এক সায়েমে অতিষ্ঠ এসএম হলের দোকানিরা

মনিরুল ইসলাম, ঢাবি প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৩৫| আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৫৮
অ- অ+

বাকি খেয়ে টাকা দেন না। টাকা চাইলে হুমকি ধামকি, মারধর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের দোকান মালিকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এ কারণে। তাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের এক নেতার কারণে তাদের ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক কর্মচারী কাজ ছেড়ে চলে গেছেন।

অভিযোগ সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট। কিন্তু হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এসব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

শুক্রবার সকালে গালাগালির প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগ নেতার মারধরের শিকার হন এক দোকানি। তাকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে দোকান বন্ধ করে ক্যাম্পাস ছাড়তেও হুমকি দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম আবু সায়েম মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। তিনি এডওয়ার্ড সায়েম নামেও পরিচিত। তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে দোকানে খেতে যান সায়েম। এ সময় দোকান মালিক আজগর তার কাছ থেকে বকেয়া টাকা চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন সায়েম। আজগর গালাগাল করতে নিষেধ করলে তাকে মারধর শুরু করেন সায়েম।

পাঁচ মিনিটের মধ্যে দোকান বন্ধ করে চলে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় আজগরকে। তিনি দোকান বন্ধ না করায় সায়েম নিজেই দোকান বন্ধ করতে থাকেন। এ সময় আজগর প্রতিবাদ করলে তাকে আবার মারধর করা হয়।

একজন দোকানি জানান, এমন কাণ্ড এর আগেও ঘটিয়েছেন সায়েম। তার দুর্ব্যবহার হার গায়ে হাত তোলার কারণে কর্মচারীরা বেশিদিন দোকানে কাজ করতে চায় না।

ছাত্রলীগের এই নেতার বিরুদ্ধে এর আগে পলাশীতে মারধর, শহীদ মিনারে সাংবাদিকের মোবাইল ভাঙচুর, ফুলার রোডে বাইক আটকে চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসএম হলের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, সায়েম সব জায়গায় বাকির নামে ‘ফ্রি’ খান এবং চাঁদাবাজি করেন, এটি সবাই জানে। নিজের পাশাপাশি তার অনুসারীদেরকেও ফ্রি খাওয়ান।

দোকান মালিক আজগর ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সায়েম ভাই প্রতিদিনেই কোন কারণ ছাড়া গালাগালি করেন। তার জন্য আমার দোকানের কর্মচারীরা থাকে না।’

“আজকে সকালে তিনি (সায়েম) আমার দোকানে এসে গালাগালি শুরু করলে আমি ভাইকে বলি ভাই গালাগাল কইরেন না। গালির জন্য আমার লোক থাকে না। তখন সায়েম ভাই আমাকে খারাপ গালি দিয়ে বলেন, ‘তুই থাকবি, কেউ না থাকলেও তুই থাকবি’।”

“পরে, আমি বলি, এভাবে গালাগালি করলে তো দোকান চালাতে পারব না ভাই। তখন সে আমাকে বলে ‘তোর দোকান চালাতে হবে না। তুই চলে যা’। তখন আমি বলেছি, আমি যদি চলে যাই তাহলে সবাইকে বলেই যাব। না বলে তো যাব না। তখন তিনি বলেন, ‘তুই পাঁচ মিনিটের মধ্যে দোকান বন্ধ করবি’।”

“কিন্তু তখন আমি কাজ করছিলাম। আমি দোকান বন্ধ না করায় পাঁচ মিনিট পরে আমাকে ভেতরে রেখে দোকান বন্ধ করতে শুরু করে। আমি বললাম, ‘ভাই কী করছেন?’। এটা বলতেই সে আমাকে মারধর শুরু করল।”

বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সায়েমকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এসএম হলের ভিপি (সহ- সভাপতি) কামাল বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি । আমি আজগর ভাইয়ের দোকান খোলা রাখার ব্যবস্থা করছি। সায়েম ভাইয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে একটা ব্যবস্থা নেব।’

মন্তব্য জানতে হলের প্রভোস্ট মাহবুবুল আলম জোয়ার্দারকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকাটাইমস/০৬সেপ্টেম্বর/এমআই/ডব্লিউবি

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
র‍্যাব সদর দপ্তরে আইনবিষয়ক সেমিনার ও এআই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে 'জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ' উদ্বোধন
দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে পিকআপের ধাক্কায় ব্যবসায়ী নিহত
অটোচালককে হত্যা: মির্জাপুরে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা