দায়সারা কর্মসূচি দিয়ে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত!

দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে দায়সারা কর্মসূচি পালন করেছে জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। যা নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে প্রশ্ন ওঠেছে। আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা, উপজেলা ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোরও নেই আলাদা কোনো কর্মসূচি। ছিল না দারিদ্র্যভোজসহ অন্য কোনো আয়োজনও।
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে স্মরণসভার আয়োজন করেছে জাতীয় পার্টির জিএম কাদের অংশ।
পার্টির অপর অংশ রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি একই দিনে একই সময়ে কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে স্মরণসভার সভার আয়োজন করে। দুটি সভায়ই পৃথকভাবে এরশাদের সহোদর জিএম কাদের এবং সহধর্মিণী রওশন এরশাদ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অন্য কোনো কর্মসূচি নেই। গতবছর সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নেতৃত্ব জাপার কাকরাইল কার্যালয়ে কয়েকটি গরু জবাই করে দুস্থদের মাঝে তোবারক বিতরণ করা হলেও এবার তা হয়নি। বাবলা এখন রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান। রবিবার সকালে দলটির কয়েকজন নেতা কাকরাইল কার্যালয়ে প্রয়াত এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করলেও এবারও সেখানে উপস্থিত হননি দলটির চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদের।
এ বিষয়ে জিএম কাদের অংশের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য ঢাকা টাইমসকে আক্ষেপ করে বলেন, এরশাদের আপন ভাই দলের চেয়ারম্যান। অথচ, উত্তরা থেকে সকালে কাকরাইল আসতে পারেন না প্রয়াত ভাইকে শ্রদ্ধা জানাতে। উনার উচিত ছিলো ভোরবেলা এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে হেলিকপ্টার যোগে রংপুর গিয়ে কবর জিয়ারত করা। প্রতিটি জেলা ও উপজেলাকে প্রয়াত এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া। খোদ চেয়ারম্যানই যদি পার্টির প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুবার্ষিকীতে দায় ছাড়া কর্মসূচি দেন সেখানে নেতাকর্মীরা কী করবে?
জাপার রওশন অংশের কো-চেয়ারম্যান সুনীল শুভ রায় ঢাকা টাইমসকে বলেন, এবার তো অন্তত জিএম কাদের ঘর থেকে বের হয়েছেন। তাও আমাদের কারণে। পল্লীবন্ধু এরশাদের মৃত্যুর পর কখনও কোনো অডিটোরিয়ামে স্মরণসভা করেননি তিনি। বনানীর ছোট্ট কার্যালয়েই সীমাবদ্ধ ছিলো স্মরণসভা। এবার আমরা যেহেতু একমাস আগ থেকে স্মরণসভার জন্য হল বুকিং দিয়েছি তা জানতে পেরেই বাইরে একটি হল ভাড়া করেছে স্মরণসভার জন্য। যাক, তবু বোধগম্য হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রয়াত এরশাদের সহধর্মিণী, সাবেক বিরোধী দলের নেতা এবং জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, রবিবার সকাল থেকেই আমার বাসায় কোরআন খতম এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরশাদভক্ত সকলকে, সব জেলায় এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোকেও বলা হয়েছে যথাযথ মর্যাদায় যেনো প্রয়াত এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। তিনি বলেন, জিএম কাদেরেরও উচিত ছিলো সব থানায় থানায় এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনকে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালনের নিদের্শনা দেওয়া।
এ বিষয়ে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ঢাকা টাইমসকে বলেন, দারিদ্র ভোজ আমরা করি না, তাছাড়া এবিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনাও নেই। তবে, আমরা জেলা কমিটিগুলোকে বলেছি মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের করার জন্য।
(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/জেবি/ইএস)

মন্তব্য করুন