সন্ধ্যার আড্ডায় ভাপা ও চিতই পিঠা

পুলক রাজ, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ২১:১৩

রাজধানীর ফুটপাতে ভাপা ও চিতই পিঠার ব্যবসা জমে ওঠেছে। বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পিঠা বিক্রি ধুম পড়ে যায় নগরীর সিগনাল, পয়েন্টসহ বিভিন্ন বাজারের মোড়ে। ছোট ছোট ভাসমান পিঠার দোকান বিভিন্ন স্থানে সাজিয়ে বসছেন বিক্রেতারা।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কাকরাইল, মালিবাগ, শান্তিনগর, রামপুরা টিভি সেন্টার, মৌচাক, সেগুনবাগিচা, বিজয় নগর, ফকিরাপুল, নয়াপল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতের দোকানগুলোতে গ্যাসের চুলায় মাটির ছাঁচ দিয়ে ভাপা পিঠা এবং লোহার কড়াই দিয়ে চিতই পিঠা তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে বেশি বিক্রি হয় চিতই পিঠা। তবে ভাপা পিঠার কদরও কম নয়। দোকানগুলোতে গরম পিঠার স্বাদ নিতে সব শ্রেণি-পেশা মানুষের ভিড় শুরু হয় সন্ধ্যার পর থেকে। বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে নারী-পুরুষ উভয়েই। এই ব্যবসা অনেকেরই বাড়তি উপার্জনের উপায়।

মাটির খোলায় চালের গুঁড়ো পানিতে মিশিয়ে চিতই পিঠা তৈরি করতে হয়। ঝাল, শুঁটকি ও সরিষা দিয়ে তৈরি ভর্তা মিশিয়ে খেতে খুবই মজা। অন্যদিকে ভাপা পিঠা তৈরির উপাদানের মধ্যে রয়েছে চালের গুঁড়া, খেজুর গুড়, নারকেল কুরানো এবং পরিমান মতো লবন ও পানি। উপাদানগুলো মেশানো চালের গুঁড়ো দেওয়া হয় ছোট বাটিতে। বাটির ওপরে পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে ফুটন্ত পানির ভাপের ওপর রাখা হয়। চার-পাঁচ মিনিট পর ভাপা পিঠা তৈরি হয়ে যায়।

ভাপা পিঠা ১৫ টাকা ও চিতই পিঠা ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে একটু সন্ধ্যা নামলেই ক্রেতারা ভিড় করছেন এসব পিঠা তৈরির দোকানের সামনে। অনেকেই সেখানেই দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। আবার অনেকেই প্যাকেটে করে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।

বিক্রেতারা জানান, শীতের মৌসুমকে কেন্দ্র করে পিঠা বিক্রি ভালোই হচ্ছে। সন্ধ্যার পর ক্রেতাদের আগমন ঘটে অনেক। তবে ক্রেতাদের চাহিদা বুঝে চাহিদানুযায়ী বানানো হয় ভাপা ও চিতই পিঠা।

শান্তিনগর এলাকার চিতই ও ভাপা পিঠা বিক্রেতা মো. সাইফ উদ্দিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, শীতের মৌসুমে ভাপা ও চিতই পিঠা মানুষের পছন্দের খাবার। সকাল ৮ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত রিকশা চালাই। দুপুরের পরে গোসল ও খাওয়া দাওয়া করে ভাপা ও চিতই পিঠার প্রস্তুতি নিতে থাকি। এবং বিকেল হলেই গ্যাসের চুলা ও ছোট ছোট কড়াই এবং পাতিল দিয়ে পিঠা তৈরি করার কার্যক্রম শুরু করি।

সাইফ উদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর ভাসমান আমার পিঠা দোকানে পিঠাপ্রেমীদের আড্ডা বসে। এসব দেখতে ভালোই লাগে। আর আমার দোকানের পিঠায় যেন ধুলাবালি না লাগে তার ব্যবস্থাও করে রেখেছি। সব সময় ঘুরে রাখি।

সেগুনবাগিচা এলাকার চিতই ও ভাপা বিক্রেতা সুলতানা আক্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, শীতে প্রতিদিন রুটিন করে পিঠার দোকান নিয়ে বসি। চালের গুঁড়া ও গুড় দিয়ে ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠা বিক্রি করি। আমার সঙ্গে আমার ছোট মেয়েটাও সহযোগী হয়ে কাজ করে। শীত এলে ভালোই সংসার চলে।

সুলতানা আক্তার বলেন, প্রতিদিন চালের গুঁড়া, শুঁটকি, গুড়, চিনি, নারকেলসহ ভাপা ও চিতই পিঠা বানাতে যা যা লাগে সব কিনতে প্রায় হাজার টাকা লাগে। এর মধ্যে আয় হয় ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।

রামপুরা টিভি সেন্টার এলাকার মো. মুরসালিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, শীতের মৌসুমে গ্রামের বাড়ি মিস করি। কারণ গ্রামে পিঠার মজাই আলাদা। ধনিয়া পাতা, কাঁচা মরিচ ভর্তা, টাকি ভর্তা ও সরিষা বাটা দিয়ে চিতই পিঠার স্বাদটা ভুলতে পারি না। সন্ধ্যার পর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হয়। ওই সময় সঙ্গী হয়ে থাকে চিতই পিঠা।

সেগুনবাগিচা এলাকার সায়মা ইবনাত ঢাকা টাইমসকে বলেন, রাজধানীর ফুটপাতের ছোট ছোট পিঠা দোকানীরা শীতকালের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। পিঠার প্রতি আমার নেশা। আর সেই নেশা কাটাতে আমি প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর দুদকের সামনে এসে শুঁটকির ঝাল ভর্তা ও সরিষা দিয়ে চিতই পিঠা খাই। প্রায় সময় বাসাও নিয়ে যাই।

(ঢাকাটাইমস/০৯জানুয়ারি/পিআর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

তীব্র তাপপ্রবাহে জনসাধারণের মাঝে পানি, খাবার স্যালাইন বিতরণ বিএনপির

মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেও নেতাকর্মীরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে: সালাম

ঢাকা মেডিকেলে এক কারাবন্দিকে মৃত ঘোষণা

ভাষানটেকে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫, বাকি একজনও আশঙ্কাজনক

মুগদা-মান্ডা সড়কে অভিযান: ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ  

মোহাম্মদপুরে তিতাসের এমডির বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজধানীতে থাকবে না ফিটনেসবিহীন বাস, জুন থেকে মাঠে নামছে বিআরটিএ

আজ ৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায়

গরমে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতা সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি ডিএমপির

স্থপতি ইনস্টিটিউটে মসজিদ স্থাপত্য নিয়ে সেমিনার 

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :