বাউফলে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ের অভিযোগ

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ২১:২৪

পটুয়াখালীর বাউফলে মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে অতিরিক্ত ভর্তি ফিস আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে নতুন শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। বিশেষ করে করোনাকালীন আয় রোজগার কমে যাওয়া অভিভাবকরা বিপাকে পড়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২৭ ডিসেম্বর বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে একটি চিঠি পাঠান। এর আগে ১৬ নভেম্বর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে বাউফলের ৬১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৬টি দাখিল মাদ্রাসার প্রধানদের সমন্বয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সভায় উপজেলার সব প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ফি নির্ধারণের জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। বাউফল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও ছিটকা মহসীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম নিশুকে ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়।

ওই আহ্বায়ক কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিটি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২৬২০ টাকা, সপ্তম শ্রেণিতে ২৭২০ টাকা, অষ্টম শ্রেণিতে ৩০২০ টাকা, নবম শ্রেণিতে ৩২২০ টাকা ও দশম শ্রেণিতে ৩৫২০ টাকা সেশন ফি নির্ধারণ করা হয়।

ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠির আলোকে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে উপজেলার প্রায় সব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের খবর দিয়ে নতুন শ্রেণিতে ভর্তির নির্দেশ দিচ্ছেন শিক্ষকরা। প্রায় সব বিদ্যালয়ে নতুন শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।

ধানদি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাউফল আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বগা ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কালিশুরী এসএ ইনষ্টিটিউশন, সাবুপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাজেমহল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দাসপাড়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কাছিপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক বলেন, ভর্তির ক্ষেত্রে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ৬০০ টাকা, সপ্তম শ্রেণিতে ৭০০ টাকা, অষ্টম শ্রেণিতে ৮০০ টাকা, নবম শ্রেণিতে ৯০০ টাকা এবং দশম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা নিচ্ছেন শ্রেণি শিক্ষকরা।

কালিশুরী বন্দরের দিনমজুর আবদুস সোবাহান বলেন, আমার ছেলেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করতে ৬০০ টাকা চেয়েছেন শ্রেণি শিক্ষক। করোনার কারণে আমার আয় রোজগার কমে গেছে। একসঙ্গে ৬০০ টাকা দিতে হলে আমাকে ধারকর্জ করতে হবে।

মমিনপুর গ্রামের জেলে রফিকুল ইসলাম, নওমালার কৃষক রহমান ও দাসপাড়ার শ্রমিক কাওসার বলেন, ভর্তির জন্য টাকা দেয়ার সামর্থ নেই। করোনা উপলক্ষে ভর্তির ফিস মওকুফ করার দাবি জানান তারা।

তবে ফি নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ধানদি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনজুর মোরশেদ বলেন, স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে আগ্রহ হারানোর আশঙ্কায় আমরা এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফি নেইনি।

উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ফি নির্ধারণ কমিটির আহ্বায়ক মরিয়ম বেগম নিশু বলেন, আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা করোনাকালীন প্রযোজ্য হবে না। তবে নতুন বছরের সেশন ফি নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। এখনও পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি।

বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, সব শিক্ষক অভিন্ন ফিস নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চিঠিতে আমি সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ফি আদায়সহ সব ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের নির্দেশ অনুসরণ করতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/৯জানুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :