বেড়ার মেয়র আসিফ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, দেশ ছাড়লেন কীভাবে? কৌতূহল সর্বত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৫:৫০| আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৬:০৬
অ- অ+

পাবনার বেড়া পৌরসভার মেয়র এস এম আসিফ শামস দুইশ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তবে দুই বছরেও পাবনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের জারি করা সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করেনি পুলিশ।

আর এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়েই সম্প্রতি সপরিবারে আসিফ থাইল্যান্ড গেছেন। তিনি আর দেশে ফিরবেন কি না তা নিয়ে পৌরবাসীদের মধ্যে নানান গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

এস এম আসিফ শামস জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকুর ছেলে। তিনি ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভিশন টেল লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

ঢাকার গুলশানের খাজা টাওয়ারে অবস্থিত আসিফের এ কোম্পানির কাছে ২০২২ সাল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন—বিটিআরসির পাওনা ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭১ টাকা।

এস এম আসিফ শামসের নামে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে দুর্নীতি দমন কমিশন—দুদকে এক অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানে বলা হয়, আসিফ তার প্রতিষ্ঠান ভিশন টেল লিমিটেডের ভিওআইপির লাইসেন্স ফি বাবদ বিটিআরসিকে ১৫ কোটি টাকা অগ্রিম এবং প্রতিবছরে ৭ কোটি টাকা হিসাবে তিন বছরে ২১ কোটি টাকা এবং সর্বমোট ৩৬ কোটি টাকা দিয়েছেন।

তবে ২০১৪ সালে সার্বিকভাবে ভিশন টেলের কাছে বিটিআরসি সারিবকভাবে পাওনা থাকে ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর আট বছর পর ২০২২ সালে এই পাওনা সুদ-আসলে দাঁড়ায় ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭১ টাকা।

পরে ২০২২ সালে আসিফের বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে পাবনা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়। পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিস্তা করিম পরোয়ানা তামিল নথিতে স্বাক্ষর করেন।

পাবনা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ওই বছরের ২৩ মে পাবনার বেড়া থানায় পৌঁছে। তবে সেটি তামিল করেনি পুলিশ। এখনো ফাইলবন্দি সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম অবগত।

ওসি রাশিদুল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বেড়ারমেয়রের বিরুদ্ধে লেভি ওয়ারেন্টের বিষয়টি আমরা তাকে অবহিত করেছিলাম। এরপর তিনি আদালতে টাকা জমা দেবেন বলে কালক্ষেপণ করেন। তারপরও আমরা একাধিকবার তাকে বিষয়টি বলেছি। তবে তিনি টাকা জমা দেননি বলে জানতে পেরেছি।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা শুনেছি, তিনি (মেয়র আসিফ) আবার দেশে এসেছেন। আমরা আবার ওয়ারেন্টের বিষয়ে তাকে অবহিত করব।’

ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়েই গত ৩০ জুন সপরিবারে মেয়র আসিফ থাইল্যান্ড গেছেন। হঠাৎ করেই মেয়রের সপরিবার বিদেশে যাওয়া নিয়ে বেড়া পৌরবাসীদের মধ্যে নানান গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

কেউ কেউ বলছেন, মেয়র আসিফ হয়ত আত্মগোপনে গেছেন। সব কিছু ম্যানেজ করে পরে দেশে ফিরবেন। কেউ বলছেন, তিনি সপরিবার থাইল্যান্ড ভ্রমণে গেছেন, সেখানে মাসখানেক থেকে দেশে ফিরবেন। আবার মেয়র আসিফ আর ফিরবেন না বলেও কানাঘুষা চলছে।

পরোয়ানাভুক্ত কোনো জনপ্রতিনিধির বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব (পৌরসভা-১) মো. আব্দুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে বিশেষ করে কারও বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলে তা আমরা যাচাই-বাছাই করি। কিন্তু বিষয়টি অবশ্যই আমাদের নজরে থাকতে হবে। নজরে বা অবহিত না থাকলে আমরা কিছু করতে পারি না।’

পরোয়ানাভুক্ত আসামীর ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার বিভাগকে কারা কিভাবে অবহিত করবে জানতে চাইলে এই উপসচিব বলেন, ‘অনেক সময় জেলা প্রশাসন বা বিভিন্ন দপ্তর থেকে অবহিত করে। সাধারণ নাগরিকও তথ্য দিতে পারেন।’

(ঢাকাটাইমস/০৩জুলাই/এসএস/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন 
ক্রান্তিকালে দেশ, আয় কমছে শ্রমজীবী মানুষের: রিজভী
পিপিএম পদক পেলেন এসপি কুদরত-ই-খুদা
বিভেদের রাজনীতি আমাদের ঐতিহ্য নষ্ট করেছে: মির্জা ফখরুল 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা