সাংবাদিক হাসান মেহেদী হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই

আলী হাসান
  প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬| আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:২৪
অ- অ+

ঢাকা টাইমস-এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মেহেদী (মো. মেহেদী হাসান) কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় আমরা স্তব্ধ, বিমূঢ় ও হতবাক্। এ গভীর মর্মান্তিক শোক বহন করতে যারপরনাই অক্ষম আমরা ঢাকা টাইমস পরিবার। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার এই ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহে আপসহীন ও অবিচল হাসান মেহেদী কেন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হবেন তা আমরা অনুধাবনে অক্ষম। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা তো কোনো পক্ষের লোক থাকেন না। সম্পূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহের জন্যই তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাৎক্ষণিক সংবাদ সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের দপ্তরে প্রেরণ করেন। অতঃপর সেই তাৎক্ষণিক নির্জলা ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদটি দেশবাসীকে অবহিত করা হয়। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে একজন সাংবাদিককে কেন গুলির যূপকাষ্ঠে নির্মমভাবে বলি হতে হবে? সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন- একজন নীতিবাদী, আত্মপ্রত্যয়ী ও কর্মিষ্ঠ সাংবাদিক কেন পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাবেন?

দেশের মানুষ ইতোমধ্যেই অবহিত হয়েছে যে- গত ১৮ই জুলাই বৃহস্পতিবার কোটা-সংস্কার আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন ঢাকা টাইমস-এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মেহেদী। তার অনাকাঙ্ক্ষিত এই অকাল মৃত্যু ঢাকা টাইমস পরিবার এবং তার নিজের পরিবার ছাড়াও বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহীর হৃদয়কে একেবারে শূন্য করে দিয়েছে। হাসান মেহেদীর সাড়ে ৩ বছর এবং ৭ মাস বয়সী দুই অবুঝ কন্যা সন্তানের এখন কী হবে? সদ্য অকাল বিধবা হাসান মেহেদীর স্ত্রীই-বা এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন তার অবোধ শিশু সন্তানদের নিয়ে? কীভাবে পুত্র হারানোর এই গভীর শোক ধারণ করবে হাসান মেহেদীর বৃদ্ধ বাবা-মা? জানা গেছে, হাসান মেহেদীর বৃদ্ধ বাবা এ পর্যন্ত পাঁচবার হার্টস্ট্রোক করেছেন। তিনি অনেকদিন ধরেই শয্যাশায়ী। তাঁর নিজেরও প্রতি মাসে কয়েক হাজার টাকার ঔষধের প্রয়োজন হয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন হাসান মেহেদী। এই পরিবারটি তাদের জ্যেষ্ঠ সন্তানকে হারিয়ে কীভাবে এখন অন্নসংস্থান করবে এতগুলো মানুষের? বলার অপেক্ষা রাখে না-বর্তমানে এক চরম অসহায়ত্বের মধ্যে নিপতিত হয়েছে সাংবাদিক হাসান মেহেদীর পুরো পরিবার; বিশেষ করে তার সদ্য বিধবা স্ত্রী ও অবুঝ দুই কন্যা সন্তান। তারা এখন রাষ্ট্রের মানবিক সুদৃষ্টিপ্রাপ্তির নিষ্করুণ অপেক্ষায় থাকা ছাড়া আর কী করতে পারে! এই অসহায় পরিবারটির মৌলিক আর্থিক নিরাপত্তা বিধানে রাষ্ট্রীয় দৃশ্যমান উদ্যোগের কোনো বিকল্প আছে কি?

সাংবাদিক হাসান মেহেদীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রত্যক্ষদর্শী সহযোগী একটি দৈনিক পত্রিকার জনৈক রিপোর্টারের কাছ থেকে জানা যায়- ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসান মেহেদী হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর দাঁড়িয়ে খবর সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিরামহীন সংঘর্ষ চলছিল। হঠাৎই একটি গুলি এসে হাসান মেহেদীর গলায় লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসাপাতালে নেওয়ার পরে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। অর্থাৎ এ থেকে বুঝা যায় হাসান মেহেদী সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনাস্থলে গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গেই হয়তো সেখানে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার হুসনেবাদ গ্রামে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নির্মমভাবে নিহত হাসান মেহেদীর মরদেহ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। পরদিন শুক্রবার দুপুরে তাকে তার কর্মস্থল- ঢাকা টাইমস, ৪৪ ইস্কাটন গার্ডেন, রমনায় আনা হয়। ঢাকা টাইমস প্রাঙ্গণে হাসান মেহেদীর মরদেহ আনার পর এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এসময় হাসান মেহেদীর সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এখানে মেহেদীর নামাজের জানাজা শেষে তার মরদেহকে ঢাকা টাইমসের ব্যবস্থাপনায় তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসান মেহেদীর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার হৃদয়বিদারক সংবাদটি শোনবার সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকা টাইমসের সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। এরপর সংশ্লিষ্টদের দ্বারা লাশের ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্টসহ পরদিন ঢাকা টাইমস প্রাঙ্গণে হাসান মেহেদীর জানাজা শেষে তার মরদেহ বহনের জন্য একটি ফ্রিজিং গাড়ি ও হাসান মেহেদীর পরিবারবর্গের জন্য দুইটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে পটুয়াখালীর বাউফলে তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন তিনি। হাসান মেহেদীর আকস্মিক মৃত্যুর সংবাদটি শোনার পর থেকে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি কাজ গভীর পর্যবেক্ষণসহ সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে প্রত্যক্ষ অভিভাবকত্বের মধ্য দিয়ে সুচারুরূপে দায়িত্বপালন করেন ঢাকা টাইমসের সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান।

এটি কোনোভাবেই কল্পনা করা যায় না যে- হাসান মেহেদী পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নির্মমভাবে নিহত হয়ে তার কর্মস্থলে লাশ হয়ে ফিরবেন। সদা হাস্যোজ্জ্বল, বন্ধুবাৎসল ও সহকর্মীদের প্রতি অত্যন্ত সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবাপন্ন একজন নিবেদিত সাংবাদিক এমনভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে অকালে প্রাণ হারাবেন- এটা ভাবা যায় না। বলা হয়ে থাকে- সাংবাদিকতার মতো একটি মহৎ ও চ্যালেঞ্জিং পেশাগত দায়িত্বপালন সকলেই করতে পারে না। সহজে এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং পেশায় সকলেই নিজেকে নিযুক্তও করে না। অদম্য, সাহসী ও পেশাগত দায়িত্বের প্রতি যারা কমিটেড ও অচল-অটল কেবল তারাই পারে ঝুঁকিপূর্ণ একটি ঘটনাস্থল থেকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ করে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করতে। কোনো সংঘাত-সহিংসপূর্ণ পরিস্থিতিতে কোনোভাবে হয়তো কোনো রিপোর্টার সংবাদ সংগ্রহকালে সামান্য আহত হতে পারেন। কিন্তু সরাসরি গুলির নিশানা হয়ে একজন সংবাদকর্মী নির্মমভাবে নিহত হবেন এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

সদ্য প্রয়াত হাসান মেহেদীর স্ত্রী পপি সেদিনের সেই করুণ ও বিহ্বল পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে বারবারই জ্ঞান হারানোর উপক্রম হচ্ছিলেন। তিনি অশ্রুসিক্ত চোখে ঢাকা টাইমসের জনৈক প্রতিবেদককে জানান- ঘটনার দিন দুপুরে হাসান মেহেদীর সাথে তার শেষ কথা হয়। মেহেদী জানায়- সে দুপুরে লাঞ্চ করেছে; তারা যেন নিজেদের মতো খেয়ে নেয়। সে যাত্রাবাড়ীতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত রয়েছে। এসময় তাকে যেন ফোন করে বিরক্ত করা না হয়। এটাই ছিল হাসান মেহেদীর সাথে তার স্ত্রীর শেষ কথা।

হাসান মেহেদীর স্ত্রী পপি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান- ‘মেহেদী দেশের জন্য, মানুষের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে সংবাদ সংগ্রহ করছিল। এ সময় তার গলায় গুলি করা হয়। আমার স্বামী নির্দোষ, তার কোনো অপরাধ নেই। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।’ দুটি অবোধ শিশু সন্তান সাড়ে তিন বছরের নিসা ও ৭ মাস বয়সী মেহেরে কথা উল্লেখ করে বিলাপরত পপি বলেন- ‘আমার সন্তানদের দায়িত্ব নেওয়ার মতো তেমন কেউ নেই। দুটি অবুঝ শিশু সন্তান নিয়ে আমি এখন কোথায় যাবো, কার কাছে যাবো? এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই; তাঁর দায়িত্বশীল সহযোগিতা আমি কামনা করি।’

সাংবাদিকরা হলো জাতির কণ্ঠস্বর। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে তারা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে তা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরেন। দেখা যায়- সাংবাদিকদের ওপর যেকোনো সরকারেরই কালো থাবা একই রকমভাবে চলমান থাকে। তাদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যার শিকার হতে হয়- অথচ এসব হত্যার কোনো বিচার হতে দেখা যায় না। গত ১৫ বছরের ৩০ জনেরও বেশি সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এদের কারোরই বিচার সম্পন্ন হয়েছে তা বলা যায় না। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সরকারের কাছে বারবার বিচার চেয়েও বিচার না পাওয়াটা দুঃখজনক। দেশে সাংবাদিক হত্যার দীর্ঘ দিনেও বিচার না হওয়ার দৃষ্টান্ত হচ্ছে- সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকাণ্ড। ২০১১ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি ঢাকার রায়ের বাজারে খুন হন এই সাংবাদিক দম্পতি। দেশজুড়ে বহুল আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দীর্ঘ ১৩ বছরেও সম্পন্ন হয়নি।

আমরা মনে করি, সাংবাদিক হাসান মেহেদীর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনা একটি সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পাওয়া জরুরি। দেখা গেছে- শুধু কোটা-সংস্কার আন্দোলন নয়, যেকোনো ধরনের আন্দোলনেই একজন সংবাদকর্মী কখনো কারো প্রতিপক্ষ থাকে না- না আন্দোলনকারীদের, না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। একজন সংবাদকর্মী চলমান ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ করতেই কেবল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকেন। তাহলে তাকে কেন দুর্বৃত্তদের অবিবেচনাপ্রসূত বিকারের বলি হতে হবে! অথচ অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো- হাসান মেহেদীর মতো মেধাবী ও কর্মিষ্ঠ একজন সাংবাদিককে গুলিবিদ্ধ হয়ে অকাতরে প্রাণ দিতে হলো। সদ্য বিধবা তার স্ত্রী এবং এতিম দুই সন্তানের এখন কী হবে? কে নেবে এদের দায়ভার?

যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামেই লক্ষ করা যায়- সাংবাদিকরা কোনো কারণ ছাড়াই দুর্বৃত্তদের আক্রোশের শিকার হন। কখনো কখনো আন্দোলনকারীদেরও আক্রোশের শিকার হন তারা। আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেকেই যখন আন্দোলনের নামে বিভিন্ন স্থাপনা ও গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নি-সংযোগ, বোমা নিক্ষেপ, হামলা ও সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হয়- সেসব নাশকতার সংবাদ, ছবি ও ভিডিয়ো ফুটেজ সংগ্রহকালেও অনেক সাংবাদিক নাশকতাকারীর আক্রমণের শিকার হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসান মেহেদীর এই অনাকাঙ্ক্ষিত অকাল মৃত্যুর কোনো বিচার শেষ পর্যন্ত হবে কি না তাও এক বড়ো প্রশ্ন।

ছোটো দুই অবোধ শিশু সন্তান নিয়ে হাসান মেহেদীর অকাল বিধবা স্ত্রী এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে- এই প্রশ্নটিই এখন বারাবার খাবিখাচ্ছে দেশের সচেতন মহলে। আমরা মনে করি, হাসান মেহেদীর বিধ্বস্ত পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। গুলিবিদ্ধ হয়ে সাংবাদিক হাসান মেহেদীর নিহত হওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হোক। আর তার অসহায় পরিবারের পাশে পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা নিয়ে সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতার হাত প্রসারিত করুক।

আলী হাসান: সাংবাদিক, কলাম লেখক

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মনোহরদীতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা গণধোলাইয়ের শিকার
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদও জয় করব: নাহিদ
নরসিংদীতে নির্মাণাধীন কারখানায় হামলা, যুবদল নেতা গ্রেপ্তার
সোমবার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের যেসব এলাকায় ১১ ঘণ্টা গ্যাস বন্ধ থাকবে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা