বৃষ্টিতে ভিজলেও বাড়ি যেতে পারলেই খুশি
ঈদ মানেই আনন্দ। আর এই আনন্দ যদি পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করতে না পারি তাহলে সারাবছর কষ্ট করে রোজগার করে লাভ কী? তাই খরচ বেশি লাগলেও বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি যেতে পারলেও অনেক খুশি। এমনটাই বলছিলেন রাজবাড়ীর যাত্রী জসিম উদ্দিন।
বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীতে থেমে থেমে চলছে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি। এরই মধ্যে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন জসিম উদ্দিন। সকাল সকাল চলে এসেছেন রাজধানীর গাবতলী কাউন্টারে। আগে থেকে টিকিট কাটা না থাকলেও কাউন্টারে এসে সহজেই হাতে পেয়েছেন সোনার হরিণ অর্থাৎ ঈদযাত্রার টিকিট। শুধু জসিমই নয় এমনই বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ির পানে ছুটছেন শত শত মানুষ।
জসিম উদ্দিন বলেন, বৃষ্টিতে ভিজে কাউন্টারে এসেছি। ভাবি নাই টিকিট পাবে। কিন্তু এসেই টিকিট পেয়েছি। এতো কষ্ট করে বৃষ্টিতে ভিজে শেষমেষ বাড়ি যেতে পারছি এটাই অনেক।
একই ভাষ্য বৃষ্টিভেজা ঘরমুখী অধিকাংশ যাত্রীর। তাদের মতে, বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি গেলেও পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারবেন এতেই তারা অনেক খুশি।
বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ির পানে ছুটতে টার্মিনালে ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ। অগ্রিম টিকিট বিক্রির দুই দিন পরে টিকিট কিনতে এসে না পেলেও এখন এসে টিকিট পেয়েছেন বলে জানান তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ কাউন্টারের সামনে এসে ভিড় জমিয়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের যাত্রী রাকিবুল ইসলাম। এর আগে অগ্রিম টিকিট কাটতে এসে টিকিট না পেলেও আজ কাউন্টারে এসেই পেয়েছেন টিকিট। তবে গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা।
ন্যাশনাল ট্রাভেলস- এ টিকিট টিকিট কেটেছেন রাকিবুল। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, অগ্রিম টিকিট পাইনি। কিন্তু আজ কাউন্টারে এসেই টিকিট পেয়ে গেছি। তবে টিকিটের দামের থেকে ৪০০ টাকা বেশি দেওয়া লাগছে। এখন কী আর করার। ভাড়া বেশি লাগলেও বাড়ি যেতে পারব এটাই অনেক কিছু।
কাউন্টারে এসে গোবিন্দগঞ্জের টিকিট কেটেছেন আব্দার রহমত শেখ। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ভাবতেও পারিনি কাউন্টারে এসে টিকিট পাবে। এর আগে টিকিট না পেয়ে ভেবেছিলাম ভেঙে ভেঙে বাড়ি চলে যাবে। কিন্তু যাওয়ার আগে কাউন্টারে খোঁজ নিতে এসেই টিকিট পেয়ে গেছি। তবে ভাড়া বেশি নিচ্ছে।
আহাদ পরিবহনের টিকিট বিক্রেতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দক্ষিণবঙ্গের গাড়িতে কিছু কিছু সিট খালি আছে। সেই সিটগুলোই বিক্রি করা হচ্ছে।
অনৈতিকভাবে ভাড়া বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সেটাকে বখশিশ বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ঈদের কারণে ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। এটা আমাদের বকশিস হিসেবে। আমরাওতো মানুষ পরিবার রেখে আপনাদের জন্য কাজ করছি আপনারা যদি ২/৪ টাকা বেশি না দেন তাহলে আমরা ঈদ করব কী করে?
সাতক্ষীরা এক্সপ্রেসের টিকিট বিক্রেতার কাছে যেতেই তিনি বলেন, গাড়িতে সিট আছে কয়টা লাগবে তাই বলেন।
এখনও সিট বিক্রি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাত্রীর চাপ দেখে গাড়ি বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে অন্যয এক যাত্রীর অভিযোগ ভিন্ন। তিনি বলছেন, এরা ঈদ উপলক্ষে অগ্রীম টিকিট বিক্রির সময় বলে টিকিট শেষ। টিকিট সব নিজেরা রেখে দেয়। বিক্রি করে না। কারণ ঈদের আগের দিন যাত্রীরা টিকিট না পেয়ে অসহায় হয়ে কাউন্টারে এলে তখন বেশি টাকা নিয়ে টিকিট বিক্রি করে।
(ঢাকাটাইমস/২৮জান/কেআর/ইএস)