সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

অণুপরিবারে থেকেও একান্নবর্তীর নিরাপত্তা ছায়া

এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার
 | প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:০১

খুব নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না হলেও বছর তিরিশেক আগে থেকে আমাদের চিরচেনা বাংলার একান্নবর্তী পরিবার পরিবর্তিত হতে হতে বর্তমান বাস্তবতায় এসে, পূর্ণাঙ্গ অণুপরিবারের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। মানুষের জীবনচক্রের মতো সমাজ-সংস্কৃতি সবকিছুরই পরিবর্তিত রূপ আছে। সময়ের হাত ধরে এই পরিবর্তনগুলো সাধিত হতে থাকে। প্রগতিশীল আধুনিক মানুষগুলো একটি নির্দিষ্ট ছন্দে পরিবর্তনগুলো দারুণভাবে সমর্থন করেন। অপেক্ষাকৃত প্রতিক্রিয়াশীল মানুষ পরিবর্তনকে সাংঘাতিক ভয় পায় এবং পেছনমুখী আচরণকে আঁকড়ে ধরে চলতে পছন্দ করে। কিন্তু আদি থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমরা কেউ চাই আর না চাই পরিবর্তন অনিবার্য।

পরিবর্তনের ধারায় প্রত্যেক বর্তমানের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী মানুষগুলোর বিবেচনাবোধের ওপরে নির্ভর করে জ্ঞান-গরিমা, বুদ্ধিমত্তা, সুস্থ চিন্তা, সঠিক পরিকল্পনার, যেখানে সমন্বয় সাধন করা সম্ভব হয়েছে সে ক্ষেত্রে পরিবর্তিত পরিস্থিতি বাসযোগ্য হয়েছে। আর যেসব ক্ষেত্রে শুধু ভাগ্য-বিশ্বাসের ওপরে ভর করে মনুষ্য প্রচেষ্টা ছাড়া ভাগ্যনির্ভরতায় পরিবর্তনকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে, সে ক্ষেত্রে পরিবর্তিত পরিস্থিতির বাস্তব চিত্রে সামাজিক সূচকগুলো ভিন্নতা লাভ করেছে। অর্থাৎ পরিকল্পিতভাবে মনুষ্যচেষ্টা দ্বারা বাগান নির্মিত হলে একটি বিশেষ সৌন্দর্য আমরা উপলব্ধি করতে পারি। প্রাকৃতিক নিয়মের অপেক্ষায় থাকলে সেখানেও বাগানসদৃশ ক্ষেত্র তৈরি হবে ঠিকই কিন্তু সেটি কাঙ্ক্ষিত সৌন্দর্যবর্ধন নাও করতে পারে এমনকি আগাছা ভরা জংলা বাগান হতে পারে।

প্রগতিশীল মানুষ পরিবর্তনকে সব সময়ই সাধুবাদ জানায় বলে আমরা দেখেছি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে অভিনন্দন জানাতে দেখেছি এমন করেই- ‘ওরে নবীন ওরে আমার কাঁচা, আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।’ নশ্বর জীবনধারায় প্রবীণদের চারণভূমি আগত নবীনদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে- এটি চিরন্তন বাস্তবতা। এই সহজ সত্য আমরা যারা সহজে বুঝি, তারা নবীনদের জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করে নিজেদের নিবেদিত করি সে লক্ষ্যে। আর যারা সহজে বুঝতে চায় না তারা মৃত্যু অবধি এটি তাদের হিসেবেই বিবেচনা করার মানসিকতা দিয়ে খামাখা নবীনদের প্রতিপক্ষ ভাবতে শুরু করে। সমাজে তৈরি করে অস্থিরতা।

গ্রামীণ সমাজব্যবস্থায় সাধারণত অভিভাবক হিসেবে পিতা বেঁচে থাকতে একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে অণুপরিবার তৈরি করা বিগত ২০ বছর আগেও খুব কঠিন ছিল। বড়জোর দেখা যেত বাবার সন্তানেরা যার যার মতো পৃথক চুলোতে রান্না করে খেত। ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হতো কোনো সন্তান শিক্ষা-দীক্ষায় খুব বেশি এগিয়ে গেলে, শহুরে জীবনযাপনে অভ্যস্ত হলে আর জীবনসঙ্গী শিক্ষিত অভিজাত পরিবারের সন্তান হয়ে থাকলে উভয় মিলে অন্য ভাইদের সাথে একত্রে জীবনযাপনের ক্ষেত্রে অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার দোহাই দিয়ে পৃথকীকরণ প্রক্রিয়ার যাত্রা শুরু হতো। অনেক পরিবারে বাবার অনুপস্থিতিতে মা বেঁচে থাকলেও মাকে ঘিরে সন্তানেরা একান্নবর্তী পরিবারে জীবনযাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করত। খুব অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, অতি শিক্ষিত এবং ভিন্ন মানসিকতার সন্তান না হলে খুব কম ক্ষেত্রেই ভাইয়েরা ভাইয়েরা নিজেদের সংসারকে পৃথক করতে চায়। যদিও অনিবার্য পরিস্থিতিতে একপর্যায়ে বড় সংসারকে ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিসরে সংসার বাঁধতেই হয়।

অনেক অসুবিধার মধ্যে খুব বড় একটি সুবিধা একান্নবর্তী পরিবারে রয়েছে। সন্তানদের বড় হয়ে বেড়ে ওঠা, তাদের শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-গরিমা, চলাফেরা বিশেষ করে সবার সমবেত শক্তি একসাথে সবাই একই রকম অনুভব করায় মনস্তত্ত্বে সামাজিক অনিরাপত্তার ভয়টি জন্ম নিতে পারে না। এমনকি শিশুকাল থেকে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বড়দের অনুশাসনের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠতে হয় বলে ওই পরিবারের সন্তানেরা যা ইচ্ছে তাই অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে সাহস করে না। তার বাইরেও একান্নবর্তী সমাজের একসাথে থাকা ধারণায় সমাজের প্রত্যেকের মনস্তত্ত্ব এবং শাসনকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা নিজের সন্তানের বাইরে অন্যদের মঙ্গলচিন্তা করে মুরব্বিশ্রেণির মানুষ পাড়ায় বেড়ে ওঠা সন্তানদের নিজ সন্তানের মতোই শাসন-বারণ, আদর-স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে বড় করে গড়ে তোলার কাজটি করে থাকত।

একান্নবর্তী পরিবারের মানুষের মধ্যে সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ়, সুন্দর ও সুস্থ থাকে বলে যেনতেনভাবে অসামাজিক কর্মকাণ্ড মাথাচাড়া দিতে পারত না। চাইলেই আজকের সমাজে যেমনটা মাদকের ভয়াবহ বিস্তার মানুষের নাকের ডগায় সম্ভব হয়েছে, একান্নবর্তী সমাজে এটি অসম্ভব ছিল। এজাতীয় দূষণ কারো কারো থাকলেও সমাজের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেক লুকোচুরি করে জীবনযাপন করতে হতো। সমাজের চোখে নিন্দিত হয়ে দম্ভ সহকারে বসবাস করা সেসময় খুব সহজ বিষয় ছিল না, যা আজকের বাস্তবতায় কোনো বিষয়ই না। শহরগুলোতে আদিলগ্নে একান্নবর্তী পরিবারের কিছু বসবাস থাকলেও প্রকৃতপক্ষে শহরে একটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, ব্যবসা- নানা প্রয়োজনে বাস করে থাকে। ফলে এখানেও একশ্রেণির সামাজিক গঠন কিংবা পাড়া-মহল্লা গড়ে ওঠে। তবে একান্নবর্তী পরিবারের দেখা শহরে মেলা খুব কঠিন। যে কারণে একই বিল্ডিংয়ে বাস করা মানুষগুলোর সবাই যার যার মতো, কেউ কাউকে চেনে না। গড়ে ওঠে না কোনো আন্তরিক বন্ধন। বিপরীতে সন্দেহ-ভয়-ভীতি, বিপদাপদ, অনিরাপত্তাবোধ ইত্যাদি নিত্যসঙ্গী হয়ে বসবাস করে। বাহ্যিক নিরাপত্তা অনেক বেশি দৃশ্যমান হলেও মনোজগতের ভয়ভীতি থেকে কোনোমতেই বেরুতে পারে না মানুষ।

বিস্ময়কর ব্যাপার হলো শহরে গড়ে ওঠা অণুপরিবারের ধারণা আরও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হয়ে পরমাণু পরিবারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অর্থাৎ যে পরিবারে শুধু বাবা-মা এবং একজন সন্তান রয়েছে, বিবাহোত্তর জীবনযাপনে সন্তান দ্রুত বাবা-মাকে ছেড়ে একা বসবাসের জীবন বেছে নিচ্ছে। সে নিজে যেমন অনিরাপদ হচ্ছে, তেমনি বাবা-মাকেও অনিরাপদ করছে। পরমাণু পরিবারই পরিবারের সর্বশেষ ধারণা। সেটির সংখ্যা খুব কম হলেও যাত্রা শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে, অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্ক তিক্ততা লাভ করে বন্ধন ছিন্ন না করেও একই ঘরে পৃথক বাস কিংবা দুজন আলাদা হয়ে বাস করার প্রচলন শুরু হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটকে আর যা-ই বলা হোক না কেন, পরিবার বলার আর কোনো সুযোগ নেই। এ স্তরে এসে পরিবারের অস্তিত্বের বিলোপ ঘটে। এক্ষেত্রে জীবনের অন্যান্য অসুবিধার মধ্যে সবচেয়ে বড় অসুবিধা হয়ে যেটি দেখা দেয়, চূড়ান্ত বিপদে কেউ কাউকে পাশে পাচ্ছে না। কিংবা যে ঘরে সন্তান নেই রাত্রিকালীন বিপদে পুরুষ মানুষটি অসুস্থ হয়ে গেলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কাজটি অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।

একটু গভীর দৃষ্টি দিলে আমরা যে বিষয়টি অনুধাবন করতে পারি শহরকে কেন্দ্র করে, আমাদের যা দেখার কথা ছিল আর আমরা যা দেখতে পাচ্ছি, ঠিক তার বিপরীত। আধুনিক শিক্ষিত মানুষের বসবাস শহরগুলোতে। এখানে অণু-পরমাণু পরিবার যা-ই বলি না কেন, সে মানুষগুলোর জ্ঞানচর্চা দিয়েই সমাজকে নিরাপদ রাখা সম্ভব ছিল। অথচ আমরা শহুরে সমাজে তার বিপরীত চিত্র দেখি খুব নিষ্ঠুর ভাবে। মানুষগুলো একে-অপরের পাশে দাঁড়িয়ে বন্ধুসম মনোভাব নিয়ে সমাজে বিদ্যমান অনিরাপত্তাবোধকে খুব সহজেই নিরাপদ বোধে রূপান্তর করতে পারত। মাল্টি লোকজ সাংস্কৃতিক চর্চার মানুষগুলো একত্র হয়ে উন্নত নির্ভরযোগ্য নিরাপদ পাড়া-মহল্লা-সমাজ বিনির্মাণ করা যেখানে অনিবার্য প্রয়োজন ছিল, আমরা সেদিকে লক্ষ না রেখে শিক্ষার দুর্বৃত্তায়ন চর্চার মধ্য দিয়ে ঠকবাজি, প্রতারণা, যত রকমের নেতিবাচক আচরণ আছে সেদিকে সবাই ঝুঁকে পড়ে একটি নৈরাজ্যবাদী সমাজে পরিণত করে ফেলেছি। চূড়ান্ত পরিণতি সবাইকেই অনেক অনিরাপদ করে ফেলেছে।

চূড়ান্ত উপলব্ধি এটাই সত্য, ন্যায়নীতি, নিষ্ঠা, শিক্ষা, সততা, সুসংস্কৃতি, যোগ্যতা, দক্ষতা, বন্ধুত্ব, সাম্য, আপন, আন্তরিক, শৃঙ্খলা, সহিষ্ণুতা, পরোপকার, কঠোর অধ্যবসায়, যথাযথ শ্রম সব ভালো গুণের বিপরীতে অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন, সন্ত্রাস, অপরাজনীতি, ঠকবাজিতা, অযোগ্যতা, লোভ-লালসা- এসব মন্দের ব্যবহার করে বাংলাদেশের পুঁজিবাদচর্চায় রাতারাতি অনেক পুঁজির মালিক বনে যাওয়ার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, মূলত এটি আমাদের সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে, সমাজকে করেছে অস্থির, অনিরাপদ। আমাদের চরম দুর্ভাগ্য, নীতিহীনতার দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে স্বাধীনতা-উত্তর ৫০ বছর উদযাপনের ক্রান্তিলগ্নে এসে আমাদের হতাশ হতে হয় এই দেখে, এই ভেবে যে, সামাজিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক কোনো ক্ষেত্রেই আমরা সুশৃঙ্খল উদাহরণ তৈরি করতে পারলাম না। চারপাশের নেতিবাচক প্রেক্ষাপটকে ঘিরে মানুষ যে হৃৎকম্পন অনুভব করে, তা মনস্তত্ত্বে স্থিতাবস্থা লাভ করে চিত্ত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে। ফলে ব্যক্তিসাহস হারিয়ে মানুষ অসহায় নির্জীব হয়ে পড়েছে। প্রায়ই দেখা যায় একজন বা দুজন ব্যক্তি শত শত লোকের উপস্থিতিতে কাউকে প্রহার করছে আর ওই মানুষগুলো কেউ ছবি তুলছে কেউ বিপদগ্রস্ত মানুষের মৃত্যু দেখার জন্য অপেক্ষা করছে মাত্র। কিন্তু সাহস করে কেউ বিপদগ্রস্ত লোকটিকে সাহায্য করছে না। এমন চিত্র এখন গ্রাম কিংবা শহর সব ক্ষেত্রেই প্রায় একই রকম।

