নারিকেল তেল কি আসলেই চুলের খাবার!

সুস্থ চুল নিয়মিত যত্নের ফসল। চুলের যত্ন না নিলে চুল অচিরেই ফাটে এবং ভেঙে যায়। চুলে অযাচিত রঙ, বেশি পরিমানে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহারে চুলের ক্ষতি হয়।
চুলের যত্নের প্রাথমিক উপাদান হল তেল। চুলের যত্নে খাঁটি নারিকেল তেল ব্যবহার সেই আদিকাল থেকেই হয়ে আসছে। চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নারিকেল তেলের জুড়ি নেই। শক্ত এবং চকচকে থাকার জন্য শ্রেষ্ঠ উপায় হলো চুলে নারিকেল তেল দিয়ে মালিশ করা।
মনে রাখতে হবে, যে কোন তেল মাখলে চলবে না। এমন তেল মাখতে হবে, যার মধ্যে চুলের গভীরে যাওয়ার মতো এবং গোড়া পর্যন্ত পৌঁছাতে পারার মতো উপাদান আছে। তবেই শ্যাম্পুতে যে সব রাসায়নিক থাকে, তা থেকে চুলের গোড়াটা বাঁচানো যাবে। আর এর জন্য শ্যাম্পু করার আগে নারিকেল তেল দিয়ে মালিশ করতেই হবে!
নারিকেল তেল হল অল্প কয়েকটা বহুমুখী চুলের তেলের মধ্যে একটা, যা চুলের গভীরে পৌঁছাতে পারে। কারণ নারিকেল তেলে আছে লরিক এসিড নামের এক ধরনের ফ্যাটি এসিড, যার দরুণ অন্য যেকোন তেলের চেয়ে এই তেলকে চুল সবচেয়ে দ্রুত শুষে নেয়। এতে চুলও হয়ে ওঠে মসৃণ ও মজবুত।
নারিকেল তেল শুধু যে চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে তা-ই নয়, অত্যাবশ্যকীয় প্রোটিনও ধরে রাখে। ফলে ধোয়ার সময় প্রোটিন ক্ষয় হয় না, চুল শক্ত ও স্বাস্থ্যকর থাকে। শ্যাম্পু করার আগে নারিকেল তেলের সঙ্গে আমলকি, পিঁয়াজ, তিল, কালো জিরার মত উপাদান মিশিয়ে চুলে মালিশ করা ভাল। চুলের বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য বাড়ানোর এ এক সহজ অথচ সুচারু পদ্ধতি।
আপনার চুলের কতটা যত্ন প্রাপ্য তার উপর নির্ভর করে আপনি আগের রাতেই নারিকেল তেল মালিশ করে রাখবেন, নাকি ঠিক চুল ধোয়ার আগে মালিশ করবেন। শ্যাম্পু করা এড়ানোর কোন উপায় নেই, তাই তার আগে চুলে লাগানোর মত একটা নারিকেল তেলের মাস্ক বানানোর পদ্ধতি নিচে দেওয়া হল। খুব সহজে আপনি নিজেই এই মাস্ক বানিয়ে ফেলতে পারবেন। এই মাস্ক আমাদের চুলের অতি প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা আর চমক রক্ষা করবে।
আধ কাপ অলিভ তেল আর এক কাপ নারকেল তেল একটা পাত্রে ঢেলে ঝাঁকিয়ে নিন। আপনার চুলের গোছাগুলোতে এবং তালুতে মালিশ করুন এবং ৩০-৪৫ মিনিট রেখে দিন (প্রয়োজনে সারা রাতও লাগিয়ে রাখতে পারেন)। চাইলে একটা সামান্য গরম তোয়ালে ৩০-৪৫ মিনিট মাথায় বেঁধে রাখতে পারেন। চুল ধুয়ে নিন, তারপর শ্যাম্পু করুন।
চুলের যত্নে নারিকেল তেলের এই মাস্ক খুবই কার্যকর। সপ্তাহে দুই বা তিনবার নারিকেল তেলের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। কারণ নারিকেল তেলে রয়েছে ভিটামিন ই , কে এবং আয়রন । এই উপাদানগুলো খুব সহজে স্কাল্পের মাধ্যমে চুলে গিয়ে পৌছায় । স্কাল্পে নারিকেল তেল ম্যাসাজের ফলে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায় এবং চুল নারকেল তেলে বিদ্যমান সব ভিটামিন সহজেই অ্যাবজর্ব করতে পারে। আর এই ভিটামিনগুলো প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগানোর সাথে সাথে স্কাল্পের ময়েশ্চার ধরে রাখে এবং খুশকির উপস্থিতি কমে । আর এভাবেই মূলত নারকেল তেল চুলের গভিরে প্রবেশ করে হেয়ার ডিপ কন্ডিশনিং করে থাকে।
(ঢাকাটাইমস/১২অক্টোবর/আরজেড/এজেড)

মন্তব্য করুন