ডিএনএ চুরির ভয়ে রাশিয়ায় কোভিড পরীক্ষায় না মাখোঁর

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর কোভিড পরীক্ষার কথা থাকলেও তিনি সেটা করতে সম্মতি দেননি। ফলে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তাকে বৈঠকে বসতে হলো ১৩ ফুট লম্বা টেবিলের মাথায়। কোভিড পরীক্ষাটি করার কথা ছিল রাশিয়ায়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন।

বিবিসি জানায়, কোভিড পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য প্রটোকল দরকার ছিল, কিন্তু সেটি ফরাসি প্রেসিডেন্টের সময়ের সঙ্গে মিল না হওয়ায় তা অগ্রহণযোগ্য। অন্য একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরাসি প্রেসিডেন্টের ভয় ছিল রাশিয়ানরা পিসিআর পরীক্ষার সময় তার ডিএনএ সংগ্রহ করে রাখবে। সেজন্য মূলত তিনি কোভিড পরীক্ষা প্রত্যাখ্যান করেন।

কোভিড পরীক্ষা না করায় পুতিন-মাখোঁ নিজেদের মধ্যে করমর্দন করেননি। তাদের বৈঠকের টেবিলের দৈর্ঘ্য ছিল চার মিটার। অবশ্য কূটনীতিকরা টেবিলের এই দূরত্বকে অন্যভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের ধারণা এর মাধ্যমে পুতিন ভিন্ন ধরনের কোনো কূটনৈতিক বার্তা দিলেন বিশ্বকে।

ফরাসি কূটনৈতিক সূত্র থেকে জানা গেছে, মাখোঁকে বলা হয়েছিল রুশ পিসিআর পরীক্ষা করিয়ে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুতিনের কাছাকাছি বসতে। ফরাসি কূটনীতিকরা আরো বলেন, আমরা ভালো করেই জানতাম তারা একে অপরের সাথে করমর্দন করবেন না। লম্বা টেবিলের দুই প্রান্তে বসেই বৈঠক সারবেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, রাশিয়া ফরাসিদের অবস্থান বুঝতে পেরেছে এবং এটি আলোচনায় কোনো প্রভাব ফেলেনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মাখোঁ ফ্রান্স ছাড়ার আগে একটি পিসিআর পরীক্ষা করেছিলেন এবং মস্কো সফরকালে তার আরেকটি অ্যান্টিজেন পরীক্ষাও করেন ফরাসি চিকিৎসক।

মোখোঁর সঙ্গে দীর্ঘ সামাজিক দূরত্ব নিয়ে বৈঠক করলেও পুতিন কাছাকাছি বসে বৈঠক করেছেন কাজাখ প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট টোকাযভের সঙ্গে। সেটা মাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাতের তিন দিন পর। পুতিন ও কাজাখ প্রেসিডেন্ট করমর্দন শেষে একটি ছোট কফির টেবিলের দুই পাশে বসে বৈঠক করেন।

চলমান ইউক্রেন সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য রাশিয়া গিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। মাখোঁ এবং পুতিনের মধ্যকার বৈঠক দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা চলে। তবে বৈঠকের সফলতা নিয়ে মিশ্র মন্তব্য পাওয়া গেছে দুই পক্ষ থেকে।

এদিকে পশ্চিমা দেশগুলো ধারণা করছে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে। ইতিমধ্যে ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। তবে রাশিয়ার তরফে আক্রমণের পরিকল্পনা বরাবর অস্বীকার করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট ইউক্রেন লাগোয়া ন্যাটো দেশে সেনা পাঠানোর কথা বলেছে।

সর্বশেষ জানা গেছে, ইউক্রেনে অবস্থানরত মার্কিনদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।

(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/এসএটি)