সমস্যা আলোচনায় শত শত পৃষ্ঠা লিখে শেষ করা যাবে না। আমাদের উত্তরণের পথে হাঁটা উচিত। বিপদের মধ্যে থেকে সমস্যা চিহ্নিত করে উত্তরণের পথ খুঁজে বিপদমুক্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়াই প্রগতির মূল চেতনা। তাই এ পর্যায়ে আমরা ফেলে আসা একান্নবর্তী পরিবারে আর ফিরে যেতে পারব না, এটি চরম বাস্তবতা হলেও একান্নবর্তী পরিবার থেকে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধাগুলো আমরা পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের মধ্যে সুদৃঢ় বন্ধনের যাত্রা সহজেই শুরু করাতে পারি আধুনিক ডিজিটাল যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে। বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস এবং ফেসবুক ব্যবহার করে নতুন-পুরনোদের সঙ্গে আমরা অহরহই যোগাযোগ করে যাচ্ছি দেশ কিংবা বিদেশে যেমন সত্য, তেমনি এজাতীয় সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিশেষায়িত নেটওয়ার্কিং গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত করে একান্নবর্তী পারিবারিক ধারায় আমরা আমাদের বন্ধনকে অনেক বেশি মজবুত করতে পারি।

বন্ধুত্ব বাড়িয়ে, সহনশীলতা বাড়িয়ে, আত্মনিবেদনকে উদার করে, আর যেসব বিষয়কে কেন্দ্র করে পারিবারিক ভাঙন তৈরি হয়েছে নতুন আলোচনায় তা থেকে নিজেদের মুক্ত রেখে নতুন বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে পারলে আমার বিশ্বাস এই ব্যক্তিপর্যায়ের অনিরাপত্তাবোধ থেকে মানুষকে মুক্ত করা সম্ভব। শক্তি-সামর্থ্য, চিন্তা-চেতনা, জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেক খাটিয়ে আত্মীয়স্বজনকে একটি নেটওয়ার্কিংয়ের অন্তর্ভুক্ত করে একে-অপরের পারিবারিক খবর রাখা, উৎসবগুলোতে যতটুকু সম্ভব সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা, বছরে দু-একটি অনুষ্ঠান সবাই মিলে করার প্রয়াস নেওয়া, উপকার করতে না পারলেও নিজেদের ক্ষতি করার অপচেষ্টা থেকে প্রত্যেকেই মুক্ত থাকা আর প্রত্যেককে মুক্ত রাখা ইত্যাদি বিষয়ে একটু মনোযোগী হলেই অণুপরিবারে থেকেও একে-অপরের পাশে থাকা যায়। অনিরাপত্তা বোধকে দূরে ঠেলে নতুন সম্পর্ককে দৃঢ় ও স্থায়ী সম্পর্কের রূপ দেয়া যেতেই পারে।

পারিবারিক ও আত্মীয়স্বজনের মধ্যে গড়ে ওঠা দ্বান্দ্বিক সম্পর্কগুলো একই নেটওয়ার্কে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানো যেতেই পারে, আর যেটুকু সম্ভব নয়, তা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আইনানুগ সমাধানে পৌঁছাতে হবে। এ ক্ষেত্রেও শঠতা, মিথ্যাচার, জোর-জবরদস্তি এসব বিষয় পরিহার করে বস্তুনিষ্ঠভাবে সমাধানকে সবার স্বাগত জানাতে হবে।

হতদরিদ্র গরিব আত্মীয়স্বজনের প্রতি বিশেষভাবে ছাড় দেয়ার প্রবণতা ছাড় প্রদানকারীকে আরও মহৎ করবে। শিক্ষিত, সামর্থ্যবান পরিবারকে অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত, কম সামর্থ্যবান নিকটাত্মীয়ের প্রতি সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। এ রকম কিছু মৌলিক জায়গায় খানিকটা সংস্কার করা সম্ভব হলে নতুন সংস্কৃতির যাত্রা শুরু হবে, আর তা যদি শুদ্ধ মননে এক যুগ চর্চা করা যায় তা পরিবর্তিত আধুনিক সমাজের জন্য শান্তির বার্তা বয়ে নিয়ে আসবে। এমন ভাবনার জয় হোক, কল্যাণ হোক সমগ্র মানুষের।

লেখক: পুলিশ সুপার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :