বাণিজ্যমেলার শেষ শুক্রবারে কানায় কানায় পরিপূর্ণ প্রাঙ্গণ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ২৩:৩৮

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা মানেই মেলা প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকবে। দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকবে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। স্টলগুলোর সামনে থাকবে ক্রেতাদের ভিড়। সেই চিত্রই ফুটে উঠেছে বাণিজ্যমেলার শেষ শুক্রবার। পুরো মেলা প্রাঙ্গণ ছিল দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত। শুক্রবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুরো মেলা প্রাঙ্গণে ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। বেশি লোকের সমাগমের কারণে মেলা থেকে এশিয়ান বাইপাস সড়ক ও গাজীপুর বাইপাস সড়কে প্রায় ১৩ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মেলায় এসে ভোগান্তিতে পড়েছে দর্শনার্থীরা। তবে ভোগান্তি পেরিয়েও মেলায় আসতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলার শেষ শুক্রবার হওয়ায় সকাল থেকেই বাণিজ্যমেলায় দর্শনার্থীদের আসতে দেখা যায়। এতে করে মেলা প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। এবারের আসরে বানিজ্যমেলায় ৩৩১ টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্টলের সামনেই দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। সেই চিরচেনা রূপকে পূর্ণতা দিয়েছে মেলায় দর্শনার্থীদের অবাধ আগমন। মেলায় প্রতিটি স্টলকে সাজানো হয়েছে নানা রংয়ের লাইটের মাধ্যমে। মেলায় বেশকিছু স্টলের সামনে টেডিবিয়ারের জামা পড়ে মানুষকে দর্শনার্থীদের আনন্দ দিতে দেখা গেছে। বিগত সময়ে দর্শনার্থীরা মেলায় বেশিরভাগ ঘুরতে আসলে মেলার সময় শেষের দিকে হওয়ায় সকলেই কিনছেন নিজের পছন্দের পণ্য।

ক্রেতা আকর্ষণের জন্য দোকান গুলো সাজানো হরেক রকমের রংবেংরংয়ের সাজ সজ্জায়। আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গুলো ক্রেতাদের সুবিধার জন্য ছাড় দিচ্ছেন। আর ছাড় পেয়ে দর্শনার্থীরাও কিনছেন মনের মতো করে। তবে অনেকেই অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা ছাড়ের নামে প্রতারণা করছেন ক্রেতাদের সঙ্গে। মেলায় গৃহস্থালি ও নিত্ত্যপ্রয়োজনীয় পন্য, কসমেটিকস ও রেস্তোরা গুলোতে ভিড় দেখা গেছে। অতিরিক্ত ভিড় হওয়ায় ব্যবসায়ীরা পন্য বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মেলার প্রথমদিকে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা নিজেদের পন্য সম্পর্কে দর্শনার্থীদের উপস্থাপন করলেও দর্শনার্থী বেশি হওয়ার কারণে তারা যে ক্রেতাদের সঙ্গে কথার বলার সময় পাচ্ছেন না।

তবে দর্শনার্থীদের অভিযোগ, মেলায় আসতে গিয়ে প্রচণ্ড ধুলাবালি, যানজট ও পরিবহন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নরসিংদী, ভৈরব ও নারায়ণগঞ্জ থেকে মেলায় আসার প্রধান সড়ক এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস প্রশস্থ্যকরণ কাজ চলায় এ ভোগান্তিতে পড়ছে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। যানজটের কারণে ১ ঘণ্টার পথে সময় লাগছে ৩ ঘণ্টা।

এদিকে, নতুন চমক হিসেবে মেলায় এ আসরে শিশুদের জন্য অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছে শিশুপার্ক। শিশুপার্কটিতে ফ্লিপার, নাগরদোলা, ওয়ার বল, ট্রেনসহ প্রায় ১০ টি রাইড রয়েছে। শিশুপার্কের বিভিন্ন রাইডগুলোর সামনে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের উঠাচ্ছেন। এতে শিশু কিশোররাও খুব আনন্দের সাথে বিভিন্ন রাইড উপভোগ করছেন। তবে তুলনামূলক শিশুদের রাইডের টিকিটের অনেক বেশি বলে অভিযোগ করেন দর্শনার্থীরা। এদিকে, এশিয়ান বাইপাস সড়ক ও গাজীপুর বাইপাস সড়কে প্রায় ১৩ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মেলায় এসে ভোগান্তিতে পড়েছে দর্শনার্থীরা। তবে ভোগান্তি পেরিয়েও মেলায় আসতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের।

মেলার ব্যবসায়ীরা জানান, মেলার শেষ শুক্রবার হওয়ার কারণে মেলায় দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রথমদিকে মেলায় ক্রেতার সংখ্যা বেশি না হলেও সময় শেষের দিকে হওয়ায় মেলায় বিক্রি অনেক হচ্ছে। এ কারণে ব্যবসায়ী সন্তোষ প্রকাশ করেছে। মেলার প্রথম দিকে দর্শনার্থী তেমন না হওয়ার কারণে তাদের বিক্রি তেমন হয়নি। এ কারণে তারা পন্য বিক্রি তেমন করতে পারেনি। পন্য বিক্রি কম হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মূখীন হবে এ কারণে তারা সময় বাড়ানো দাবি জানিয়েছিল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কাছে। মেলার সময় বাড়ানো হবে না বলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পক্ষ না জানানো হয়। মেলার সময় না বাড়ালে ব্যবসায়ীদের লোকজন হবে তারা জানান।

কথা হয় নাভানা ফার্নিচার দোকানের কর্মচারী সুমনের সঙ্গে তিনি বলেন, মেলার শেষ শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় দর্শনার্থীদের অনেক ভিড় হয়েছে। ফার্নিচার পন্যও আমাদের অনেক বেশি বিক্রি হয়েছে।

একটি কসমেটিস দোকানের বিক্রয়কর্মী নাদিয়া আক্তার জানান, ছুটি দিন হওয়ায় দোকানে বিক্রি হচ্ছে অনেক। নারীরা নিজেদের পছন্দ মতো কসমেটিক্স সামগ্রী কিনছেন। মেলায় শেষের দিকে হওয়ায় প্রতিদিনই খুব ভিড় দেখছি। তবে শুক্রবার আরো বেশি ভিড় হচ্ছে।

ক্লাসিক হোমটেক্সের ব্যবস্থাপক ইয়ামিন জানান, আমরা মেলায় বিছানা চাদর, কম্বলসহ বেশকিছু পন্য নিয়ে হাজির হয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলায় দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছে। আমাদের বিক্রি বেড়েছে মেলা শেষের দিকে হওয়ার কারণে

মেলা কথা হয় আমিন ও সুমাইয়া নামে এক দম্পতির সঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দুজনেই একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকুরীজিবী। ছুটির দিন তাই মেলায় ঘুরতে এসেছি। কেনাকেটা করলাম খাওয়া দাওয়া করলাম। তবে মেলায় আসার সময় যানজটের কারণে কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে। তারপরও মেলা প্রাঙ্গণ পুরো প্রস্তুত হয়ে যাওয়ায় ভাল লাগছে।

কথা হয় সাদ্দাম নামে একটি রেস্টুরেন্টের কর্মচারীর সঙ্গে তিনি বলেন, মেলা শেষের দিকে হওয়ার কারণে মেলায় অনেক ভিড় দেখা গেছে দর্শনার্থীদের।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, মেলায় আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে আইন শৃঙ্গলা বাহিনী সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে।

এ ব্যাপারে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবির সচিব ও বানিজ্যমেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মেলা শেষের দিকে হওয়ার কারণে মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী আসছে। মেলায় দর্শনার্থীরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখছি। মেলায় আজ কয়েকলাখ লোকের সমাগম হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৭জানুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :