডি) ক্ষুব্ধ।’
টিআইবি নির্বাহী জানান, তাদের গবেষণা সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত। সামাজিক বিজ্ঞানে গবেষণার যে সর্বোচ্চ স্বীকৃত পদ্ধতি সেটা অনুসরণ করেই গবেষণাটা করা হয়েছে। গবেষণার শুরুতে এই নিয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আরও দুজন পরিচালকের সঙ্গে টিআইবি গবেষণা টিমের বিস্তারিত আলোচনা হয়। অথচ সেসময় কিন্তু ওয়াসার কোনো আপত্তি ছিল না।
তিনি বলেন, ‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয় বলেছেন এমডি, এটা তো হাস্যকর বিষয়। তিনি নিজেও যে পানিটা সরাসরি পান করতে পারেন না, সেটাকে কীভাবে শতভাগ সুপেয় বললেন? এটা তো একটা প্রশ্নবিদ্ধ স্টেটমেন্ট।’
‘তিনি যে অবস্থান নিয়েছেন সেটা নিতেই পারেন। কিন্তু আমরা বলছি, আমাদের গবেষণার বিষয়ে আমরা শতভাগ কনফিডেন্ট, আস্থা রয়েছে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘রিপোর্টটি তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে শুনেছি। আমরা এই প্রতিবেদন নিয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। যে সুপারিশগুলো করেছি, সেগুলো বাস্তবায়নে ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেদনটি আমরা তাদের (ওয়াসা) কাছে পাঠিয়েছি। এর সঙ্গে তাদের কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছি, সেখানে এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করার কথা বলেছি। সুপারিশ বাস্তবায়নে সহযোগিতার কথা বলেছি। এটা তো প্রথম পর্যায়ে গেছে। এরপরও একসঙ্গে কাজ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।’
ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/বিইউ/ডিএম