ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে মুক্তি নেই: ডা. জাফরুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২০, ১৬:১৮ | প্রকাশিত : ০৯ আগস্ট ২০২০, ১৬:০৯

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ভারত প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশিদের মারলেও আমাদের কোনো আওয়াজ নেই। অথচ নেপাল এ বিষয়ে সংসদে আইন করে ভারতে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাই ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে বাংলাদেশের মুক্তি নেই।

রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত ‘খরাকালে পোড়াও, বর্ষাকালে ভাসাও’ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারতের এই নীতি প্রয়োগের প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিদিন ভারত সীমান্তে লোক মারছে, আমাদের কোনো আওয়াজ নেই। অথচ নেপাল এ বিষয়ে সংসদে আইন করে ভারতে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের কোনো কোনা মন্ত্রী বলছেন ভারতে সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। কিন্তু এ রক্ততো দুষিত রক্ত। দুষিত রক্ত দিয়ে কি হবে? পরিচ্ছন্ন রক্ত দরকার।’

ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে বাংলাদেশের মুক্তি নেই এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘দুষিত রক্ত থেকে আমাদের মুক্তি দরকার।’

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকান্ডের বিষয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এটা কি ওসি প্রদীপের ঘটনা, নাকি এর সাথে ভারতীরা যুক্ত আছে। এটাকে পরিস্কারভাবে পরীক্ষা করা দরকার। এ জন্য পুলিশি তদন্ত দিয়ে হবে না। একটা স্বাধীন কমিশন গঠন করতে হবে। ১০ ভাগ পুলিশ আছে যারা প্রদীপের মতো, বাকিরা সজ্জন। এ ঘটনায় যদি কমিশন গঠন না হয় সেটা হবে দুর্ভাগ্যজনক।’

তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখে আছি। সম্প্রতি ঈদ গেলো। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তীদেশে ২৫ কোটি মানুষ তাদের নিজের ধর্ম পালন করতে পারেনি। তারা গরুর মাংস খেতে পারলো না। অথচ হিন্দুরা চীরকাল নরেন্দ্র মোদীর পুর্বপুরুষরা গরুর মাংস খেতো। চোখ অন্ধ ভারত ২৫ কোটি মুসলমানকে ধর্ম পালন করতে দিচ্ছে না।’

জাফরুল্লাহ আরো বলেন, ‘একটা কাল্পনিক কাহিনিকে ভিত্তি করে তারা রাম মন্দীর প্রতিষ্ঠা করেছে। মহাভারত, রামায়ন দুটার মধ্যেই প্ররোচনা ও মিথ্যাচারের গল্পকাহিনী রয়েছে। তাদের গল্পকাহিনীর উপর ভিত্তি করেই ৫০০ বছরের পুরোনা বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে দিয়ে সেখানে আজগব্বী রাম মুন্দীর নির্মাণ করেছে ভারত। এটা জাতির একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা বাংলাদেশ এটা বিরুদ্ধে একটা কথাও বলিনি।’

তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় ছিলো মন্দির যেমন হবে তার চেয়েও বড় করে অযদ্ধা মসজিদ করতে হবে। মন্দির তৈরি হলেও মসজিদ তৈরির কোনো কিছুই নেই, এটাই হচ্ছে ভারত।’

প্রবীণ এ চিকিৎসক বলেন, ‘১৯৭১ সালে রমনার কালি মন্দীর পাকিস্তানিরা ভেঙ্গে দিয়েছিলো। শেখ সাহেব (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) এটাকে ঢাকার বাইরে নিয়ে বড় আকারে এ মন্দীর তৈরি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সংখ্যা লগুদের আপত্তিতে তা সরানো হয়নি। এটা ঢাকার নওয়াবদের দান করা জায়গা। মুসলমানদের এ সহনশীলতা থেকে ভারতে কিছুটা হলেও শিখা উচিত। কিন্তু তারা শিখবে না, তাদের শেখাতে হবে। শেখাতে হলে আজকে আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য আজকে আমরাদের সব রাজনৈতিক দলেরা শুধু সমাবেত হওয়ার কথা বলে কিন্তু প্রতিবাদে আমাদের উচিত ছিলো যে দিন রাম মন্দীর প্রতিষ্ঠা হলো সেদিন ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও করা। ফেলানি রাস্তা করার কথা ছিলো, সেটাও আমরা করিনি। এইসব হচ্ছে আমাদের ব্যর্থতা।’

পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, সাপ্তাহিক জয়যাত্রার নির্বাহী সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, বিপ্লবি ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, বাসদ নেতা বজলুর রশিদ, মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/বিইউ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :