বগুড়ায় নিজেদের অফিসে আগুনের মামলায় আ.লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা আসামি

​​​​​​​বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০২৪, ২৩:০৫
অ- অ+

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা, সদ্য পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া ছাত্রলীগ নেতা এবং জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে।

গত ২২ জুলাই রাতে জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক খালেকুজ্জামান রাজা বাদী হয়ে ৮৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

মামলায় জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ২নং আসামি করা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনাকে। এছাড়া ৮৭ জনের মধ্যে বগুড়ার দুটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ পরিচালকসহ বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী রয়েছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, এজাহারনামীয় আসামি ছাড়াও অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ আসামি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করেন। তারা কার্যালয়ের মালামাল লুট করেন। এছাড়া পার্শ্ববর্তী টাউন ক্লাব জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এবং সামনের অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে হামলা, অগ্নিসংযোগ লুটপাট করেন।

মামলায় আসামিদের মধ্যে ১২ নম্বর আসামি করা হয়েছে জাকি তাজওয়ারকে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুদ্রণ প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক ছিলেন তিনি। কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সপ্তাহখানেক আগে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী।

বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য শহর যুবলীগের রহমাননগর আঞ্চলিক কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক কাজলকে ৬৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তিনি শহরের বিআরটিসি শপিং কমপ্লেক্সের সভাপতি। ওই মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন আকরামকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার আরেক আসামি আবু বক্কর সিদ্দিক বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারী।

মামলায় বগুড়ার বিআইআইটি নামক বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ সাহাবুদ্দিন সৈকত আইআইটিবির পরিচালক সবুর শাহ লোটাসকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া বগুড়া পৌরসভার নারী কাউন্সিলর ৬৮ বছর বয়সী শিরিন আক্তারকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামি জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, অভিযোগটি খুবই হাস্যকর, কারণ একই ভবনে আওয়ামী লীগ কার্যালয় এবং আমাদের কার্যালয় অবস্থিত। হামলা এবং অগ্নিসংযোগে শুধু আওয়ামী লীগ অফিসই না, ছাত্র ইউনিয়ন এবং কমিউনিস্ট পার্টির অফিসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মামলা দেখে তো মনে হচ্ছে আমরা নিজেদের অফিসেই হামলা করেছি।

ছাত্রলীগ থেকে সদ্য পদত্যাগ করা নেতা মামলার আসামি জাকি তাজওয়ার বলেন, ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগের কারণেই তাকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় পোড়ানো মামলার আসামি করা হয়েছে, এমনটা হয়ত নাও হতে পারে। কেউ হয়তো আওয়ামী লীগ নেতাদের ভুল বুঝিয়ে তকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। সাতমাথা এলাকায় অনেক সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেসবের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা উচিত ছিল। তার দাবি ওই দিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদি জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, দলের উপ-দপ্তর সম্পাদক হিসেবে আমাকে বাদি করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিষয়ে দলীয় সভায় সিদ্ধান্তক্রমে নাম দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান অলি উল্লাহ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ থেকে লিখিত যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সেটিই মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তকালে যাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে না তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে।

ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/পিএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ পৌরসভায় শেষ হবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ: অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় বোতল মারল কে?
কিছু ঘটলেই যমুনায় যাওয়ার প্রবণতা সহ্য করা হবে না: উপদেষ্টা মাহফুজ 
সিলেট থেকে ৪১৮ যাত্রী নিয়ে মদিনায় গেল প্রথম হজ ফ্লাইট
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা