সত্যি কি এটি পরীমনির পঞ্চম বিয়ে?

গত সোমবার আচমকাই মা হতে চলার খবর জানান আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। এও জানান, এই সন্তানের বাবা অভিনেতা শরিফুল রাজ। তারা আড়াই মাস আগে বিয়ে করেছেন। এরপর থেকেই সোশ্যাল দুনিয়ায় রব, এটি পরীমনির পাঁচ নম্বর বিয়ে। অর্থাৎ, রাজের গলায় মালা দেওয়ার আগে বিভিন্ন সময়ে তিনি আরও চারটি বিয়ে করেছেন। যার কোনোটাই স্থায়ী হয়নি। কিন্তু সত্যি কি পাঁচটি বিয়ে করেছেন পরীমনি?
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ঘেটে জানা যাচ্ছে, মাত্র চার বছর বয়সে মা হারানোর পর পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের শিংখালী গ্রামে নানা বাড়িতে থাকতে শুরু করেন পরীমনি। পরবর্তীতে সেখানকার একটি স্কুল থেকেই এসএসসি পাস করেন। এর পরই খালাতো ভাই ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে নায়িকার বিয়ে হয়। সেখানে দুই বছরের দাম্পত্য জীবনের পর বিচ্ছেদ হয়। (সূত্র: যুগান্তর। ৬ আগস্ট, ২০২১)।
এরপর ২০১২ সালের ২৮ এপ্রিল ফেরদৌস কবীর সৌরভ নামে এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় পরীমনির। সৌরভ ছিলেন পেশায় একজন ফুটবলার। বাড়ি যশোরের কেশবপুরে। সৌরভের পরিবারের সম্মতিতেই পরীমনি অভিনয় জগতে এসেছিলেন বলে প্রচলিত আছে। দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে অভিনেত্রীর নাকি এখনও ডিভোর্সই হয়নি। কিন্তু তারা আলাদা হয়েছেন বহু আগে। (সূত্র: কালের কণ্ঠ। ৫ আগস্ট ২০২১)।
পরীমনি এই দুটি বিয়ে করেছিলেন চলচ্চিত্রে আসার আগে। চলচ্চিত্রে আসার পর তিনি আরও একাধিক বিয়ে করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বদৌলতে যা দেশের কারোই অজানা নয়।
২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল বিনোদন সাংবাদিক এবং কালচারাল জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি তামিম হাসানের সঙ্গে বাগদান সেরেছিলেন পরীমনি। সেই অনুষ্ঠানের বহু ছবি এখনও ঘুরছে গুগলসহ সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মাধ্যমে। গত বছরের ১৪ এপ্রিল পরী ও তামিমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ভেঙে যায় সম্পর্ক। যদিও ঢালিউডে কান পাতলে শোনা যায়, তারা নাকি বিয়েও করেছিলেন। কিন্তু তা টেকেনি।
এরপর গত বছরের মার্চে থিয়েটারকর্মী ও চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান রনিকে খুবই অল্প দিনের পরিচয়ে বিয়ে করেন পরীমনি। সে সময় হৃদি হকের পরিচালনায় ‘১৯৭১: সেই সব দিন’ নামে একটি ছবিতে অভিনয় করছিলেন এই নায়িকা। রনি ছিলেন সেটির সহকারী পরিচালক। সেখান থেকেই প্রেম, পরে বিয়ে। গত ১০ মার্চ বিয়ে করেছিলেন তারা। কিন্তু এই সংসার তিন মাসও টেকেনি।
এবার বিয়ে করলেন সহ-অভিনেতা শরিফুল রাজকে। গত ১৭ অক্টোবর রাজধানীর আফতাব নগরে রাজদের বাড়িতে তাদের বিয়ে হয় বলে মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে জানান পরীমনি। সেখানে শুধু দুই পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এত দিন এ খবর গোপন রেখেছিলেন। কারণ, তারা একটি বড় অনুষ্ঠান করে সবাইকে খবরটি দিতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেন রাজ।
এই অভিনেতার সঙ্গে পরীমনির পরিচয় কাজের সূত্রে। গত ১ সেপ্টেম্বর জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ‘মনপুরা’ ছবির পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিমের পরিচালনায় ‘গুনিন’ নামে একটি ছবির শুটিং শুরু করেন পরীমনি। রাজ সেখানে পরীর নায়ক। ব্যস, একসঙ্গে কাজ করতে গিয়েই তারা একে-অন্যের প্রেমে পড়েন। তারপর বিয়ে। রাজের সন্তানের মা-ও হতে চলেছেন তিনি।
পরীমনি সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, মাত্র সাত দিন প্রেম করার পর তিনি রাজকে বিয়ে করেছেন। নায়িকার কথায়, ‘আমরা প্রেম করেই বিয়ে করেছি। ‘গুনিন’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে আমাদের পরিচয়। কাজ করতে করতে আমাদের মধ্যে দারুণ একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর প্রেম। আমাদের প্রেমের বয়স মাত্র সাত দিন। তার পরই আমরা বিয়ে করি।’
তাহলে এটি নায়িকার কত নম্বর বিয়ে? চার নাকি পাঁচ? এর উত্তর কেবল পরীমনিই জানেন। বিনোদন সাংবাদিক তামিমের সঙ্গে তার সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছিল কী না, তা নিশ্চিত নয়। কাজেই শুধু বাগদান সারলেই তাকে বিয়ে বলা যায় কি? তাছাড়া চার বা পাঁচ-এ কী বা আসে যায়। পরীর এই বিয়েটা টিকে থাকুক, আপাতত এই প্রত্যাশা তার অনুরাগীদের।
ঢাকাটাইমস/১২জানুয়ারি/এএইচ

মন্তব্য করুন