যেসব খাবার খেলে রক্তের সুগার কমে

ডায়াবেটিস হলে রক্তে গ্লুকোজ বা রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি হয়। ব্লাড সুগার বা গ্লুকোজ হল রক্তের প্রধান চিনি। আমরা যে খাবারটি খাই তার থেকে গ্লুকোজ পেয়ে থাকি। এই চিনি শক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ উত্স এবং শরীরের অঙ্গ, পেশী এবং স্নায়ুতন্ত্রের পুষ্টি সরবরাহ করে।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাবারের তালিকার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা। এবং খাবারের পাশাপাশি কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে আপনি সুগার নিয়ন্ত্রণ করে সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারবেন।
মানুষের শরীরে ব্লাড সুগারের লেভেল বিভিন্ন কারণে বেড়ে যায়। ঔষধ বা ইনসুলিনের ডোজ সঠিক না থাকলে। ক্রমাগত কাজ করলে। ডায়েট এবং ব্যায়াম না করার জন্য। শরীরে ইনফেকশন থাকলে সুগারের লেভেল বৃদ্ধি পায়।
ব্লাড সুগার কমানোর জন্য হাঁটার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য নিয়মিত ২৫-৩০ মিনিট হাঁটলে সুগার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের ওজন হ্রাস হয়। তাছাড়া নিয়মিত হাঁটলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে এবং আপনার পেশী রক্ত থেকে শর্করা নিতে সাহায্য করে। এবং ব্লাড সুগারের মাত্রা হ্রাস করতে পারে।
মিষ্টিযুক্ত খাবার ত্যাগ করুন। মিষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়া সুগারের রোগীদের একদমই উচিত নয়। বিশেষত চিনি। চিনি ব্লাড সুগারের লেভেল হাই করে দেয়। চিনি ছাড়া চা পান করুন। এছাড়া আইসক্রিম, ফাস্ট ফুড খাবেন না। কারন এই খাবার শরীরে ইনসুলিনের মাত্রায় ক্ষতি করতে পারে। প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রচুর পরিমাণে পানি খান। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে আপনার ব্লাড সুগার সুস্থ সীমায় থাকতে সহায়তা করবে। সুগারের রোগীদের শরীর হাইড্রেট রাখা প্রয়োজন। আর তা সম্ভব পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পানের মাধ্যমে। নিয়মিত পানি পান করলে রক্ত পুনরায় হাইড্রয়েট হয়, রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে ।
টেনশন করা ছাড়ুন। অতিরিক্ত চিন্তা করলে ব্লাড সুগারের উপর প্রভাব পড়ে। ডাক্তারদের মতে হাই সুগারের অন্যতম কারণ অতিরিক্ত টেনশন। অতিরিক্ত টেনশন করলে শরীরে চাপ পড়ে এবং হরমোনগুলি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। তাই রিল্যাক্স থাকার চেষ্টা করুন। এতে শরীরে কর্টিসোল হরমোনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং ব্লাড সুগারের ঝুঁকি কমবে ।
খাদ্য তালিকা সঠিক রাখুন। সুগারের আক্রান্ত রোগীদের অতিরিক্ত ভাত খাওয়া ভালো নয়। অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতের পরিবর্তে পেট ভর্তি রাখতে বেশি করে সবজি খান। এছাড়াও খাবারের তালিকায় ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। বার্লি, ভুট্টা, ওটমিল, ব্রাউন রাইস, বাজরা ইত্যাদি শস্য জাতীয় খাদ্য সুগারের রোগীদের খাবারের তালিকায় রাখা উচিত। শস্য জাতীয় খবারে আঁশ থাকে যা সুগারের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া দারুচিনি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসে।
চায়ের পরিবর্তে গ্রিন টি খেতে পারেন। গ্রিন টি উচ্চ পরিমাণে পলিফেনল পাওয়া যায়। যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে একটি ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিতে পারেন। তবে একবারে অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে বার বার অল্প পরিমাণে খাবেন। নিয়মিত ক্রোমিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার দেহের ঘাটতি প্রতিরোধ করে এবং ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে।
ব্লাড সুগার কমানোর জন্য মেথির বীজ খাবেন। মেথির বীজ ফাইবারের একটি বড় উৎস, যা রক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করতে পারে। অনেক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে মেথির বীজ সুগারের রক্তচাপ কমিয়ে আনতে সক্ষম।
নিজের সুগার নিয়ন্ত্রণে শরীর সুস্থ রাখতে হলে সঠিক ঘুম এবং বিশ্রামের বিশেষ প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম দেহের ক্লান্তি এবং চাপ দূর করতে সক্ষম। অতিরিক্ত চাপের কারণে সুগার হাই হয়ে যায়।
(ঢাকাটাইমস/২৭ ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)

মন্তব্য করুন