রাজধানীর সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ডিএমপির সঙ্গে প্রকল্পে নেমেছে জাইকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ জুন ২০২৩, ১৮:৪০

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বাত্মক সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ডিএমপির সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে বড়-ছোট প্রজেক্ট ‍মিলিয়ে একগুচ্ছ কাজ করছে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা)।

‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্ট’ নামে তিন বছর মেয়াদী প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বাত্মক সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ডিএমপির সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এরইমধ্যে প্রজেক্টের একবছর হতে চলেছে। সফলতা মিললে পরবর্তীতে এর মেয়াদ বাড়ানো হবে।

শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট লিডার ইরিয়ে, প্রজেক্ট গবেষক মিস সুজিমুরা বিভিন্ন তথ্য দেন।

এসময় প্রজেক্টের অফিস সেক্রেটারি (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) সামমুন সুলতানা, কমিউনিকেটর সুজানা আকিকো হুসাইন এবং ডিএমপির মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাইকার অর্থায়নে এই প্রজেক্টে ডিএমপি ছাড়াও বিআরটিএ, বিআরটিসি, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট নানা ভাবে যুক্ত আছে। তবে প্রজেক্টে জাইকার অর্থায়নের অংকের বিষয়ে কিছু জানায়নি সংস্থাটি।

ডেপুটি প্রজেক্ট লিডার ইরিয়ে জানান, ঢাকা শহরে কেন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, এ ব্যাপারে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, ডিএমপি কীভাবে কাজ করছে সেসব বিষয়ে জাইকা কাজ করছে। এরইমধ্যে রাজারবাগ স্কুলে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা মূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে।

জাইকার এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের মধ্যে একটা ধারনা রয়েছে রাস্তা খালি আছে সিগন্যাল মানবো না। সেখানে লালবাতি জ্বলুক বা সবুজ বাতি জ্বলুক। মানুষের এসব চিন্তাভাবনার পরিবর্তন আনায় আমাদের প্রজেক্টের অন্যতম লক্ষ্য।’

‘প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখন ছোট। তাদের যেভাবে শিক্ষা দেওয়া হবে তারা এগুলো ভবিষ্যতে অনুসরণ করবে। ট্রাফিক আইন মানা বা সড়ক দুর্ঘটনা খুব স্বল্পসময়ের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে আমরা যেভাবে কাজ করছি তা পাঁচ থেকে দশবছর পর ফলাফল পাবো।’

ইরিয়ে বলেন, ‘প্রাথমিকের এসব শিক্ষার্থীরা যখন নিজে গাড়ি চালাবে বা রাস্তা পারাপার হবে, তখন যেন এখন আমরা যা শেখাচ্ছি সেই নিয়ম মেনে চলতে পারে। এজন্য আমরা স্কুল থেকে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি।’

জাপানও এভাবে তাদের সড়কদুর্ঘটনা রোধ ও সড়কে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে জানিয়ে প্রজেক্টের অফিস সেক্রেটারি সামমুন সুলতানা বলেন, ‘জাপানে একসময় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এত ভালো ছিল না। এখন তারা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের অনন্য উদাহরণ। তারাও সড়ক সম্পৃক্ত সচেতনা ও জ্ঞান স্কুল থেকে শুরু করেছিল। আর এখন ফলাফল পাচ্ছে।’

চালকদের সফটওয়্যার প্রজেক্ট নিয়ে কাজ চলছে

জাইকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীর বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের সফটওয়্যার প্রজেক্ট নিয়ে তারা কাজ করছেন। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে বর্তমানে চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রথমে ডিএমপির একটি শাখাকে ধরে এই কাজ চলছে। সবাইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে এই সফটওয়ার চালু করা হবে।

এর মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি সড়কের কোন কোন জায়গাতে দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে; এর জন্য কী কী করতে হবে সেসবের কারণ অনুসন্ধান করা হবে। এই সফটওয়ারে চালুর পর তাৎক্ষনিক ট্রাফিক পুলিশ তথ্য পাঠাতে পারবে, যা ডাটাবেজে থাকবে।

ট্রাফিক শিশু পার্ক: ট্রাফিক আইন-কানুন মেনে চলার জন্য একটি শিশু পার্ক হবে। যেটা দেশে এখনও নেই। এখানে ট্রাফিক সম্পর্কে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া থাকবে। এটা আরেকটা ছোট একটা প্রজেক্ট। প্রথমে একটা-দুইটা তৈরি হলে পরবর্তীতে আরও করা সম্ভব হবে।

এছাড়া জেব্রাক্রসিংয়ের প্রজেক্টের পরিকল্পনা আছে বলেও জানিয়েছে জাইকার প্রজেক্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, জাইকা পাঁচ-দশ বা তার বেশি সময়ের বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে থাকলেও এবারের প্রজেক্টটা ছোট। এটাতে যদি সাধারণ মানুষসহ সবার সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে পরিধি বাড়ানো হবে। বর্তমানে যানজট নিরসনে ডিএমপি এরিয়ায় কার্যক্রম চালু করা হলেও পরবর্তী দেশজুড়ে এই ধরণের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

একবছরে প্রজেক্ট কতটা এগিয়েছে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সামমুন সুলতানা বলেন, ‘একটা কাজ শুরু আগে বিভিন্ন চুক্তির ব্যাপার থাকে। এরপর সব সংস্থাকে একসঙ্গে করা, প্ল্যান করা সব মিলিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। আমরা স্কুল প্রোগ্রামগুলো শুরু করেছি। বিভিন্ন সার্ভে করেছি।’

তিন বছরের মধ্যে সড়ক নিরাপত্তায় কতটা উন্নতি সম্ভব হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল শুরু করেছি। জেব্রাক্রসিং সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করছি। তিন বছরে আমরা হয়ত রেজাল্ট পাবো না। তবে পাঁচ-সাত বছর পরে পাবো।’

উল্লেখ্য, রোড সেফটি প্রজেক্ট নিয়ে জাইকা বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। জাপানের এই সংস্থাটি বিভিন্ন দেশের মানুষকে ‍কিভাবে সচেতনতামূলক কর্মকান্ডে সস্পৃক্ত করছে এবং সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে মানুষের ভাবনাকে কিভাবে পরিবর্তন করছে, প্রজেক্টের আওতায় ডিএমপি সেসব অভিজ্ঞতার প্রয়োগ করবে।

(ঢাকাটাইমস/০৩জুন/এসএস/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

রাজধানীতে ট্রেনের ধাক্কায় সদ্য এসএসসি পাস শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ঢামেক হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারের সামনে এসির কম্প্রেসর!

রাজধানীতে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা পরিদর্শনে মেয়রদের সংগঠন ‘সি৪০ সিটিজ’

নগরবাসীর আস্থা-বিশ্বাসই আমার কাজের শক্তি: মেয়র আতিক

২০৫০ সালের মধ্যে ঢাকার কার্বন নিঃসরণ কমানো হবে ৭০ ভাগ

দাবি না মানলে আমরণ অনশন: হুঁশিয়ারি শিক্ষক-কর্মচারী পরিষদের

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিশুদের মাঝে ১০ হাজার গাছ বিতরণ বাবুল্যান্ড ইনডোর প্লে-গ্রাউন্ডের

বন্যহাতির পায়ে পিষ্টে মৃত বাংলাদেশিদের ক্ষতিপূরণের দাবি

নয়াপল্টনে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজধানীতে দুই ঘণ্টায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি, সড়কে ভোগান্তি

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :