চাঁদপুরে সরকারি সম্পত্তি আবারো দখলের পাঁয়তারা

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২২:৩৯ | প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:৩৭

চাঁদপুরে ১৯৪৮ সাল থেকে সরকারের নামে তালিকাভুক্ত ১ নম্বর খতিয়ানের সাড়ে ছয় শতাংশ সম্পত্তি, যার বর্তমান মূল্য প্রায় ছয় কোটি টাকা। এই সম্পত্তি রাতের আঁধারে জোর পূর্বক দখল করেন চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানা। পরর্তীতে খবর পেয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার রাতেই এই সম্পত্তি জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দখলমুক্ত করে জেলা প্রশাসন।

বর্তমানে আবারও এই সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা চলছে বলে জেলা আওয়ামী লীগের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন রোডস্থ রামকৃষ্ণ আশ্রম মন্দির সংলগ্ন গিরিধাম নামক সরকারি এনিমি ভবন রাতের আঁধারে তালা ভেঙে জোরপূর্বক দখল করা হয়।

মঙ্গলবার রাত প্রায় ১১টায় আকস্মিকভাবে সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানার নেতৃত্বে তার ভাই ও কিছু দখলবাজ লোক এসে দখল করে নেয়। তারা ভবনের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে মালামাল সরিয়ে নিয়ে ইট বালু সিমেন্টের মাধ্যমে কাজ করা শুরু করে রাতের আঁধারে।

সরকারি ভবন দখল করার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক আব্দুল্লাহ আল মাহামুদ জামান, এডিসি রাজস্ব অসীম চন্দ্র বণিকসহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দখলবাজদের দখল নসাৎ করে দেয়। বর্তমানে এই সম্পত্তি আবারও দখল করার জন্য পাঁয়তারা চলছে বলে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বাংলা ১৩৪৩ সালে গিরিধাম ভবনটি হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি স্থাপন করে বসবাস করতে থাকেন। পরবর্তীতে এ ভবনটি ১৯৪৮ সালে সরকারের মালিকানায় চলে যায়। অবশেষে গিরিধাম ভবনের সাড়ে ছয় শতাংশ জায়গা এনিমি সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হয়।

১৯৮৮ সাল থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক সিএ মো. ওয়াজিউল্ল্যাহ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন্দোবস্ত নিয়ে ৩২ বছর যাবৎ সপরিবারে বসবাস করতে থাকেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, সরকারি এনিমি সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই দখল করতে দেয়া হবে না। যারা সরকারি ভবন নিজেদের বলে দাবি করে দখল করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে এডিসি রাজস্ব অসীম চন্দ্র বণিক বলেন, আইন বহির্ভুতভাবে দখলদাররা সরকারি ছয় কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করতে চায়। আমরা তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে জায়গাটি দখলমুক্ত করেছি। তারা যদি সম্পত্তির মালিকানায় থাকেন তাহলে উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে এলে সরকারই তা বুঝিয়ে দিবে। তারা জোর পূর্বক যেভাবে দখল করার চেষ্টা করেছেন তা বেআইনি।

এডিসি বলেন, আমদের হিসাব অনুযায়ী ১৯৪৮ সালে সরকারের রেকর্ড অনুযায়ী এ সম্পত্তি সরকারের। তাই আমাদের আয়ত্বে নিয়ে নিয়েছি। কেউ ভুয়া দলিল উপস্থাপন করলে আমরা সেটি খতিয়ে দেখে সমাধানের জন্য উচ্চ আদালত পর্যন্ত চেষ্টা চালাবো।

এ বিষয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানার ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এ সম্পত্তি আমার বাবার। ৩০ বছর আগে সরকার রিকুইজিশন করে নিয়েছে। আর ফেরত দেয়নি। আমরা আদালতে মামলা করে রায় মোতাবেক দখল করার চেষ্টা করেছি। দলিল ছাড়া কেউ কি সম্পত্তি দখল করতে পারে? আমরা উচ্চ আদালত পর্যন্ত লড়ে সম্পত্তি বুঝে নিব।

(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :