আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি, শঙ্কিত এলাকাবাসী

উপজেলার বুক চিরে যুগ যুগ ধরে প্রবাহমান আত্রাই নদী আপন মহিমায় বয়ে চলেছে তার গতিধারা। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হলে এলাকাবাসীকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ‘নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে’ যাচ্ছে যুগের পর যুগ। তাদের উদাসিনতায় দীর্ঘ সময় পার হলেও খনন না করায় নদী ভরাট হয়ে প্রতি বছর বাঁধ ভেঙে মানুষের বাড়ি-ঘর জান-মাল মাটির সঙ্গে মিশে দেয় বলে এলাকার লোকজন অভিযোগ করেন।

কৃষি ও কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত মোতাবেক পানি উন্নয়ন বোর্ড সত্তরের দশকে মান্দা থেকে সিংড়া পর্যন্ত নদীর দুই ধারে বাঁধ তৈরি করে। এ সময় বাগমাড়া, মান্দা, রাণীনগর, নন্দীগ্রাম, সিংড়া ও নাটোর সদর উপজেলার নদীর মোহনায় পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে আত্রাই নদীর উপর সাহেবগঞ্জ, আহসানগঞ্জ, কলেজপাড়া, শুটকিগাছা, ভবানিপুর-মির্জাপুর এবং গোড় নদীর উপর কাশিয়াবাড়ী, ইসলামগাঁথী এবং সমসপাড়া নামক স্থানে স্লুইচগেট নির্মাণ করে প্রবাহমান নদীর পানি চলাচল সচল রাখে।

শুরুতে স্লুইচগেটের চাবি সময়মত সরবরাহ করে পাল্লাগুলো ফাঁকা করে দেয়া হলেও বর্তমানে অসাধু প্রভাবশালী মহলের কারণে সেগুলোর কার্যকারিতা আর নাই। প্রতি বছর অল্প বন্যা হলেই নদীর বাঁধ ভেঙে মাঠের ফসলসহ বাড়ি-ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নিয়ে এলাকার কৃষকরা থাকেন উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায়।

বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসলেও কার্যত এর বাস্তব কোনো সমাধান আজও মিলেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত বছর কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নের কথা চিন্তা করে নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সাংসদ ইসরাফিল আলম নদীর খনন কাজ শুরু করেন। কিন্তু মাত্র তিন-চার কিলোমিটার খনন করতেই অদৃশ্য কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে বাঁকা গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, নদীতে গেট করার আগে মাঠে ধীরে ধীরে পানি আসতো ধানও ধীরে ধীরে বেড়ে উঠতো। গেট করার ফলে একদিকে রক্তদহ বিলের পানি এসে মাঠ ভরে যায়। সেইসঙ্গে গেটগুলো সময়মত না খুলে দিয়ে ইচ্ছেমত খোলার কারণে মাঠের ধান ডুবে যায়। পানির প্রয়োজনে গেট খুলতে বললে বলে চাবি নাই আবার চাবি থাকলে সেটা কাজ করছেনা।

এ বিষয়ে নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সাংসদ ইসরাফিল আলমের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

এলাকাবাসী কৃষি ও কৃষকের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে বাঁধ ভাঙন রোধে দ্রুত আত্রাই নদীর খনন কাজ সমাপ্ত এবং স্লুইচগেটগুলো সংস্কার করণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

(ঢাকাটাইমস/৭জুন/কেএম)