যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণাগারে তৈরি মাংস খাওয়ার অনুমোদন

জবাই কিংবা হত্যা করে নয়, বরং প্রাণীর কোষ থেকে গবেষণাগারেই তৈরি হচ্ছে মাংস। প্রাণীর দেহ থেকে কোষ নিয়ে কৃত্রিমভাবে ল্যাবে উৎপাদিত মাংস খাওয়ার অনুমোদন দিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র। জীবন্ত প্রাণীর দেহ থেকে কোষ নিয়ে প্রথমবার গবেষণাগারে এ মাংস উৎপাদন করা হয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এর অনুমোদন দেয়। খবর রয়টার্সের।

আপসাইড ফুডস নামের একটি কোম্পানি জীবন্ত মুরগির দেহ থেকে কোষ সংগ্রহ করে এই মাংস তৈরি করেছে। জীবন্ত প্রাণীর কোষ ব্যবহার করে স্টেইনলেস-স্টিল ট্যাংকে এ মাংস খাওয়ার উপযোগী করে উৎপাদন করা হয়। এফডিএর অনুমোদনের পর এখন দেশটির কৃষি বিভাগের অনুমোদন পেলেই পরীক্ষাগারে তৈরি এ মাংস বাজারে আসবে। অর্থাৎ মার্কিন কৃষি বিভাগের আরেকটু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই এ মাংস ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করা সম্ভব হতে পারে।

এফডিএ কমিশনার রবার্ট এম ক্যালিফ এবং এফডিএর সেন্টার ফর ফুড সেফটি অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড নিউট্রিশনের পরিচালক সুসান মেইন বলেছেন, বিশ্ব একটি খাদ্যবিপ্লবের সম্মুখীন হতে হচ্ছে এবং এফডিএ খাদ্য সরবরাহে এসব উদ্ভাবনকে সমর্থন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এফডিএ জানিয়েছে, আপসাইড ফুডসের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।

আপসাইড ফুডসের সদর দপ্তর ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলেতে। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী উমা ভালেতি বলেছেন, ‘আমরা অনেক সংশয়ের মধ্যে আপসাইডের যাত্রা শুরু করেছিলাম। কিন্তু এখন আমরা ইতিহাস গড়েছি। এফডিএ আমাদের পরীক্ষাগারে তৈরি মাংস খাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে।’

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বে মাংসের চাহিদা ১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের। আগামী এক দশকের মধ্যে বিশ্বে মাংসের মোট চাহিদার ১০ ভাগের এক ভাগ যোগান দেয়া হবে প্রাণীকোষ থেকে তৈরি এ ধরনের মাংসের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর ‘থ্যাংকস গিভিং ডে’-তে গড়ে প্রায় পাঁচ কোটি টার্কি (একধরনের পাখি) হত্যা করা হয়। টার্কির মাংস মার্কিনীদের ভীষণ প্রিয়। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইউরোপ, এশিয়া কিংবা অন্যান্য দেশেও মাংসভোজী মানুষের সংখ্যা দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী। প্রাণিকুল উজাড় না করেই মানুষের মাংসের চাহিদা মেটানোয় এই প্রযুক্তি বৈপ্লবিক অবদান রাখবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। প্রতিবছর কয়েক শ কোটি প্রাণীর জীবন রক্ষা পাবে!

(ঢাকাটাইমস/১৯ নভেম্বর/আরজেড)